
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি পৌরসভা নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ভোট গণণা চলছে। তবে প্রাপ্ত তথ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্ধি বিএনপির মেয়র প্রার্থী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (ধানের শীষ) চেয়ে বেশী ভোট পেয়ে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগের মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন (নৌকা)।
কয়েকদিন ধরেে এ নির্বাচনকে ঘিরে নানান শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত আজ সোমবার সকাল থেকে ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। দু-একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
ভোট চলাকলীন আওয়ামী লীগ বিএনপি’র দুই মেয়র প্রার্থীই দfবী করেছেন সুষ্ঠ নির্বাচন হচ্ছে বলে। নির্বাচনে প্রতি দুটি কেন্দ্রে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট,স্ট্রাইকিং ফোর্স, বিজিবি, র্যাব ছিল সর্বদা তৎপর।
নির্বাচনে মেয়র পদে তিন প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন (নৌকা) বিএনপির মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (ধানের শীষ)এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক আহম্মদ (নারিকেল গাছ)।
সকাল ১০টায় ধুরুং কে এম টেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, নারী ভোটারের দীর্ঘ সারি। এ কেন্দ্রের ভোটার আছমা আকতার বলেন, ‘সুন্দর পরিবেশে ভোট হচ্ছে। নিরাপত্তাও ভালো। কোনো বিশৃঙ্খলা নেই। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদের তিন প্রার্থী আমাদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন।’
সকাল ১১টায় ফটিকছড়ি ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রেও একই চিত্র দেখা গেছে। তবে সেখানে নারী ভোটারদের জটলা দু-একজন জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন। এ কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. হাসানুল কবির বলেন, কোন জাল ভোট হচ্ছে না, শান্তিপূর্ণভাবে ভোট নেওয়া হচ্ছে। সব পক্ষের পোলিং এজেন্টরা সেখানে রয়েছেন। তিনি বলেন, সকাল ১১টার মধ্যে ৯০০ ভোটার ভোট দিয়েছেন। সেখানে মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৬০০।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে এগারটার দিকে লেলাং-রাঙ্গামাটিয়া আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসা কেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ দুই নারীকে আটক করে। পরে ভোট শেষ হলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবদুস সালাম বলেন, বাইরে থেকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের চ্যালেঞ্জ করে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এছাড়া ভোট সুষ্টুভাবে চলছে।
বেলা আড়াইটার দিকে ধুরুং জুবলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে আওয়ামী লীগের সমর্থিত লোকজন ভোট কেন্দ্র দখলের চেষ্টা চালায়। এসময় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে। ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আজিমেল কদর বলেন, কেন্দ্র্রের বাইরে কিছু লোক গোলযোগ করার চেষ্টা করেছেন। আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। বুথের ভেতরে কোন সমস্যা হয়নি। এসব আমাদের ধর্তব্য নয়।
উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শামশুল হক ফৌজদার বলেন, ‘কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। কোন অভিযোগও পাইনি। শান্তিপূর্ন নির্বাচন হয়েছে। এটাই আমরা চেয়েছি। শৃংখলা বাহিনী সর্বাত্মক ভূমিকা রেখেছেন। ফটিকছড়ির জন্য নির্বাচন ইতিহাস হয়ে থাকবে। এটি সবার সহযোগীতায় হয়েছে।
এ দিকে নজির বিহীন নিরাপত্তায় অনুষ্ঠিত এ নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিএনপি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা। বিএনপি কেন্দ্রীয় বিএনপি’র তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী বলেন নির্বাচন সুষ্ঠ হয়েছে। প্রশাসনের নিরপেক্ষ ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন আমরা এ ধরনের নির্বাচনই চেয়েছিলাম।
আওয়ামীলীগ নেতা খাদিজাতুল আনোয়ার সনি বলেন নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হয়েছে।
নির্বাচনে ৫.৬.৭ নং কেন্দ্রে দায়িত্ব পালনকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামীম হোসেন রেজা বলেন নির্বাচন শতভাগ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠ হচ্ছে। দু একটি জাল ভোটের অভিযোগ পাওয়া গেলেও এর বাস্তব কোন অস্তিত্ব মিলেনি।