কক্সবাজার জেলা প্রতিনিধিঃ
মুসলিম তরুণীকে ফুসলিয়ে বিয়ে ও ধর্মান্তরিত করার ঘটনায় কক্সবাজারে আটক হয়েছে পাপ্পু মিত্র নামে এক হিন্দু যুবককে। একই সাথে পুলিশী কাষ্টুডিতে নেয়া হয়েছে কথিত প্রেমিকা শারমিন আক্তার টুম্পাকে। আজ বুধবার দুপুরে কক্সবা্জার সদর থানা পুলিশ প্রেমিক যুগলকে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ভাটিয়ারী এলাকা থেকে পালিয়ে কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও এলাকায় মঙ্গলবার বিকালে পুলিশ ও জনতার হাতে আটক হন তারা।
ইতোপূর্বে চট্টেশ্বরী মন্দিরে মুসলিম যুবতী টুম্পাকে ধর্মান্তরিত করে হিন্দু ধর্মীয় মতে ফুঁসলিয়ে বিয়ে করার অভিযোগ তোলে টুম্পার অভিভাবকরা।
পুলিশ ও পারিবারিক সুত্র জানায়, গত ৯ দিন আগে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ভাটিয়ারি এলাকার ব্যবসায়ী হাজী নুরুল আলমের কনিষ্ট কন্যা শারমিন আক্তার টুম্পা একই এলাকার পান্না লাল মিত্রের ছেলে পাপ্পু মিত্রের হাত ধরে অজানার উদ্দেশ্যে পালিয়ে যায়। ওই দিনই শারমিনের ভাই কাতার ফেরত শাহিন সীতাকুণ্ড থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। নিখোঁজ শারমিনের স্বজনরা চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে তাদের সন্ধান করতে থাকেন।
কাতার ফেরত শাহিন জানান, কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও এলাকার প্রবাসী এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারেন পালিয়ে আসা তার বোন ঈদগাঁওতে অবস্থান করছে। তাদের সন্ধানে সহোদর শাহিন, খালাত ভাই নুরুল আবছারসহ ৪/৫ জন আত্মীয় দু’দিন আগে কক্সবাজারে আসেন এবং প্রবাসী বন্ধুর সাথে যোগাযোগ রাখেন।
শাহিন আরো জানান, মোবাইল ফোন ট্রেকিংয়ের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার পর তারা ঈদগাঁও বাস স্টেশনের কাছাকাছি অবস্থান করেন।
মঙ্গলবার সকালে ঈদগাঁও এসে বিভিন্ন অলিগলি ঢুকে নানা জনকে শারমিন ও পাপ্পুর ছবি এবং নাম-ঠিকানা দেখিয়ে তাদের স্বনাক্ত করার চেষ্টা করে।
এক পর্যায়ে দুপুর আড়াইটার দিকে মোবাইলে কথা বলতে বলতে তারা ঈদগাঁও বাসস্টেশনে একটি সিএনজি ভাড়া করতে দেখে তাৎক্ষনিক তাদের ঘেরাও করে। পরে তারা সীতাকুণ্ড থানার পুলিশকে তাদের সন্ধান পাওয়ার বিষয়টি অবহিত করে।
সীতাকুন্ড থানার ওসি বিষয়টি নিয়ে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের সাথে যোগাযোগ করলে আইসি ইন্সপেক্টর খায়রুজ্জামানের নির্দেশে এএসআই মাঈনুদ্দীন বাসস্টেশন থেকে প্রেমিক-প্রেমিকাকে তদন্ত কেন্দ্রের হেফাজতে নিয়ে আসেন। এসময় প্রেমিকা শারমিনের সিঁতিতে সিদুঁর, কপালে টিপ ও হাতে সাকা পরা ছিল।
জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমিক যুবক পাপ্পু মিত্র জানান, গত দু’দিন আগে চট্টগ্রামের চট্টেশ্বরী মন্দিরে ধর্মান্তরিত ও হিন্দু ধর্মীয় মতে তাদের দু’জনের বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকে তার স্ত্রী কপালে টিপ ও হাতে শাখা ব্যবহার সহ সনাতন ধর্মীয়রীতি অনুসরণ করছে।
এব্যাপারে শারমিনের ভাই শাহিন জানান, ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়টি সঠিক কিনা এখনো তারা নিশ্চিত নন। অন্যদিকে তার বোন মুসলিম হলেও কপালে টিপ ও হাতে শাখা পরে ধর্মারিত হয়েছে বলে পুলিশকে জানিয়েছে।
পাপ্পু মিত্র জানান, সে তার পিতার বড় ছেলে। সে চট্টগ্রাম শহরের নাসিরাবাদ সাইন্টিফিক টেকনিক্যাল ইনষ্টিটিউট এর কম্পিউটার ডিপ্লোমা বিভাগের ৬ষ্ট ব্যাচের ছাত্র। আর তার স্ত্রী ভাটিয়ারীর বিজয় সরণী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের স্নাতক ১ম বর্ষের ছাত্রী। শারমিনেরা ৪ ভাই, ২ বোন এবং সে সবার ছোট।
ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মোঃ খায়রুজ্জামান জানান, সীতাকুণ্ড থানার অফিসার ইনচার্জের তথ্যমতে বাসস্টেশন থেকে দু’জনকে আটক করে পুলিশ হেফাজতে আনা হয়। পরে আজ বুধবার আটক দুজনকে সীতাকুণ্ড থানা কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়।