ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

সন্তানের চশমা পরিবর্তনে মা-বাবার করণীয়

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

দীপা প্রতি পরীক্ষার আগে চোখব্যথা ও মাথাব্যথার উপসর্গে আক্রান্ত হয়। ওর ব্যথার তীব্রতা এতটা বেড়ে যায় যে কিছুতেই পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে পারে না। পড়া শুরু করায় তেমন কোনো অসুবিধা থাকে না কিন্তু সামান্যক্ষণ পরই তার ব্যথা শুরু হয়। মা-বাবা তাকে নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে যান। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক চোখ পরীক্ষা করেন। বদলিয়ে দেন চশমার পাওয়ার। চশমা বদলের পর কয়েক দিন ভালো থাকে, তারপর আবার একই সমস্যা। মাথাব্যথা, চোখব্যথা। দীপা পড়াশোনায় ভালো। ক্লাসে প্রথম দশজনের ভেতর তার অবস্থান। তবে দিন দিন চোখের পাওয়ার বৃদ্ধি ও চোখের সমস্যায় দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন দীপার মা-বাবা।
ওপরে দীপাকে নিয়ে যে চিত্রটা তুলে ধরলাম, আমরা প্রতিদিন কমবেশি আমাদের সন্তানদের নিয়ে এ ধরনের সমস্যায় ভুগি। স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ি সন্তানের চোখের সমস্যা নিয়ে। কেবল চোখ নয়, বড় ধরনের রোগের আশঙ্কা মাথায় আসে।
চিকিৎসক হিসেবে এ ধরনের রোগী আমরা পাই। এ ক্ষেত্রে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মা-বাবাদের আশ্বস্ত করছি যে আপনার সন্তানকে নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। আমাদের গল্পের দীপাকে নিয়েই আলোচনা করলে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।
আতঙ্কিত মা-বাবা এক চিকিৎসক থেকে আরেক চিকিৎসকের কাছে ছোটেন। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলে। কিন্তু তেমন কিছু পাওয়া যায় না। কেবল পরিবর্তন ঘটতে থাকে চোখের চশমার। দীপা তার এক উদাহরণ।
দীপার চোখে পাওয়ারের সমস্যা রয়েছে। তবে তা খুব বেশি মাত্রায় নয়। ওর কিছু অভ্যাস এ সমস্যাকে বাড়িয়ে দেয়। আবার দীপার মা-বাবার টেনশন থেকে বারবার চিকিৎসকের চেম্বারে যাওয়ার বিষয়টিও এ ক্ষেত্রে অনেকাংশে দায়ী। দীপা পড়াশোনার ক্ষেত্রে অতিমাত্রায় সচেতন। বই চোখের খুব কাছে নিয়ে অধ্যয়নের অভ্যাস তার। পড়ার টেবিল নয়, বিছানায় শুয়েই সে পড়াশোনা করে। এভাবে পড়াশোনা করায় নিজের অজান্তে তার চোখের ওপর বেশি চাপ পড়ে।
আমরা যখন পড়াশোনা করি, তখন আমাদের চোখের বেশ কয়েকটি পেশি একত্রে কাজ করে। বিশেষ করে কাছের দৃষ্টিকর্মের জন্য পেশিগুলো অধিকমাত্রায় ক্রিয়াশীল থাকে। দেখার সামগ্রী যথা বইপত্র যত কাছে নিয়ে পড়ার অভ্যাস করা হয়, তত বেশি চোখের পেশির ওপর চাপ পড়ে। এতে একপর্যায়ে পেশিগুলো দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়। ফলে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে, মাথাব্যথার উপসর্গ দেখা দেয়। কখনো কখনো পেশির খিঁচুনি হয় এবং এ ক্ষেত্রেও উল্লিখিত উপসর্গের উৎপত্তি ঘটে। পেশিগুলো অতিমাত্রায় ক্রিয়াশীল থাকাকালে চোখের অভ্যন্তরের লেন্সের আকৃতির ওপর প্রভাব পড়ে। এতে চোখের অন্তর্নিহিত পাওয়ারের পরিবর্তন ঘটে। চোখের পাওয়ার বিশেষত মাইনাস পাওয়ার এ সময় বেড়ে যায়।
রোগীর দূরের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসে। এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটে পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে। ইদানীং মা-বাবা ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার ব্যাপারে অধিকমাত্রায় সচেতন। তা ছাড়া মা-বাবা ছেলেমেয়েদের স্কুলের লেখাপড়ার বাইরেও বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে ভর্তি করিয়ে থাকেন। স্কুলের পর একাধিক কোচিং সেন্টারে পাঠিয়েই ক্ষান্ত হন না, বাড়িতেও টিউটর রাখেন। ছেলেমেয়েদের এভাবে পড়াশোনার চাপ দেওয়ায় তাদের চোখ বিশ্রামের সুযোগ পায় না। এর ফলে চোখের পেশিগুলোও বিশ্রাম পায় না। পরীক্ষার্থীরা মা-বাবার কাছে দূরের ঝাপসা দৃষ্টির উপসর্গের কথা বলে। মা-বাবা সন্তানকে নিয়ে ছোটেন চোখের চিকিৎসকের কাছে। চোখের বিশ্রাম না থাকায় ‘অস্বাভাবিক’ চোখের অস্বাভাবিক পাওয়ার পরিবর্তন করেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। চোখের পূর্ণমাত্রার বিশ্রামের পর যে পাওয়ার থাকে, বিশ্রামহীন চোখের পাওয়ার তা থেকে ভিন্ন হয়। হয়তো যে চোখে কোনো পাওয়ার লাগারই কথা নয়, সেই চোখ বিশ্রামে না থাকায় চোখের ভেতরের পেশির সংকুচিত অবস্থানের পরিপ্রেক্ষিতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পাওয়ার ঘাটতির শিকার হয়।
দীপার ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে মা-বাবার কিছু করণীয় রয়েছে। যেমন:
 ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার ফাঁকে পর্যাপ্ত বিশ্রামের সুযোগ দিন। একটানা বেশিক্ষণ পড়াশোনা করা ঠিক নয়। ২০ মিনিট পড়াশোনার পর অন্তত পাঁচ মিনিট চোখের বিশ্রাম নেওয়া ভালো।
 সন্তানকে চোখের চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার আগে চোখের বিশ্রাম দিন। যেমন বিকেলে যদি চিকিৎসকের চেম্বারে নেওয়ার প্রোগ্রাম থাকে, সে ক্ষেত্রে দুপুরের আহারের পর বিশ্রামে থাকতে সাহায্য করুন।
 চোখের চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে মোবাইল, কম্পিউটার ব্যবহার ইত্যাদি থেকে বিরত রাখুন।
 কোচিং সেন্টারের শিডিউল ওই দিনের জন্য পরিবর্তন করে নিন। কোচিং সেন্টার থেকে সরাসরি চোখের চিকিৎসকের কাছে যাবেন না। কেননা এ ক্ষেত্রে সন্তানের চোখের পরিমিত বিশ্রাম হয় না।
 আপনার সন্তানকে পর্যাপ্ত আলোয় আরামদায়ক পরিবেশে অধ্যয়নের ব্যবস্থা করে দিন। লেখাপড়া টেবিলে করা উচিত, বিছানায় শুয়ে নয়। বিশেষ করে যারা চশমা ব্যবহার করে, তাদের জন্য বিছানায় শুয়ে পড়াশোনা করা মোটেও উচিত নয়।
মোটকথা, সন্তানের চোখের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করার দায়িত্ব মা-বাবার। সন্তানকে চোখের পরিচর্যায় যত্নশীল করে তোলায় মা-বাবা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন।

বাংলাদেশে প্রথম ক্ষুদ্রাকৃতির ইসিজি রেকর্ডার প্রতিস্থাপন
এই প্রথম বাংলাদেশে ক্ষুদ্রাকৃতির ইসিজি রেকর্ডার রোগীর দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সৈয়দ মো. কায়সারের শরীরে পেনড্রাইভ আকৃতির ইসিজি রেকর্ডার চামড়ার নিচে মাত্র ১৫ মিনিটের স্বল্পকালীন আউট সার্জিক্যাল পদ্ধতির মাধ্যমে মনিটরটি স্থাপন করেন স্কয়ার হাসপাতালের বিশিষ্ট হূদেরাগ বিশেষজ্ঞ আবদুল্লাহ আল জামিল। এই ইসিজি রেকর্ডারটি তিন বছর পর্যন্ত রাত-দিন ২৪ ঘণ্টা ইসিজি রেকর্ড করতে থাকবে। যেসব রোগীর অনিয়মিত হূৎস্পন্দন বা ব্যাখ্যাতীত ঘন ঘন মূর্ছা যাওয়ার ইতিহাস আছে, তাদের চিকিৎসা এবং রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই প্রতিস্থাপনযোগ্য ইসিজি রেকর্ডারটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এই রেকর্ডারটির ইসিজি রেকর্ড দেখার জন্য বাইরে থেকে একটি বিশেষায়িত যন্ত্রের সাহায্য নিতে হবে। সেই যন্ত্রের সাহায্যে ইসিজি যেকোনো সময় দেখা এবং প্রিন্ট নেওয়া যাবে। যন্ত্রটির নাম REVEAL এবং বিখ্যাত আমেরিকান কোম্পানি VITATRON এবং MEDTRONIC যন্ত্রটি উদ্ভাবন করেছে। বাংলাদেশি হূদেরাগ বিশেষজ্ঞরা বলেন, এই যন্ত্রটি বাংলাদেশে হূদেরাগ চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এর আগে এ ধরনের যন্ত্র লাগানোর জন্য রোগীদের উন্নত বিশ্বে পাড়ি জমাতে হতো। যন্ত্রটি লাগানো থাকা অবস্থায় এমআরআই করার জন্য কোনো সমস্যা হবে না বলে উদ্ভাবক কোম্পানির প্রতিনিধিরা জানান।

মো. শফিকুল ইসলাম
অধ্যাপক, চক্ষুবিজ্ঞান বিভাগ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়
সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, জুলাই ২০, ২০১১

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print