
সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:
ঈদুল ফিতরের আগের দিন থেকে শুরু করে গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন স্থানে পৃথক ঘটনায় মোট ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। যার ফলে সীতাকুণ্ডের বহু পরিবারে ঈদের আনন্দ নিরান্দনে পরিণত হয়। নিহতদের কেউ সড়ক দুর্ঘটনা, কেউ খুন, কেউবা বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে আবার কেউবা পানিতে ডুবে মারা গেছেন ।
এছাড়া আত্নহত্যা করে মারা গেছে দুইজন। ঈদের দিনে বাড়বকুণ্ড এলাকায় খুন হয় শহিদুল্লাহ নামে এক ব্যবসায়ী, বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে মারা যায় রিয়াজ আলম নামে এক প্রকৌশলী। পানিতে ডুবে মারা যায় এক শিশু। সলিমপুর থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাত যুবকের লাশ। বার আউলিয়া এলাকার কাজলী পাড়া গ্রামে বিশ পানে আত্নহত্যা করে এক তরুণী, জঙ্গল সলিমপুরে আত্নহত্যা করে এক যুবক। তবে সবচেয়ে প্রাণহানি ঘটেছে সড়ক দুর্ঘটনায়।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড অংশে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা গেছে ১০ জন। আহত হয়েছে ৩০ জনের মতো। ওয়ান বাই ওয়ান সড়ক চালু হওয়ার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট কমলেও বেড়েছে সড়ক দূর্ঘটনা। যা মহাসড়কের যাত্রী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়ে তুলেছে।
সাধারণ মানুষের অভিযোগ, এই সড়কে সিএনজি অটোরিক্সা বন্ধ হওয়ার পর সেইফ লাইন, লেগুনা নামের চার চাকার গাড়িগুলো অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। এই সব গাড়িগুলো চালকদের নেই ড্রাইভারিং লাইসেন্স, নেই গাড়ির ফিটনেস। যার ফলে বেপরোয়াভাবে চলাচল করছে মহাসড়কে। যার ফলে সীতাকুণ্ডে প্রতিদিনই কোন না কোন স্থানে সড়ক দূর্ঘটনার লেগেই আছে।

এছাড়া ওয়ান বাই ওয়ান রোড হওয়ার সুযোগে বড় গাড়িগুলোও বেশি বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছে। ট্রাফিক নিয়মের কোন ধার ধারেনা ড্রাইভাররা। ইচ্ছেমতো ওভারলোডিং, ওভারটেকিংসহ নিয়মের গতির চেয়ে বেশি গতিতে গাড়ি চালাতে গিয়ে অহরহ দূর্ঘটনা ঘটছে প্রতিনিয়ত। ঝরে যাচ্ছে মানুষের মূল্যবান জীবন নয়তো পঙ্গুত্ব বরণ করতে আজীবনের জন্য।
বার আউলিয়া হাইওয়ে থানার সদ্য বিদায়ী অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সালেহ আহাম্মদ পাঠান জানান, পথচারীদের অসচেতনার কারণে দুর্ঘটনাগুলো হচ্ছে। মহাসড়কে একাধিক ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও এগুলো কেউ ব্যবহার করতে চায় না। অন্যদিকে চার লেন হওয়ায় মহাসড়কে দ্রুতগতিতে গাড়িগুলো চলে। অনেক সময় দেখা যায় পথচারীরা মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে রাস্তার মধ্যে এসে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন। তবে বেপরোয়া ও অনিয়ন্ত্রিত গাড়ি চালানো অভিযানে গাড়ির চালকদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।