ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একটি ভাড়াটে সংগঠনঃ হাসান মাহমুদ

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে একটি ভাড়াটে সংগঠন উল্লেখ্য করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাসান মাহমুদ এমপি বলেছেন, সরকারের কর্মকান্ডকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বেকায়দায় ফেলার জন্য একটি দল ও গোষ্ঠীর হয়ে কাজ করছে। এটি একটি ভাড়াটে সংগঠন। বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার বিবৃতি আর হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর বিবৃতি এক ও অভিন্ন।

তিনি আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কর্তৃক সারাদেশে খুন, গুম, অপহরণ নিয়ে গতকাল প্রতিবেদন প্রকাশের প্রেক্ষিতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের পক্ষে এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রদূত নুরুল আলম চৌধুরী, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ ছালাম,আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিষ্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ও উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান প্রমুখ।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিতর্কিত ভ’মিকা রাখছে জানিয়ে ড. হাসান মাহমুদ বলেন, ১৯৭৮ সালে রবার্ট বারনেস্টাইনের নেতৃত্বে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ প্রতিষ্ঠিত হয়। কোন দেশের সাথে সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ততাবিহীনভাবে কাজ করার নীতি নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও সৌদি সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যাক্তিদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অনুদান গ্রহণ করার অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের প্রাক্তন প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট বারনেইস্টাইন।

এরপর থেকে মুসলিম প্রধান দেশের,বিশেষ করে ইসলামিস্ট সংগঠনগুলোর কাছে ভীষন গ্রহনযোগ্যতা বাড়তে থাকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের। এইচআরডব্লিউ প্রধান কেনেথ রথের কাছে নানান দেশ থেকে খোলা চিঠিও দেওয়া শুরু এই অভিযোগ করে যে কেন কেথেন রথ সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর পক্ষে কথা বলেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও বিতর্কিত ভূমিকা পালন করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এমন অভিযোগ করে তিনি বলেন, ইসলামের নামে মিশরে মুসলিম ব্রাদারহুড় নারীদের স্বাধীন চলাফেরাতে যে বাধা দিয়েছিল তার পক্ষেই সাফাই গেয়েছিল এই সংগঠনটি। ইরাকের রাসায়নিক অস্ত্র ও নার্ভ গ্যাস ব্যবহারের প্রমাণ আছে বলে রিপোর্ট প্রকাশ করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যা প্রকারান্তে বুশের ইরাক আক্রমণের পক্ষে রায় দেয়। তাদের দেওয়া সেই ঘোষনাটি পরবর্তীতে শতভাগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। তাদের দেয়া মিথ্যা তথ্য প্রতিবদনের কারনে ইরাক যুদ্ধে ৬ লাখ মানুষ অকারনে মারা যায়।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংগঠন হলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে কোন বিবৃতি দেয়না। ইসরাইল কর্তৃক নির্বাচারে ফিলিস্তিনি মানুষ হত্যা নিয়ে তারা প্রতিবাদ করেনি।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয় উল্লেখ করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, সম্প্রতকালে নানান প্রশ্নবিদ্ধ মানুষকে এ্যাডভাইজরি বোর্ডে নিয়োগ দিয়ে যথেষ্ট সমালোচিত হয়েছে এই সংগঠনটি। আমারেকিান সেনাবাহিনীর প্রাক্তন সদস্য ও প্রকাশ্য নাৎসি সমর্থক মার্ক গার্লেস্কোকে সেখানে নিয়োগ দেওয়ার পর ব্যাপক সমালোচনার মুখে তাকে বরখাস্ত করতে বাধ্য হয় হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।

এছাড়া স্বেচ্ছাসেবকরা হিউম্যান রাইটস ওয়াচের বিতর্কিত কর্মকান্ড নিয়ে সবচেয়ে বড় বিশ্বকোষ উইকিপডিয়াতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সমালোচনা করে একটি নিবন্ধ লিখেছে এবং নিয়মিত হালনাগাদ করে যাচ্ছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এর বিভিন্ন আর্থিক অনুদান পাওয়ার সমালোচনা করে সরকার দলীয় এই এমপি বলেন, কেথেন রথের প্রতিষ্ঠিত অন্য সংগঠনগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল, টাইডস ফাইন্ডেশন, থ্রেশল্ড ফাইন্ডেশন ও মেইলম্যান ফাইন্ডেশন, সোস্যাল ভেঞ্ঝার নেটওয়ার্ক যেগুলো থেকে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নিয়মিত অনুদান মোট অংকের অনুদান পায় এবং যার প্রত্যেকটি গ্রামীণ পরিবারের সাথে সম্পৃক্ত ।

ওপেন সোসাইটি ইনস্টিটিউট হচ্ছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর সবচেয়ে বড় অর্থ যোগানদানকারী সংস্থা। ২০১১ সালে আরিয়াহ নাইয়ার ওপেন সোসাইাট ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে ১০০মিলিয়ন ডলার অর্থসাহায্য করেন হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে। এই নাইয়ারের স্ত্রী ইভেট নাইয়ার নোবেলবিজয়ী বাংলাদেশি ড. মুহাম্মদ ইউনুসের গ্রামীণ ফাইন্ডেশনের বোর্ড অব ডিরেক্টরসের একজন।

তিনি বলেন, ইদানিং হিউম্যান রাইটস ওয়াচ যে বিতর্কিত সাংবাদিক ব্যাক্তিত্বের তথ্যসূত্র দিয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্গন বিষয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তিনি হলেন ড. কামাল হোসেনের মেয়ে ব্যারিষ্টার সারাহ হোসেনের স্বামী ডেভিড বার্গম্যান।

প্রথমত ১৯৯৯ সালে থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত ডেভিড বার্গম্যান সেন্টার ফর কর্পোরেট এ্যাকাউন্টেবিলিটি নামে একটি সংগঠনের প্রধান ছিলেন । এই সংগঠনটি ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত প্রায় দেড় লাখ পাউন্ড অনুদান পায় নিগ্রিড রেয়্যুাসিং ট্রাস্ট থেকে। ডেভিড বার্গম্যান যুদ্ধারাপধ বিচার নিয়ে ভূল মন্তব্য করে আর্ন্তজাতিক ট্রাইব্যুালে নি:শর্ত ক্ষমা চেয়েছিলেন।

অতীতেও বাংলাদেশের তাদের বিতর্কিত ভূমিকা তুলে ধরে ড. হাসন মাহমুদ বলেন,২০০১ থেকে ২০১৬ সালের মধ্যে যখন অতিমাত্রায় হত্যা,খুন আর সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছিল। আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল তখন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখেনি। অথচ তারা যুদ্ধারপাধীদের ফাঁসির বিরুদ্ধে বিবৃতি দেয়।

অতীতে দেখা গেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বাংলাদেশের জন্মেও সময়ে নির্বিচারে যারা যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধ সংগঠিত করেছে শুধু তাদের মানবাধিকার কোনভাবে লংঘন হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে আলাকপাত করে। বিষয়টি আশ্চর্যজনক বটে।

আরো আশ্চর্যজনক ব্যাপার হলো প্রত্যেক যুদ্ধাপরাধীর বিচার রায়ের আগে ও পরে প্রায় চার দশক ধরে যুদ্ধাপরাধীদের পৃষ্টপোষক জামায়াত-শিবিরের যে নৈরাজ্য পরিস্থিতি তৈরী করে অমানবিক নৃশংসতা দেখাচ্ছে সেগুলো রাষ্ট্র বিশেষ করে বিচার ব্যবস্থার জন্য হুমকি বলে উল্লেখ না করে বরং তাদের পক্ষ নিয়েছে।

২০১৫ সালে এক সেমিনারে সাউথ এশিয়া ডেমোক্রেটিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক পাওলো কাসাকা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর সমালোচনা করে বলেছিলেন, তারা বাংলাদেশের গণহত্যা,মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে যে বিবৃতি দেয়া তার অধিকাংশই সঠিক নয়।

রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে ইউনেস্কো তাদের উদ্ধেগ প্রত্যাহার বিষয়ে ড. হাসান মাহমুদ বলেন, আমরা প্রকল্পের পক্ষে বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত পেশ করায় তারা বুঝতে পেরেছে এটি পরিবেশের জন্য কোন ক্ষতি হবেনা। তাই তারা তাদের উদ্ধেগ প্রত্যাহার করেছে এবং রামপালে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনকে অনুমোদন দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছিলাম রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করছে তাদের উদ্দেশ্য রাজনৈতিক ও ষড়যন্ত্রমূলক। আর্ন্তজাতি রীতি হচ্ছে কোন বনের ১০ কিলোমিটারের মধ্যে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা যাবেনা। আর সুন্দরবনের অদূরে যে অংশটিতে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে তা সুন্দরবন থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে।

বাংলাদেশের একটি মহল আর্ন্তজাতিক পরিবেশ সংগঠন ও ইউনস্কোর কাছে ভূল তথ্য দিয়েছিল। ইউনস্কোর উদ্ধেগ প্রত্যাহারের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে সরকারের সিদ্ধান্ত সঠিক।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print