ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

গ্রিক দেবীর মুর্তিকে অন্য জায়গাতেও স্থান দেয়া যাবে না- বাবুনগরী

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে গ্রিক দেবি থেমিসের মূর্তি অপসারিত হওয়ায় মহান আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া জ্ঞাপন করেছেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব প্রখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, গণমানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী গ্রীক দেবী থেমিসকে জাতির ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার পর লাগাতার প্রতিবাদী আন্দোলন ও শান্তিপূর্ণ নানা কর্মসূচীর পর গত মধ্যরাতে অপকৃষ্ট এই আবর্জনা অপসারিত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।

এতে করে আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে ইউরোপের ইতিহাসকে বাংলাদেশে আত্মীকরণ করানোর অপচেষ্টা পরাজিত হয়েছে। থেমিস অপসারণে বাংলাদেশের উলামা-মাশায়েখ ও তৌহিদী জনতাসহ সর্বস্তরের গণমানুষের ন্যায় ভিত্তিক লড়াইয়ের প্রাথমিক বিজয় অর্জিত হয়েছে।

আজ (২৬ মে) শুক্রবার সন্ধ্যায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে থেমিসের ভাস্কর্য অপসারণের পর আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী এই প্রতিক্রিয়া জানান।

বিবৃতিতে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী আরো বলেন, হেফাজতে ইসলামের থেমিস সরানোর দাবীর সাথে বাংলাদেশের শুভবুদ্ধিসম্পন্ন বহু মানুষ ও সংগঠন একাত্ম হয়ে স্বকীয় বিশ্বাস, আদর্শ ও চিন্তার ভিত্তিতে থেমিসের অপসারণ চেয়েছে। আমরা রাজপথের লড়াইয়ের সকল সহযোদ্ধাদের আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই।

তিনি বলেন, ইসলামে ইনসাফ বা ন্যায়ের ধারণা একটি কেন্দ্রীয় ধারণা। এমনকি ইনসাফ কায়েম ছিলো আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষিত লক্ষ্যও। সেই ন্যায়ের বা ইনসাফের কোন প্রতীকায়ন যদি গ্রীক ঐতিহ্য থেকে ধার করা হয়, তবে প্রকারান্তরে এটাই ধরে নেয়া হয় যে, আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্যে ও ধর্মে ন্যায়ের কোন ধারণা ছিল না। আমাদের ভাবাদর্শ যেন এতোই গরীব, যে কারণে নিজেদের উপনিবেশিক ভাবাদর্শে পুষ্ট করতে হবে। স্বাধীনচেতনা দেশপ্রেমিক কোন নাগরিকের কাছে এটা গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, আমরা আমাদের ঈমান ও আক্বিদার জমিনে দাঁড়িয়ে এই ধার করা উপনিবেশিক ভাবাদর্শের বিরুদ্ধেই কথা বলেছি। এমনকি আধুনিক রাষ্ট্র ধারণায় বিচার বিভাগের যে অবস্থান, দেবী থেমিস তারও পরিপন্থী। কারণ থেমিস গ্রীক সংস্কৃতির ডিভাইন ল’ বা তাদের ঈশ্বরের ঐশ্বরিক আইনের প্রতীক। যে রাষ্ট্র নিজেকে আলাদাভাবে সেক্যুলার বলে পরিচয় দিয়ে নিজের কৌলিন্য জারি করে, সে কীভাবে গ্রীক ঐশ্বরিক আইনের প্রতীককে নিজের বলে গ্রহণ করতে পারে?

দ্বিতীয় প্রশ্নটি আরো মারাত্মক উল্লেখ করে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, গ্রীক পুরাণ মতে, থেমিস সোশ্যাল অর্ডার বা সামাজিক শৃংখলাও রক্ষা করে। সে শুধু ন্যায় বিচারই করে না, সে শক্তি প্রয়োগে সামাজিক শৃংখলাও রক্ষা করে। থেমিসের হাতের তরবারি সেই শক্তি প্রয়োগের প্রতীক। আধুনিক রাষ্ট্র সামাজিক শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব বিচার বিভাগকে দেয় না, বরং তা রাখে নির্বাহী বিভাগের হাতে। তাই, ঠিক কোন যুক্তিতে নিজেদের আধুনিক ও প্রগতিশীল দাবী করা বাম স্যেকুলারেরা থেমিসের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন সেটা আমাদের কাছে ছিলো এক বিস্ময়ের বিষয়।

বিবৃতিতে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, গত রাতে গ্রীক দেবীকে সুপ্রীম কোর্ট প্রাঙ্গন থেকে অপসারণের কোন কোন খবরে আমরা দেখলাম, উৎপাটিত থেমিসকে নাকি আদালতের এনেক্স ভবনের সামনে স্থাপন করা হবে।

এ পর্যায়ে হেফাজত মহাসচিব বলেন, এ বিষয়ে সকল মহলকে স্পষ্ট জানিয়ে দিতে চাই যে, এই গ্রীক প্রতীক, যেটা আমাদের দেশে একটা আবর্জনার মতোই, সেটাকে চিরতরে পরিত্যাগ করতে হবে। এই ভাস্কর্য যা জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্থাপিত হয়েছিল, তাকে বাংলাদেশের কোথাও কোনভাবেই স্থান দেয়া যাবে না। এমন ভুল পদক্ষেপ জনগণ মেনে নেবে না। তিনি বলেন, সংশ্লিস্টদের এমন পুনঃআত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিতে হেফাজত জোরালোভাবে নিরুৎসাহিত করতে চায়।

আল্লামা বাবুনগরী বলেন, যারা বলছে থেমিস অপসারণে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরাজিত হয়েছে, তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ঘোষণা দিয়েছিলেন, “রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব, এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশাল্লাহ”। ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি যে বেতার ভাষণ দিয়ে বিজয় ঘোষণা করেন, সেখানে তিনি তাঁর বক্তৃতা শেষ করেন এই বলে, “আমি, মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব দেশবাসীকে আল্লার প্রতি শোকরিয়া জ্ঞাপনের জন্যে ও একটি সুখী সমৃদ্ধশালী সমাজ গঠনে আল্লাহর সাহায্য ও নির্দেশ কামনা করার উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি”।

অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, আল্লাহর সাহায্য কামনা করে যেই মুক্তিযুদ্ধের শুরু এবং আনুষ্ঠানিক সমাপ্তি, যেই মুক্তিযুদ্ধে ইসলাম চিন্তা হিসাবে একটা প্রভাবশালী ভুমিকা (একটি ডমিন্যান্ট ডিসকোর্স হিসেবে) বিদ্যমান ছিলো, সেই মুক্তিযুদ্ধকে প্রকারান্তরে ইসলামের চেতনার বিরুদ্ধে যারা দাঁড় করানোর চেষ্টা করে, কার্যতঃ তারাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরোধী। এদের অপতৎপরতার প্রতিরোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ও জোরালো সতর্ক থাকতে হবে।

বিবৃতির শেষ দিকে হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, থেমিস উৎপাটনে যারা রাজপথে লড়াই করেছেন, ভার্চুয়াল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব ছিলেন, তাঁদের সকলকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাই। ইসলাম, দেশ ও জাতির স্বার্থে যে কোন আন্দোলন সংগ্রামে ভবিষ্যতে আমাদের ঐক্য এবং সংহতি আরো দৃঢ় হোক, আল্লাহ্‌র দরবারে এই কামনা করি। #

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print