
পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ঈদের ছুটিতে বেড়াতে এসে পানিতে ডুবে পর্যটক ও শিশুসহ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২৫ জুন) থেকে বৃহস্পতিবার (২৯জুন) পর্যন্ত সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও, রামু, উখিয়া, চকরিয়া ও টেকনাফে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এ ছাড়াও উদ্ধার করা হয়েছে পর্যটকসহ তিন শিশুকে।
রবিবার (২৫ জুন) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁওর ডুলাফকির মাজারের পুকুরে মাছ ধরার বাঁশের ভেলায় চড়ে খেলতে গিয়ে একই পারিবারের তিনজনসহ পাঁচ শিশু ডুবে যায়। দু’জন কূলে ফিরে এলেও তিনজন পানিতে তলিয়ে যায়। দু’ঘণ্টা চেষ্টার পর জাল ফেলে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
তারা হলো- সদর উপজেলার ঈদগাঁও ইউনিয়নের ডুলাফকির মাজার এলাকার আব্দুস ছমদের ছেলে আব্দুল্লাহ (১৩) ও তুহিন (৮) এবং একই এলাকার আবু তাহেরের ছেলে তাজমীর আহমেদ মনি (১১)।
অন্যদিকে ঈদের দিন (সোমবার) সকাল ১১টায় রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ির উমখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় খেলতে গিয়ে মো. আবদুল্লাহ (১০) নামে এক শিশু বাঁকখালী নদীতে পড়ে যায়। মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকাল ১১টায় কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসেরকর্মীরা বাকঁখালী নদীর ওই এলাকা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে। সে দক্ষিণ মিঠাছড়ির উমখালী এলাকার নুরুল ইসলামের ছেলে।

এদিকে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে গোসল করতে নেমে সুদীপ্ত দে (১৮) নামে এক কিশোর নিখোঁজ হয়। মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকালে সৈকতের লাবনী পয়েন্টে গোসল করতে গিয়ে স্রোতে ভেসে যাওয়া সুদীপ্ত রাজধানী ঢাকার সূত্রাপুর এলাকার শীতল চন্দ্র দের ছেলে। নিখোঁজের তিনদিন পর শুক্রবার (৩০ জুন) মহেশখালী উপজেলার সোনাদিয়া দ্বীপ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোনের সিনিয়র সহাকরী পুলিশ সুপার হোসাইন মো. রায়হান কাজেমী জানান, বন্ধুদের সঙ্গে সাগরে গোসল করতে নেমে ভেসে যায় ওই কিশোর। শুক্রবার সোনাদিয়া থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অপরদিকে উখিয়ায় রত্নপালংয়ে পুকুরে ডুবে ইমাম চৌধুরী (১২) নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৭ জুন) সকাল ১১টায় ইউনিয়নের ভালুকিয়া পালং গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ইমাম সাবেক ইউপি সদস্য মরহুম আবু তাহের চৌধুরীর বড় মেয়ে। পরে তার লাশটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়।
ঈদের খুশিতে চকরিয়ায় দাদার বাড়ির পুকুরে নৌকা বাইচ খেলতে গিয়ে সাবিহা মাহিন (১১) নামে এক শিশু শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে উপজেলার পশ্চিম বড়ভেওলা ইউনিয়নের ইলিশিয়া জমিদার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
কক্সবাজারের টেকনাফে ঈদের আনন্দে নৌকায় ভ্রমণ করতে নেমে নবনির্মিত ট্রানজিট জেটিতে ধাক্কা লেগে নৌকাডুবির ঘটনায় টেকনাফ পৌরসভাস্থ ইসলামাবাদের মনু মিয়ার ছেলে মো. আমিন (৯), মৌলভী পাড়ার মীর আহমদের ছেলে আনোয়ার সাদেক (১৪) ও নাজিরপাড়ার হামিদ হোসেনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (১৫), মো. আয়ুব (১৬) নিখোঁজ হয়। তাদের মাঝে আমিনের লাশ বুধবার সকালে, বৃহস্পতিবার মো. আয়ুব, সাদ্দামের ও শুক্রবার সকালে আনোয়ার সাদেকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মঙ্গলবার (২৭ জুন) বিকেল ৪টার দিকে টেকনাফ পৌর এলাকার নবনির্মিত জেটিঘাটে ১৫-২০ জনের একদল যুবক বড় একটি নৌকা নিয়ে নাফ নদীতে ভ্রমণে বের হয়। ফেরার সময় নৌকাটি জেটির সঙ্গে ধাক্কা লাগলে ঝুঁকিপূর্ণ জায়গায় বসা সাতজন নদীতে পড়ে যায়। এ সময় উপস্থিত জেলে ও স্থানীয়দের সহায়তায় সইফুল ইসলামসহ চারজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যায় টেকনাফ থানার ওসি মাঈন উদ্দিন জানান, নৌকাডুবির ঘটনায় নিখোঁজ চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাদের সবার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।-সুত্রঃ বি-বার্তা।