ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

মেয়র নাছির তাকে বৈধতা দেয়ার জন্য ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন- মহিউদ্দিন

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সিটি মেয়র এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম নগরবাসীর উপর অযৌক্তিক ও অসহনীয় বর্ধিত গৃহকর চাপিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তাকে বৈধতা দেয়ার জন্য ছল-চাতুরীর আশ্রয় নিয়েছেন। আমি মেয়র থাকাকালে এবং আমার পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মেয়রগণ ‘দি সিটি কর্পোরেশন (টেক্সেসন) রুলস-১৯৮৬’ এর আলোকেই প্রতি পাঁচ বছর অন্তর জনগণের সাধ্য ও সামর্থ্যরে বিষয়টি বিবেচনা করেই গৃহকর নির্ধারণ করেছিলেন। যার ফলে অতীতে গৃহকর নিয়ে নাগরিকদের মাঝে কোন অসন্তোষ দেখা দেয়নি এবং তারা সহনীয় মাত্রায় ধার্যকৃত গৃহকর প্রদান করেও আসছিলেন।

তিনি আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গণমাধ্যমকে দেয়া এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।

সাবেক এ মেয়র বলেন, বর্তমান মেয়র গৃহকর নির্ধারণের ক্ষেত্রে আইনী কাঠামোর দোহাই দিয়ে চলেছেন। অথচ তিনি অজ্ঞানতা বশতঃ বা উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবেই সিটি কর্পোরেশন (টেক্সেসন) এ্যাক্ট-১৯৮৬ এর বিধিমালা লঙ্ঘন করেছেন। এই আইনে জনগণের সাধ্য ও সামর্থ্যরে বাইরে গৃহকর নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়নি। বরং আইনে বলা হয়েছে-ইমারত ও জমির বাৎসরিক মূল্যের উপর সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ কর আরোপ করা যাবে। সর্বোচ্চ ৭ শতাংশ হারে ময়লা নিষ্কাষণ রেইট ও ৫ শতাংশ হারে সড়ক বাতি রেইট আরোপ করা যাবে। অর্থাৎ সর্বোচ্চ ৭% এর উপর উঠা যাবে না। তবে কম বা হ্রাসকৃত হারে মূল্য নির্ধারণে কোন বাধা নেই এবং তা করা যাবে। অর্থাৎ এই আইনে কর বৃদ্ধি করা হোক-এমন কথা বলা হয়নি।

মহিউদ্দিন আরো বলেন, সিটি কর্পোরেশন যেহেতু জনগণ সম্পৃক্ত একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান সেহেতু আইন প্রণেতারা জনগণকে হয়রানী থেকে মুক্ত রাখার জন্য আইনকে সহজ ও সহনীয় পর্যায়ে রেখে মেয়রকে তা প্রয়োগ করার বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন। আরো লক্ষ্যনীয় যে, ইমারত ও জমির ক্ষেত্রে ‘কর’ এবং ময়লা নিষ্কাষণ ও সড়ক বাতির ক্ষেত্রে হলো ‘রেইট’। করের আওতায় সকল ইমারত জমির মালিকগণ অবশ্যই আসবেন। কিন্তু রেইট শর্ত সাপেক্ষে প্রযোজ্য এবং তা সকলের জন্য নয়। তাই বলা যায় নাগরিক সুবিধার সামন্যতম প্রসার নেই, দুপুর থেকে রাত অবধি পুরো নগরী আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত, দুই তৃতীয়াংশ এলাকায় সড়ক বাতি নেই, অধিকাংশ সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা দৃশ্যমান, তখন ময়লা নিষ্কাষণ ও সড়ক বাতির রেইট নগরবাসীর উপর চাপিয়ে দেয়া জুলুমের সামিল।

তিনি উল্লেখ করেন যে, গৃহকর মূল্যায়ন পদ্ধতি সরকার ঠিক করে দিয়েছেন, কিন্তু গৃহকর মূল্যায়নের ভার কর্পোরেশনের এখতিয়ার এবং কিভাবে তা নিরূপন করা হবে, গৃহকরের সর্বোচ্চ হার কত হবে ইত্যাদির বিস্তারিত বিবরণ কর্পোশেন ট্যাক্সেসন রুলস ১৯৮৬ তে আছে। অথচ বর্তমান মেয়র আইনের এই ব্যাখ্যাটিকে আমলে না এনে বর্ধিত কর আরোপের ক্ষেত্রে তার কোন দায়-দায়িত্ব নেই বলে সাফাই গাইছেন।

তিনি প্রশ্ন করেন, সিটি মেয়র দাবী করেছেন তিনি আইন ও জবাবদিহির উর্ধে নন। তা হলে সিটি কর্পোরেশনের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর নির্নায়কগণ সংশ্লিষ্ট আইন, বিধিমালা ও আদর্শ গৃহকর তপসিলে উল্লেখিত পদ্ধতি অনুসরণ করে গৃহকর মূল্যায়ন করেছেন কী? দায়িত্বপ্রাপ্ত গৃহকর নির্নায়কগণ যদি পদ্ধতি ও আইন অনুসরণ করে গৃহকর মূল্যায়ন করেন তা হলে সর্বক্ষেত্রে আপীলের প্রয়োজন হবে কেন? আপীলের শুনানী প্রমাণ করে গৃহকর মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আইনী পদ্ধতি অনুসরণ না করে জনগণের উপর মনগড়া লাগামহীন বর্ধিত করারোপ করা হয়েছে। এতে দুর্নীতির যথেষ্ট আলামত রয়েছে। শতগুণ বেশি কর নির্ধারন করে ক্ষেত্র বিশেষ ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়ার পরও দেখা গেছে আগের তুলনায় আপীলে পর ধার্যকৃত গৃহকর ১০/২০ গুণ বেশি।

তিনি আরো উল্লেখ করেন যে,চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের আওতায় দুই লক্ষেরও অধিক হোল্ডিং রয়েছে। বর্ধিত গৃহকরের ব্যাপারে মেয়র করদাতাদের আপীল আহবান করলেও অনেক চাপা-চাপির পর মাত্র ৪০ হাজার হোল্ডিং মালিক আবেদন করেছেন। এতে প্রমাণিত যে, বর্তমান গৃহকর এ্যাসেসমেন্টকে নগরবাসী কিছুতেই মেনে নিচ্ছেন না।

তিনি আরো বলেন, বর্তমান কর মূল্যায়ন অযৌক্তিক ও ভূল পদ্ধতিতে করা হয়েছে তা প্রমাণিত সত্য। এই সত্যকে আড়াল করার জন্য তিনি (আপীল নাটক) করছেন। যা অসত্য ও ভুল তাকে বৈধতা দিতে মেয়র ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করে জনগণের ক্ষোভকে প্রশমিত করতে গিয়ে উল্টো দল ও সরকারকে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি করেছেন। তাই আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোশেনের গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন জনস্বার্থ ও বিদ্যমান আইনের পরিপন্থী এবং তা বাতিল যোগ্য। তাই আমি এর আগের গৃহকর মূল্যায়নকে নবায়ন করে নগরবাসীর আশা আকাঙ্খার প্রতি সম্মান প্রদানের আহবান জানাই।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, যারা অযৌক্তিক বর্ধিত গৃহকরের বিরুদ্ধে কথা বলছেন তাদের বিরুদ্ধে মেয়র হুমকী দিচ্ছেন। তিনি আক্রমনাত্মক হয়ে অস্ত্রের ভাষা প্রয়োগ করছেন। এটা মেয়র পদের অবমাননা। তাঁর মনে রাখা উচিত তিনি ট্যাক্স কালেক্টর নন, নগরবাসীর অভিভাবক। উন্নয়নের নামে লুটপাট ও করের বোঝা চাপানো দুর্বৃত্তসূলভ প্রবণতা।

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান নয়, সেবা মূলক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেবার মান এখন সর্বনিন্ম পর্যায়ে। আমি সতের বছর মেয়র থাকাকালে নগরবাসীর উপর নতুন কোন কর না চাপিয়ে সর্বোচ্চ সেবা দিয়েছি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবার ক্ষেত্রে চট্টগ্রামকে মডেল নগরীতে পরিণত করেছি। আয়বর্দ্ধক প্রকল্পের মাধ্যমে সিটি কর্পোরেশনকে নিজের সামর্থ প্রতিষ্ঠায় সুদৃঢ় ভিত্তি দিয়েছি। আজ এই অর্জনগুলোকে ধূলায় মিশিয়ে দেয়া হয়েছে এবং চট্টগ্রাম এখন দুঃস্বপ্নের নগরীতে পরিণত হয়েছে। এর দায় ও মূল্য দল ও সরকারের উপর বর্তায়। তাই আমি দলের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে দল ও সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষায় জনগণের মনের ভাষাকেই প্রাধান্য দিই। মেয়র যদি মানুষের মনের ভাষা বুঝতে না পারেন এবং জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নেন তা হলে জনগণকে সাথে নিয়ে উপযুক্ত জবাব দিতে বাধ্য হবো।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print