ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

রাঙামাটিতে ভূল চিকিৎসায় নার্সের মৃত্যু

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

রাঙ্গামাটি জেলা প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটি সদর হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসকের ভূল চিকিৎসার শিকার হয়ে শিক্ষানবিস নার্সের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে অনির্দিষ্ট্যকালের কর্মবিরতি পালন করছে নার্সিং ইন্সটিটিউটের শিক্ষানবিস নার্সরা। সহপাটি নার্সের মৃত্যুতে চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ এনে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ করে উক্ত ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ নার্র্র্র্সিং ইন্সটিটিউটের ইনচার্জ রিতা রানী বড়ুয়াকে অপসারনের দাবিতে অনির্দিষ্ট্যকালের কর্মবিরতি পালন করছে ইন্টার্নি নার্সরা।

.

শিক্ষানবিস নার্সরা অভিযোগ করে জানায়, মঙ্গলবার রাতে প্রচন্ড মাথা ব্যথা নিয়ে রাঙামাটি হাসপাতালে ভর্তি হয় মাহামুদা খাতুন নামে দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী নার্স। সেখানে তাকে দুই ঘন্টা রাখার পরে চট্টগ্রামে রেফার্ড করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু তৈয়ব। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার ভোররাতে মাহামুদা খাতুন মৃত্যু হয়।

শিক্ষার্থী নার্সদের অভিযোগ, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর কর্তব্যরত চিকিৎসক যথেষ্ট অবহেলার পর একটি ইনজেকশন দেওয়ার পরও তার অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে চট্টগ্রাম পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

তারা জানান, চট্টগ্রাম মেডিকেলের ডাক্তার বলেছে, উক্ত নার্সকে ভূল চিকিৎসা করা হয়েছে রাঙামাটি হাসপাতালে। এই কারনে মেয়েটি ভূল চিকিৎসার শিকার হয়ে মারা গেছে বলে দাবি করে বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিক্ষোভ করে নার্সিং ইন্সটিটিউটের শিক্ষানবীস শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ আমরা নার্স হয়েও প্রয়োজনীয় সময়ে চিকিৎসকদের কাছ থেকে সেবা পাইনা। আমাদের সাথে প্রায় সময় অসৌজন্যমূলক আচরন করা হয়।

.

শিক্ষানবীস নার্সদের বেশ কয়েকজন এই প্রতিবেদককে জানায়, আমরা অসুস্থবোধ করে হাসপাতালের ডাক্তারদের কাছে গেলে তারা আমাদেরকে, বয় ফ্রেন্ডের সাথে কি করেছ, বাড়াবাড়ি হয়েছে কিনা, এই ধরনের অসস্তিকর ও নানারকম কটুক্তিমূলক প্রশ্ন করে। এসময় আমরা খুবই অসহায়বোধ করি। কিছুই বলার থাকেনা আমাদের।

এছাড়াও আমাদের প্রতিষ্ঠানের প্রধান রীতা রানী বড়ুয়া প্রায় সময় আমাদের সাথে দূর্ব্যবহার করেন। আমরা প্রায় সময় বিশুদ্ধ পানি খেতে পারিনা। বেসিনের পানি আমাদেরকে খেতে দেওয়া হয়। প্রতিবাদ করতে গেলেই আমরা বস্তি থেকে এসেছি, ফকিন্নির মেয়েসহ রাস্তার মেয়েছেলে বলে গালাগাল দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীরা জানায়, আমরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে ভর্তি হয়েছি সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে মানব সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করার প্রত্যয়ে। কিন্তু আমাদের সাথে যেই ধরনের অমানবিক আচরন করা হয় সেটা অত্যন্ত নীচু মনমানসিকতার।

চার দেয়ালের মাঝে বন্দি রেখে আমাদের সাথে জেলখানার কয়েদিদের মতোই আচরন করেন নার্সিং ইন্সটিটিউট প্রধান রীতা রানী বড়ুয়া। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নার্সিং ইন্সটিটিউটে ও রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে বিরাজমান নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে ষ্টুডেন্ট নার্সদের জীবন দূর্বিসহ হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ তুলেছে।

এসব অভিযোগ সিভিল সার্জনকে জানানোর চেষ্ঠা করা হলেও তিনি এতে কোনো ধরনের কান দেননি বলেও অভিযোগ করেছে শিক্ষানবিস নার্সরা।

এদিকে ঘটনার কয়েক ঘন্টা পর নার্সিং ইন্সটিটিউট এ যান সিভিল সার্জন ডাঃ শহীদ তালুকদার। এসময় তিনি উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন এবং তাদের অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখবেন বলেও আশ্বাস প্রদান করে।

এসময় তিনি সাংবাদিকদের জানান, মেয়েটি চট্টগ্রাম মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় হিমোরেজিক ষ্টোকে মারা গেছে এবং এটি সিটিস্ক্যান রিপোর্টেও উল্লেখ রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এর আগে আমাকে কেউ এতোসব অভিযোগের ব্যাপারে জানায়নি। আমি আগামী ১৩ই মে তারিখ এদের সাথে আবারো বসবো। সেসময় আমার দ্বারা সম্ভব দাবিগুলো পূরণ করার চেষ্টা করবো। যেগুলো আমি পারবো না, সেগুলো আমার উদ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে আমি বাস্তবায়নের জন্য পাঠাবো।

এদিকে, রাঙামাটি নার্সিং ইন্সটিটিউটের ইনচার্জ রীতা রানী বড়ুয়ার কাছে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি জানান, মেয়েদের সাথে কোনো রকম খারাপ ব্যবহার করা হয়না। তারা আমার মেয়েরই মতো। আমি আমার সর্বোচ্চ দিয়ে মেয়েগুলোকে আগলে রাখি।

নার্সদের কর্মবিরতীর কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের দূর্ভোগ বেড়েছে। একেতো হাসপাতালের মহিলা ও শিশু এই দুইটি ওয়ার্ড অত্যন্ত ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় সেগুলো বন্ধ করে দিয়ে সার্জারি ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়। এতে করে রোগীর সংখ্যা তিনগুন হয়ে যায় উক্ত ওয়ার্ডে। এত পরিমান রোগিকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন কর্তব্যরত স্টাফ নার্সগণ। রোগীদের অনেকেই প্রয়োজনীয় সেবা তাৎক্ষনিকভাবে পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেছেন সাংবাদিকদের কাছে।

সর্বশেষ বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল থেকে মাহামুদা খাতুনের মরদেহ রাঙামাটি নার্সিং ইনষ্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়। এসময় তার সহপাঠিরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। দুপুরে হাসপাতাল মসজিদ প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে নার্সসের মরদেহ তার নিজ বাড়ী গাজীপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে মাহমুদার সহপাঠীরা তাদের প্রতি ইনস্টিটিউটের তত্ত্বাবধায়কদের অবহেলা ও বৈষম্যমুলক আচরন পরিহার এবং তাদের মানসম্মত চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সুবিধাদি প্রদানের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত ক্লাশ ও হাসপাতালে ডিউটি বর্জনের ঘোষনা দেন।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print