
ওয়েলফেয়ার ফান্ডের অর্থ সংগ্রহের নামে লটারি বিক্রির করে সাধারণ মানুষদের সাথে প্রতারণার অভিযোগে এক চীনা নাগরিকসহ ১২জনকে আটক করেছে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর খুলশী থানার দক্ষিণ খুলশীর একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
দক্ষিণ খুলশীর একটি বাড়ীতে পিবিডিএফ নামে একটি সংস্থার কার্যালয় খুলে তারা দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ মানুষদের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। ইতোমধ্যে তারা লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে উঠেছে।
পুলিশ জানায়, দীর্ঘদিন ধরে আর্ন্তজাতিক এ প্রতারক চক্রটি নাইজেরিয়া, ইয়েমেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে লটারির বিক্রির নামে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিল। ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের নামে এই টিকেট বিক্রি করা হলেও আটককৃতরা কেউ বৈধ কাগজ পত্র দেখাতে পারেনি।
রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ২৫ কোটি টাকার টিকেট বিক্রি করতো তারা। এই চক্রের সাথে আরো ১১ চীনা নাগরিক ও দেশের স্বনামধন্য কয়েকজন ব্যক্তি জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার কথাও জানায় পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (বন্দর) আবু বক্কর সিদ্দিক পাঠক ডট নিউজকে বলেন, এই গ্রপের প্রধান হচ্ছেন চীনা নাগরিক শেন জিয়াং (৩৬)। এই ব্যবসা পরিচালনার সরকারি অনুমোদনও তাদের নেই। অথচ লটারীর গায়ে লেখা রয়েছে সরকারী অনুমোদনের কথা। এই চক্রটি ২০, ৫০, ১০০ টাকায় লটারি বিক্রি করে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত পাওয়ার লোভ দেখাচ্ছে।
আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, চীনা ও বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তি এ চক্রটির সাথে জড়িত। পিবিডিএফ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে তারা লটারি বিক্রি করে থাকে।

চক্রটি নিম্ন আয়ের লোকজনকে টার্গেট করে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত পুরষ্কারের প্রলোভন দিয়ে লটারি বিক্রি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অনুমোদন দিয়ে সরকারি সংস্থা ছাড়া অন্য কোনো সংস্থা লটারি বিক্রি করতে পারে না। তবে চক্রটি ‘সরকারি অনুমোদিত’ উল্লেখ করে ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার লটারির টিকিট বিক্রি করছে।
লটারিতে সরকারি অনুমোদনের বিষয়টি লেখা থাকলেও তারা কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি উল্লেখ করে এডিসি বক্কর বলেন, “চক্রটি নিম্ন আয়ের লোকজনের যেখানে বসতি বেশি সেখানেই টিকিটগুলো বিক্রি করে থাকে। এভাবে করে তারা দৈনিক ২০ থেকে ৩০ কোটি টাকা শ্রমজীবী মানুষদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে।

এ চক্রটির সাথে ১১ জন চীনা নাগরিকের পাশাপাশি বাংলাদেশি বেশকিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির সম্পৃক্ততার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, লটারি প্রিন্ট থেকে শুরু করে বিভিন্ন কাজ চীন থেকে হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি তাদের আর্থিক লেনদেনসহ বিভিন্ন কাজ করে থাকে অনলাইনের মাধ্যমে।
তারা আগে ইয়েমেন ও নাইজেরিয়ায় এ ধরনের ব্যবসা করলেও কয়েকবছর ধরে বাংলাদেশে শুরু করেছে। বর্তমানে নাইজেরিয়া ও বাংলাদেশে তারা ব্যবসাটি করে আসছে বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা বক্কর।
আটক বাকীরা বাংলাদেশী তারা পেট্রো নজরুল বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (পিবিডিএফ) নামে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা-কর্মচারী বলে জানিয়েছেন।