সিকিউরিটি লক খুলে নগরীতে নির্মাণাধীন আকতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের ল্যুপের একটি পিলারের লোহার কাঠামো হেলে পড়েছে। বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাতে নগরীর ষোলশহর ২ নম্বর গেইট এলাকার সফদর আলী ম্যানশনের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে।
গভীর রাতে সড়ক ফাঁকা থাকায় পুরো একটি পিলারের কাঠামো হেলে পড়লেও বিষয়টি তেমন জানাজানি হয়নি। এছাড়া সড়কে লোকজন না থাকায় বড় ধরনের বিপদ থেকেও রক্ষা পাওয়া গেছে বলে মনে করছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
তবে হেলে পড়া সেই পিলারের কাঠামোটির অর্ধেক অংশ কেটে সোজা করে রাখা হয়েছে।
পিলারের কাঠামো ভেঙে পড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে এ নির্মাণকাজে থাকা রিকসন নামে এক শ্রমিক বলেন, ফ্লাইওভারের জন্য যে ল্যুপ নির্মিত হচ্ছে সেখানে এক-একটি পিলারে প্রচুর পরিমাণ লোহা দেওয়া হচ্ছে। যে পিলারটি হেলে পড়েছে সেটির ধারণক্ষমতার চাইতে লোহা বেশি হয়ে গেছে বলে ধারণা করছি।
জানতে চাইলে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক ও সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘এইটা তো বড় কোন বিষয় না। পিলার ঢালাইয়ের আগে লোহার ল্যাপিং তৈরি করা হচ্ছিল। ধারণক্ষমতা বেশি হওয়ায় রাতে লোহাগুলো হেলে পড়েছে। পরে আমরা সেগুলো সরিয়ে নিয়েছি।’
আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভার প্রকল্পটি ২০১৩ সালের ১ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দেয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) তত্বাবধানে প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয় ২০১৮ সালের জুন মাস পর্যন্ত। ৫ দশমিক ২ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ৫৪ ফুট প্রস্থের ফ্লাইওভারটির মোট নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৬৯৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফ্লাইওভারটির মূল অবকাঠামো তৈরিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৫০ কোটি টাকা এবং র্যাম্প ও লুপ তৈরির কাজে ২৪৬ কোটি টাকা।
সিডিএ ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স-রেনকেন (জেভি)’র মধ্যে ২০১৪ সালের ২৮ অক্টোবর এ বিষয়ে চুক্তি স্বাক্ষরের পর ২০১৫ সালের মার্চ মাসে ফ্লাইওভারটির নির্মাণকাজ শুরু হয়। পরবর্তীতে গাড়ির চলাচলের সুবিধার্থে ফ্লাইওভারে ৬টি র্যাম্প নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে ফ্লাইওভারের জিইসি মোড়ে ৪টি এবং ষোলশহর দুই নম্বর গেটে বায়েজিদ বোস্তামী রোডের দিকে দুটি লুপ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। একটি লুপ দিয়ে গাড়ি যেতে পারবে এবং অপরটি দিয়ে গাড়ি আসতে পারবে। তবে র্যাম্প, ল্যুপ ছাড়াই গত ১৬ জুন গাড়ি চলাচলের জন্য ফ্লাইওভারটি খুলে দেয় সিডিএ কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ২০১২ সালের ২৩ নভেম্বর সিডিএর নির্মাণাধীন বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের গার্ডার ভেঙে ১৫ জন নিহত হয়েছিল এবং আহত হয়েছিল অর্ধশতাধিক।