
চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসন ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজীকরণে নগরীর সিরাজউদ্দৌলা রোড থেকে শাহ আমানত ব্রিজ পর্যন্ত ২০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট প্রশস্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণে ভুমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্থ জায়গার মালিকদের কাছে ক্ষতিপূরণের ২৫ কোটি টাকা হস্তান্তর করেছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
সোমবার বিকালে কালামিয়া বাজারস্থ কেবি কনভেনশন সেন্টারে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কৃর্তক আয়োজিত চেক প্রদান ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠািনে এ অর্থ প্রদান করা হয়েছে।
এ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বাকলিয়াবাসীর পক্ষে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে বক্তারা বলেন, আমাদের সৌভাগ্য আমরা চট্টগ্রামের উন্নয়নের কান্ডারী হিসেবে যাকে পেয়েছি সে ‘কবিতার সেই ছেলেটি যিনি কথায় নয় কাজে তার নামকে বড় করেছেন’। আজকে সাধারণে উচ্চারিত হয়, “উন্নয়নের আরেক নাম, সিডিএ’র চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। উন্নয়ন দপ্তরে বন্দী ফাইল নয় আজ, যার জন্য অফিসে ধর্ণা দিতে হয় না। উন্নয়ন মানুষের দুয়ারে কড়া নাড়ছে। ক্ষতি পূরণের টাকা হাতে পেতে চেয়ার খেলায় মতন ঘুরতে হয়না, চেয়ারম্যান এসে টাকা বুঝিয়ে দেয়। এই হল আবদুচ ছালাম, যার সততা, একাগ্রতা, মানুষের প্রতি ভালবাসা ও দায়িত্বশীলতায় আমরা স্বপ্নের অতীতকেও বাস্তব হিসেবে দেখছি।
নগর রক্ষা বাঁধ, চার লেনের শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক, বাকলিয়া এক্সেস রোড, প্রশস্ত সিরাজদৌল্লা রোড, প্রশস্ত বাদুরতলা-কাপাসগোলা-চকবাজার সড়ক আজ স্বপ্ন নয়, এগুলো বাস্তব করে তুলেছেন বাস্তবতার মানুষ আবদুচ ছালাম। দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অন্ধকার থেকে আলোর মুখ দেখবেন বাকলিয়ার অধিবাসীরা। পরবর্তী প্রজন্মের জন্যও বড় আশীর্বাদ হয়ে ওঠবে বাকলিয়া এক্সেস রোডটি। আমরা উনাকে আমাদের উন্নয়নের জন্য আগামী দিনে আরো বেশি করে পেতে চাই। আমরা ঊনার স্বপ্ন পূরণের অভিযাত্রায় সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে ধন্য হতে চাই।
এসময় সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম বলেন, পিছিয়ে থাকা বাকলিয়াবাসীর ভাগ্য চাকা বদলে দিতে এটি বড় সুযোগ। ‘আগে যেখানে মানুষ সাত-আট কিলোমিটার ঘুরে মূল শহরের বিভিন্ন এলাকায় আসতো, এখন (সড়ক নির্মাণের পর) তা সোজা পথে দেড় কিলোমিটারে নেমে আসবে। দক্ষিণ চট্টগ্রাম ও বাকলিয়ার মানুষ মাত্র পাঁচ মিনিটে মূল শহরে আসতে পারবেন।’ বাকলিয়ার সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক। বাকলিয়ায় আমার জীবন যুদ্ধের কঠিন সময়টুকুর অনেকটাই কাটিয়েছি। তাই বাকলিয়াবাসী আমার পরম আত্মীয়। আমার উন্নয়ন কর্মকান্ডে বাকলিয়াকে অধিকতর গুরুত্ব দেয়ার মধ্যে এটি একটি কারণ হলেও চট্টগ্রাম তথা জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থ বিবেচনায় বাকলিয়াকে অন্ধকারে রাখার সুযোগ নেই। কর্ণফুলির আশীর্বাদ নিয়ে চট্টগ্রাম শহরের গোঁড়াপত্তন সেই কর্ণফুলির কোলে বাকলিয়া দেশের বৃহত্তর পাইকারী খাদ্য শষ্য বাণিজ্য কেন্দ্র চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, কোরবানীগঞ্জের সাথে অঙ্গাঙ্গিন ভাবে জড়িত। নগরীর মোট জনগোষ্ঠীর বৃহৎ একটি জনগোষ্ঠী এই এলাকাতেই তাদের কর্মকান্ড পরিচালনা করেন। সংগত কারনেই স্থানীয়দের সাথে অন্যান্য পেশাজীবি, শ্রমজীবি, ব্যাবসায়ীরা মিলে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর বসবাস এই বাকলিয়ায়। দক্ষিন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য বান্দরবানের সাথে চট্টগ্রাম নগরী তথা সারাদেশের যোগাযোগের সংযোগস্থল বাকলিয়া। তাই ঘন বসতি, যানজট, জলজট নানান সমস্যায় প্রায়শই নাকাল হতে হয় এলাকাবাসীকে।
প্রতিশ্রুতি শোনা গেছে অনেক, কাজ দেখেনি তেমন। ভাগ্য পরিবর্তনে প্রতিনিধি নির্বাচন করে এসেছেন, পরিবর্তনের হাওয়া লাগেনি বাকলিয়ার গায়ে। সৃষ্টিকর্তার অপরিসীম দয়ায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে চট্টগ্রামের উন্নয়নের সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি কথা না বলে কাজে মন দিই। বাকলিয়াকে যানজট, জলজটমুক্ত পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর, শিক্ষাবান্ধব এলাকা হিসেবে গড়ে তোলার তাগিদ আমার রয়েছে। আমি সে লক্ষ্যে আমার অবস্থান থেকে এগিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের সহযোগিতা ও দোয়া নিয়ে এলাকার ড্রেনেজ ব্যাবস্থা, স্বাস্থ্য সেবা, শিক্ষার উন্নয়ন, কর্ম সংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে আমি অনেক দুর এগুতে চাই। বাকলিয়ার মানুষ আমাকে সমর্থন দিলে এবং যদি আমার সুযোগ হয় তবে, বাকলিয়াকে শহরের ভেতর স্বতন্ত্র আধুনিক উপশহর গড়ার কাজ করব এটাই বাস্তব।
সিডিএ প্রধান প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন চৌধুরী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিডিএ বোর্ড সদস্য মো. জসিম উদ্দিন, জসিম উদ্দিন শাহ, কেবিএম শাহজাহান, চেম্বার পরিচালক সৈয়দ ছগির আহমদ, আওয়ামীলীগ নেতা শফিকুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর পেয়ার মোহাম্মদ, কাউন্সিলর নুরুল হক, কাউন্সিলর এ কে এম জাফরুল ইসলাম, কাউন্সিলর ইয়াছিন চৌধুরী আছু, হাজী শান্তি সওদাগর, আবদুল করিম সওদাগর ফয়েজ উল্লাহ চৌধুরী বাহাদুর, মোহাম্মদ হিরু, জসিম উদ্দিন, আবদুল মান্নান। সিডিএ প্রকৌশলী মোহাম্মদ ওসমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন নাজিম উদ্দিন চৌধুরী, শামসুল হক, এস. এম আনোয়ার মির্জা, আহম্মদ ইলিয়াছ, মো. ফারুক, বীর মুক্তিযুদ্ধা লুৎফর রহমান ফারুক এছাড়াও সিডিএ উর্ধতন কর্মকর্তা ও বৃহত্তর বাকলিয়ার হাজার হাজার আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মী উপস্থিত ছিলেন।