
মহাজোট ত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা ছাড়াই জাতীয় পার্টির নেতৃত্বে ইসলামী মূল্যবোধে আত্মপ্রকাশ করল ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’ নামে নতুন রাজনৈতিক জোট। নজিরবিহীন বৃহৎ আকারের এ জোটে ৫৮টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৫৬টিই অনিবন্ধিত। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে জোটের আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এ ঘোষণা দেন।
তবে এরশাদ জানান, নতুন এ জোট মহাজোটে থাকবে কিনা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে জোটের প্রথম বৈঠকে। ২০০৮ সালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটের হয়ে নির্বাচন অংশ নেয় হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জাতীয় পার্টি। আর ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির দশম সংসদ নির্বাচনে ৮০টি আসনে একক প্রার্থী দেয় দলটি। এবার আগামী নির্বাচনে ৩শ আসনে প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন করতে সম্মিলিত জাতীয় জোট নামে নতুন জোটের ঘোষণা করেছেন এইচএম এরশাদ। তবে, মোট ৫৮টি দলের মধ্যে জাতীয় পার্টি আর বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট ছাড়া জোটের ৫৬টি দলেরই নিবন্ধন নেই।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত এরশাদ বলেন, স্বাধীনতার চেতনা এবং ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো এ জোটের অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। কোন স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের স্থান এ জোটে হবে না। প্রাথমিকভাবে জাতীয় পার্টি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল ইসলামিক ফ্রন্ট, মাসখানেক আগে ৩৪টি ইসলামপন্থী সংগঠনকে নিয়ে আত্মপ্রকাশ করা ‘জাতীয় ইসলামী মহাজোট’ এবং ২০১৫ সালে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করে পরে তাকেই অব্যাহতি দেয়া ৩১ সংগঠনের ‘বাংলাদেশ জাতীয় জোট’ রয়েছে এরশাদের এই নতুন জোটে।
জাপা চেয়ারম্যান বলেছেন, ইউনাইটেড ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স তিনটি ‘মৌলিক আদর্শের’ ওপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত। ইসলামী মূল্যবোধ তথা সব ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি সমান মর্যাদা প্রদর্শন, স্বাধীনতার চেতনা এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনবোধ নিশ্চিত করা।
সম্মিলিত জাতীয় এই জোটের প্রধান হবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ, প্রতিটি দলের মহাসচিবরা থাকবেন মুখপাত্র হিসেবে। আর জাতীয় পার্টির রুহুল আমিন হাওলাদার হবেন জোটের প্রধান মুখপাত্র। হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জানান, জোটগতভাবে জাতীয় ও সব পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণ, সরকার গঠন এবং দেশের উন্নয়নে কাজ করা এ জোটের উদ্দেশ্য। জোটের অন্তর্ভুক্ত দলের ক্ষেত্রে যেকোন নির্বাচনে নিবন্ধিত দলের প্রতীক ব্যবহারের বিষয়টি উন্মুক্ত থাকবে।
জোটে যোগ দেয়ার বিষয়ে আরও দুটি নিবন্ধিত দলের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করার কথা বললেও দলগুলোর নাম জানাননি এরশাদ। তারা জোটে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। ঘোষণাপত্রে বলা হয়, এই জোট নির্বাচনী ফলাফল মেনে নেবে। ফল যা-ই হোক না কেন, জোট বহাল থাকবে। জোটের স্থায়িত্বের জন্য রাজনৈতিক বিপদে-আপদে, সুদিনে-দুর্দিনে শরিকরা একে-অপরের পাশে থাকবে। স্বার্থের কারণে কোন দল জোট ছেড়ে যাবে না এই অঙ্গীকার থাকবে। সুত্রঃ বিবার্তা