
ম্যানচেস্টারে হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই নির্বাচনের মাত্র চার দিন আগে আবারও সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলো লন্ডন। রক্তাক্ত হল যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন ব্রিজ। পথচারির ওপর গাড়ি উঠিয়ে ও ছুরিকাঘাতে হামলাকারীসহ ৭ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন। পুলিশ সন্দেহভাজন ৩জনকে খুঁজছে।
শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির রাতে লন্ডন ব্রিজে ভিড়ের মধ্যে গাড়ি চালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। একই সময়ে নিকটবর্তী বারা মার্কেট এলাকায় ছুরি হাতে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালিয়েছে কয়েকজন।
আজ রবিবার (০৪ জুন) বাংলাদেশ সময় ভোর পৌনে ৪টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর লন্ডন ব্রিজে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

বিবিসি জানিয়েছে, একাধিক ব্যক্তি এসব ঘটনায় নিহত হয়েছেন। লন্ডন অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস অন্তত ২০ জনকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার খবর দিয়েছে। এর বাইরে আহত আরও কয়েকজনকে ঘটনাস্থলেই চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
‘সিএনএন’কে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ‘একটি ভ্যান ব্রিজের ওপর পথচারীদের ওপর আঘাত হানে। সেটি ব্রিজ থেকে দ্রুত বেগে দক্ষিণ দিকে যাচ্ছিল।’
ক্যাফেতে থাকা আরেকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ‘ব্রিজের দক্ষিণ দিকে বোরো মার্কেটে একজন মানুষ ছুরি নিয়ে প্রবেশ করেন এবং দু’জনকে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে অবস্থান নেয়।

এদিকে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, ব্রিজ ও মার্কেটে পৃথক ঘটনা দু’টি পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত ছিল না।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলেছেন, এটা একটা ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা। তিনি এমন পরিস্থিতিতে লন্ডনবাসী এবং পর্যটকদের শান্ত এবং সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে এখনো বিস্তারিত কিছু জানি না। কিন্তু এটা নির্দোষ লন্ডনবাসী এবং পর্যটক যারা শনিবারের রাতটি উপভোগ করছিলেন তাদের ওপর ইচ্ছাকৃত এবং কাপুরুষোচিত হামলা। আমি তীব্রভাবে এর নিন্দা জানাই।’
এছাড়া বিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেন, লন্ডনের ভয়ানক ঘটনাটি সম্ভাব্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ নিয়ে সরকারের শীর্ষ নিরাপত্তা পরমর্শকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গত মাসে ম্যানচেস্টার অ্যারেনায় মার্কিন গায়িকা আরিয়ানা গ্রান্ডের কনসার্টে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ২২ জন নিহত হন। পরে এ মর্মান্তিক আত্মঘাতী হামলার দায় স্বীকার করে নেয় আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।
গত মার্চে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ভবনের বাইরে অধিবেশন চলাকালীন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। যা নিয়ে পুরো বিশ্বে তোলপাড় লেগে যায়। ওই হামলায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।