গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে হাতকড়াসহ পুলিশের কাছ থেকে পালানোর সময় ট্রাকচাপায় রিপন চন্দ্র দাস (২২) নামে অপহরণ মামলার আসামির মৃত্যুর ঘটনায় সুন্দরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রাজু আহম্মেদসহ তিন পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সদর) মো. খায়রুল আলম। তিনি জানান, দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে একজন এসআই ও তিন পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নারী কনস্টেবল রয়েছে। এ ছাড়া ঘটনাটি তদন্ত করতে একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে।
ক্লোজড হওয়া চার পুলিশ হলেন, সুন্দরগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রাজু আহম্মেদ। কনস্টেবল শাহানুর রহমান, মোস্তাফিজার রহমান ও নারী কনস্টেবল নার্গিস বেগম।
উল্লেখ্য, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হাতিয়া গ্রামের বাবলু চন্দ্র দাসের ছেলে রিপন চদ্র দাস একই গ্রামের সুশীল চন্দ্র দাসের স্কুলপড়ুয়া ছাত্রী চম্পা রানীকে ২৯ মে সকালে অপহরণ করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় চম্পার বাবা সুন্দরগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা করেন। পরে পুলিশ ১ জুন অভিযান চালিয়ে বগুড়ার কাহালু উপজেলা শহরের টিঅ্যান্ডটি পাড়ার একটি বাসা থেকে চম্পাকে উদ্ধার ও রিপনকে গ্রেফতার করে। পুলিশ রিপনকে মাইক্রোবাসে করে সুন্দরগঞ্জ আসার পথে রিপন প্রসাব করার কথা বলে। পুলিশ রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের পলাশবাড়ীর জুনদহ এলাকায় রিপনকে মাইক্রোবাস থেকে নামায়। রিপন প্রসাব করা শেষে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে দ্রুতগামী ট্রাকের চাপায় তার মৃত্যু হয়।
এদিকে, এ ঘটনার পর শুক্রবার দুপুরে রিপনের পরিবার ও এলাকার লোকজন উত্তেজিত হয়ে চম্পার বাড়িঘর ভাঙচুর ও তার ভগ্নিপতির দোকানে অগ্নিসংযোগ করে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর থেকে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
অপরদিকে, এ ঘটনার পর থেকে রিপনের পরিবারে অভিযোগ, পরিকল্পিতভাবে তাকে ট্রাকচাপায় হত্যা করা হয়েছে। ঘটনার সুষ্ঠু বিচারসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় রিপনের লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায় পরিবার। এ কারণে গত ১ জুন রাত থেকে ২ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত রিপনের লাশ সদর হাসপাতালের মর্গে পড়ে থাকে।
তবে রিপনের বাড়িতে থাকা সুন্দরগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার মো. মামুনুর রহমান মামুন জানান, আলোচনার মাধ্যমে লাশ গ্রহণে সম্মতি জানায় রিপনের পরিবার। রাতেই রিপনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
