ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

ঈদে ২০৫ টি সড়ক দুর্ঘটনায় সারাদেশে ২৭৪ জন নিহত

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

বিগত ঈদুল ফিতরে দেশের সড়ক মহাসড়কে ২০৫ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ২৭৪ জন নিহত ৮৪৮ জন আহত হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিত ভাবে ২৪০ টি দুর্ঘটনায় ৩১১ জন নিহত ও ৮৬২ জন আহত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে ঈদ যাত্রা শুরুর দিন ১৯ জুন থেকে ঈদ শেষে বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরা ১ জুলাই পর্যন্ত বিগত ১৩ দিনে ২০৫টি দুর্ঘটনায় ২৭৪ জন নিহত ও ৮৪৮ জন আহত হয়েছে। একই সময়ে নৌ-পথে ১টি দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ও ১৪ জন আহত হয়েছে। উল্লেখিত সময়ে রেল পথে ট্রেনে কাটা পড়ে পূর্বাঞ্চলে ২৫ জন ও পশ্চিমাঞ্চলে ৯ জন সহ মোট ৩৪ জন নিহত হয়।

প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার (৪ জুলাই) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী সড়ক ও নৌ পথে দুর্ঘটনার হতাহতের এ পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল এই প্রতিবেদন তৈরি করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর ঈদ কেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশংকাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় গত চার বছর যাবত বিষয়টি তারা পর্যবেক্ষণ করে আসছে। এবারের ঈদে রেশনিং পদ্বতিতে ছুটি থাকায় ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হলেও সড়ক দুর্ঘটনা বেড়েছে, বেড়েছে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা ২২টি জাতীয় দৈনিক, ৬টি আঞ্চলিক দৈনিক ও ১০টি অনলাইন দৈনিক এ প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে এ প্রতিবেদন তৈরি করে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, উল্লেখিত সময়ে ১৯ জুন ১২ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ২০ জন নিহত ৯২ জন আহত হয়। ২০ জুন ০৬ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ৬ জন নিহত ২০ জন আহত হয়। ২১ জুন ১২ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ১৮ জন আহত হয়। ২২ জুন ১১ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ৩৯ জন আহত হয়। ২৩ জুন ১৫ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ১৮ জন নিহত ৩৫ জন আহত হয়। ২৪ জুন ২০ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত ৮৫ জন আহত হয়। ২৫ থেকে ২৮ জুন ৬০ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ৮০ জন নিহত ১২৮ জন আহত হয়। ২৯ জুন ২৩ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ৩৪ জন নিহত ১২৪ জন আহত হয়। ৩০ জুন ২১ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ২৩ জন নিহত ৭৮ জন আহত হয়। ১ জুলাই ২৫ টি সড়ক দূর্ঘটনায় ২২ জন নিহত ২২৯ জন আহত হয়।

একই সময়ে রাজশাহীর সাইন্স ল্যাবরেটরির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মনসুর আলী, রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় বিমান এয়ারলাইন্সের কর্মাশিয়াল অফিসার মঈনউদ্দীন ভুইয়া, রূপগঞ্জ থানার পুলিশ সদস্য মনিরুজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ও আরিফুজ্জামান, হবিগঞ্জে জলসুখার ইউনিয়নের মেম্বার হাফিজ উল্লাহ, লালমনিরহাট সরকারী কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মুহিবুল ইসলাম মোহন, গাইবান্ধায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র, বগুড়ার রেলাইন এলাকায় আলিফ ড্রিংকিং প্রাইভেট লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম, সাভারে সোহাগ র‌্যাংগস গ্রুপের প্রকৌশলী ইমরান হোসেন সোহাগ, রাজবাড়ীর দুর্গাপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রোগ্রামার আব্দুল হান্নান, দিনাজপুরে দারোয়ানী কলেজের অধ্যাপক কুমোদ চন্দ্র রায়, মানিকগঞ্জ ঘিওর উপজেলা ছাত্রলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আবির বেপারী, নারায়নগঞ্জে সফর আলী কলেজের ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি রফিকুল বারি রুবেন মারা যায়।

এছাড়াও আহত হয়েছে, গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে জাতীয় দলের ক্রিকেটার আব্দুর রাজ্জাক, র‌্যাব-৮ এর সদস্য রুহুল আমিন, ইত্তেফাকের নোয়াখালী প্রতিনিধি আলমগীর ইউসুফ এছাড়াও সেনাবাহিনীর ১৫ সদস্য ও পুলিশের ৫ সদস্য আহত হয়।

পর্যবেক্ষণে দেখা যায় মোট যানবাহনের ৩৮ ভাগ বাস, ৩৪ ভাগ ট্রাক ও পিকআপ, ২৪ ভাগ নছিমন-করিমন, ভটভটি-ইজিবাইক, অটোরিক্সা ও মোটরসাইকেল, ৪ ভাগ অন্যান্য যানবাহন এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল। দূর্ঘটনার ধরণ বিশ্লেষনে দেখা যায়, পথচারি ৩৬ শতাংশ, মুখোমুখি সংঘর্ষ ৩৮ শতাংশ, ওভারটেকিং ১৩ শতাংশ, অনান্য কারনে ১৩ শতাংশ দূর্ঘটনা সংগঠিত হয়।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ১। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, ২। অতিরিক্ত গতিতে যানবাহন চালানো, ৩। অদক্ষ চালক দ্বারা যানবাহন চালানো, ৪। ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহন, ৫। মহাসড়কে অটোরিক্সা, ব্যাটারি চালিত রিক্সা, নসিমন-করিমন চলাচল, ৬। রাস্তার উপর হাটবাজার ও ফুটপাত দখল, ৭। ফুটপাত না থাকা, ৮। বিপদজনক ওভারটেকিং, ৯। বিরতিহীন/বিশ্রামহীন ভাবে যানবাহন চালানো, ১০। ভাঙ্গাছেড়া রাস্তাঘাট এসব দুর্ঘটনার জন্য দায়ী।

সুপারিশমালা: (১) সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রনালয়ে সড়ক দূর্ঘটনা গবেষণা ইউনিট গঠন (২) যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ, (৩) যানবাহানের ফিটনেস পদ্ধতি ডিজিটাল করা, (৪) রাস্তার রোড সেফটি অডিট করা, (৫) অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য বন্ধ করা, (৬) প্রশিক্ষিত চালক গড়ে তোলা, (৭) ওভারলোড নিয়ন্ত্রণে মানসম্মত পর্যাপ্ত গণপরিবহনের ব্যবস্থা করা, (৮) মহাসড়কে ধীরগতির যান ও দ্রুত গতির যানের জন্য আলাদা আলাদা লেইনের ব্যবস্থা করা, (৯) ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু পদ্বতি আধুনিকায়ন করা, (১০) মহাসড়কে নছিমন-করিমন, ব্যাটারি চালিত রিক্সা, অটোরিক্সা বন্ধে সরকারের গৃহিত সিদ্ধান্ত শত ভাগ বাস্তবায়ন করা, (১১) ভাঙ্গাছেড়া রাস্তাঘাট মেরামত করা। (১২) মহাসড়কে ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন চলাচল বন্ধে উদ্যোগ নেওয়া ।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নিরাপদ সড়ক চাই যুগ্ন মহাসচিব লায়ন গণি মিয়া বাবুল, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবি সমিতির সহ-সম্পাদক ব্যারিষ্টার মো. শফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. হানিফ খোকন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য মো. সামসুদ্দীন চৌধুরী, তৌহিদুল ইসলাম, জিয়াউল হক চৌধুরী প্রমূখ।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print