
দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহ অব্যাহত রয়েছে। বর্ষা মৌসুম শুরুর আগে সারাদেশের অনেক জেলায় বৃষ্টি হলে তাতেও থামছে না তাপমাত্রা। দিন দিন বেড়েই চলছে তাপমাত্রা। ইতিমধ্যে দেশে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ ছুঁইছুঁই করছে। আবহাওয়ার এই অদ্ভুত আচরণে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি মাসে গরমের এই তীব্রতা কমবে না। অসহনীয় এমন পরিস্থিতি আরও কয়েকদিন থাকবে। আসছে ৪৮ ঘণ্টাতেও তাপমাত্রার খুব একটা পরিবর্তন হবে না।
তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলে আবহাওয়া অধিদফতর। আর ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করেন আবহাওয়াবিদরা। সেই হিসেবে দেশে মৃদু তাপপ্রবাহ অব্যাহত চলছে। গতকাল সোমবার সকালে আবহাওয়ার সর্বশেষ পরিস্থিতিতে বলা হয়েছে, সোমবার ঢাকার আকাশ কিছুটা মেঘলা থাকবে। এছাড়া আবহাওয়ার আচরণ আগের দিনের মতো অব্যাহত থাকবে। সোমবারের চেয়ে মঙ্গলবারের তাপমাত্রা কিছুটা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

আবহাওয়া চিত্রের সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছিল, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে যা উত্তর বঙ্গোপসাগর বিস্তৃত রয়েছে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন হতে পারে। সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ, রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টিপাত হতে পারে। এদিকে গেলো কয়েকদিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বাড়ছে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব। অতিরিক্ত গরমে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দি-জ্বরসহ মানুষ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুদের এসব রোগে বেশি আক্রান্ত হতে দেখা গেছে।
এমন পরিস্থিতিতে রোগীদের বেশি করে পানি, ডাব ও তরল জাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আবহাওয়ার এমন পরিস্থিতিতে বেশি বিপাকে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ, শ্রমিক, স্কুলগামী শিক্ষার্থী এবং অল্প বয়সের শিশুরা। স্কুল ও অফিসে তাদের গরমে সিদ্ধ হয়ে যেতে হচ্ছে। রাজধানীতে অতিরিক্ত গরমের কারণে রিকশা চালানো থেকে বিরত থাকছেন অনেক চালক। আর যারা চালাচ্ছেন তারা ঘন ঘন ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন। গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে পথচারীরা শরবত খাচ্ছেন ফুটপাত থেকে। একদিকে গরম অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। হাসপাতালে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে বেশি। বাসের যাত্রীদেরও একই অবস্থা।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে গতকাল সকাল ছয়টায় ঢাকায় ২৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সকালে বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। সোমবার ঢাকায় সূর্যাস্ত হবে ছয়টা ৩৭ মিনিটে। মঙ্গলবার সূর্যোদয় হবে সকাল পাঁচটা ১৫ মিনিটে। প্রসঙ্গত, চলতি বছরে মে মাসের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, দেশের উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এক থেকে দুটি তীব্র এবং অন্যখানে দুই থেকে তিনটি মৃদু বা মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। গত বছরের এপ্রিল ও মে মাস খুবই শুষ্ক ছিল। বৃষ্টি হয়েছে হাতেগোনা কয়েকদিন। এ কারণে গত বছর এপ্রিল ও মে মাসে ৪০ ডিগ্রি ছাড়ায়। এ বছর আগামী কয়েক দিনে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছুঁইছুঁই হতে পারে।