
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ির দুর্গম পাহাড়ে ত্রিপুরা পাড়ায় ৯ শিশু মৃত্যুর কারণ অপুষ্টিজনিত বলে ধারণা করছে ঢাকা থেকে আসা বিশেষজ্ঞ টিম। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রোগতত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনিষ্টিউটের বিশেষজ্ঞ দল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও ফৌজদার হাট সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আক্রান্ত শিশুদের দেখে এ কথা জানিয়েছেন তারা।
তবে বিশেষজ্ঞ টিম কি রোগে এসব শিশু আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে তা জানাতে পারেন নি। তারা বলছেন, শিশুদের থেকে রক্ত এবং নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এসব সেম্পল ঢাকায় পাঠানো হবে।

এর আগে বিশেষজ্ঞ টিম সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট ইনিস্টিউট অব ট্রপিক্যাল এন্ড ইনফেকশনার ডিজিজে চিকিৎসাধীন অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত উপজাতী শিশুদের দেখতে যান। এসময় বিশেষজ্ঞ দলের নেতৃত্ব দেয়া রোগতত্ব ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ডা: ফারুক আহমদ ভুইয়া সংংবাদিকদের বলেন, দেখে শুনে প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছেন যে অপুষ্টিজনিত কারনে শিশুদের মৃত্যু হতে পারে। তিনি আরো জানান, ফৌজদারহাট হাসপাতালে শিশুদের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা তাদের দেখেছেন। দেখে-শুনে মনে হচ্ছে অপুষ্টিজনিত কারনে শিশুদের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক অধ্যাপক এমএ ফয়েজ বলেছেন-অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত শিশুরা মারাত্মক অপুষ্টির সঙ্গে সংক্রমণের শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, এখানে যেসব রোগী চিকিৎসাধীন আছে চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক দেখার পর, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, পর্যবেক্ষণের পর দেখেছেন, বেশিরভাগ রোগী পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। তাদের রক্তশূন্যতা আছে। কিছু রোগীর লিভার বড় আছে। চামড়ায় দানা আছে। একটি-দুটি রোগীর ব্রেনের পর্দা সংক্রমণ বা মেনিনজাইটিস আছে। হামও আছে। সার্বিকভাবে দেখে মনে হচ্ছে এটি কোনো একধরনের সংক্রমণ। পুষ্টিহীনতার কারণে উঁচু ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তাদের মধ্যে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে। আমাদের দেশে অনেক সংক্রামক রোগ আছে। যেগুলো দ্রুত একজনের কাছ থেকে আরেকজনের কাছে ছড়ায়। পাহাড়ে একধরনের রোগ আছে। টাইপাস আছে। হামও আছে। উনাদের কী ধরনের সমস্যা তা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যাবে।
ফৌজদারহাট হাসপাতালের প্রধান ডা: হাসান চৌধুরী জানান, চিকিৎসায় ভর্তি থাকা শিশুদের শারীরিক অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তাদেরকে রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
উল্লেখ্য- জেলার সীতাকুণ্ডে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ী এলাকা ত্রিপুরা পাড়ায় (স্থানীয় ভাষায় জুম্মা পাড়া) অজ্ঞাত রোগে অন্তত ৯টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে। গত ৫ দিনে এই ৯ শিশুর মৃত্যু হয়। এর মধ্যে গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মারা গেছে ৪ জন। তাদের প্রত্যেকের বয়স ৩ থেকে ১২ বছর বলে জানা গেছে। অসুস্থ্য আরো ৪৬ জন শিশুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আরো পড়ুন-
*সীতাকুণ্ডে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণাঃ চিকিৎসকদের ছুটি বাতিল
*সীতাকুণ্ডের দুর্গম পাহাড়ে অজ্ঞাত রোগে ৯ শিশুর মৃত্যু (ভিডিও)