ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

পাঁচশ বছরে কফি নিয়ে কত কথা!

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

কফি পান ভালো নাকি খারাপ, এ নিয়ে শত বছর ধরেই চলছে আলোচনা। কখনো বলা হয়েছে, কফি পান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, আবার কখনো এই কফিকেই স্বাস্থ্যকর পানীয় হিসেবে প্রশংসা করা হয়েছে। আর তাই কালে কালে কফি হয়েছে শিরোনাম।

কফি নিয়ে তেমনই কিছু শিরোনাম নিয়ে এ আয়োজন:

১৫ শতক: অবৈধ যৌনতার জন্য দায়ী কফি
ইথিওপিয়ান এক ছাগল পালক তার ছাগলদের নতুন ধরনের পাতা এবং ফল খেতে দেখে সেটা নিজেও খেয়ে দেখেন। বেশ চাঙ্গা লাগে তার। এভাবেই কফি খাওয়ার প্রচলন শুরু হলেও পরে কফি শপ চালু হয় আরব দেশগুলোতে।

কফি নিয়ে প্রথম সমালোচনার শুরু সেখানেই। ১৫১১ সালে বলা হয়, কফি শপগুলোতে অবাধ যৌনতা লক্ষ্য করার মতো। তাই তৎকালীন মক্কার গভর্নর কফি শপগুলো বন্ধ করে দেয়ার আদেশ দেন।

১৬ শতক: মদের নেশা দূর করলেও পুরুষত্বহীনতার জন্য দায়ী কফি
দেশে দেশে কফির জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে ইংল্যান্ডে মদের নেশা দূর করতে কফি পানের সুপারিশ করা হয়। ১৬৫২ সালে একটি কফি শপের মালিক তার বিজ্ঞাপনে লেখেন কফি কাশি, গাউট, স্কার্ভি, মাথাব্যথা দূর করে, এমনকি গর্ভপাত রোধ করতেও ভূমিকা রাখে কফি।

কিন্তু ১৬৭৪ সালে লন্ডনের নারীরা কফির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলেন। তাদের অভিযোগ ছিল, অতিরিক্ত কফি পানের কারণে তাদের স্বামীরা পুরুষত্বহীন হয়ে পড়ছে।

১৭ শতক: দীর্ঘসময়ে কাজ করতে সহায়তা করে কফি
১৭৩০ সালের দিকে লন্ডনে চায়ের স্থান দখল নেয় কফি। অলিগলিতে কফি হাউজ গড়ে ওঠে। সেই সময়ে কফির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। বলা হতো, দীর্ঘ সময় কাজ করার জন্য কফির কাপে চুমুকের বিকল্প নেই।

১৮ শতক: কফি অন্ধত্বের কারণ
১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে আমেরিকায় যুদ্ধের কারণে কফির সরবরাহ কমে যায়। এই সময়ে গ্রেইন বেজড কিছু পানীয় পানের প্রচলন হয়। এসব কোম্পানি কফিকে মরফিন, কোকেন, নিকোটিন এর সঙ্গে তুলনা করে এবং তারা দাবী করে অতিরিক্ত কফি পানে অন্ধ হয়ে যেতে পারে মানুষ।

১৯ শতক: কফি শারীরিক বৃদ্ধি ব্যাহত করে
কফি প্রস্তুত এবং স্বাদে অনেক বৈচিত্র্য চলে এসেছে এর মধ্যেই। কিন্তু ১৯১৬ সালের দিকে গুড হাউজ কিপিং ম্যাগাজিনে একটি ঘাবড়ে দেয়ার মতো লেখা প্রকাশিত হয়। সেখানে লেখা হয় যে কফি শরীরের স্বাভাবিক বৃদ্ধিকে ব্যাহত করে। শুধু তাই নয়, বুক ধড়ফড় করা, অস্থিরতা, হজমে সমস্যা এবং ঘুমের সমস্যার জন্যও কফি দায়ী।

১৯২৭ সালে সাইন্স ম্যাগাজিনে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়, নিয়মিত কফি পানে শিশুদের পরীক্ষার ফলাফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। ৮০,০০০ এলিমেন্টারি এবং জুনিয়র স্কুলের শিশুদের উপর চালানো জরিপে তাদের কফি পানের অভ্যাস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল। দেখা যায়, যাদের ফলাফল খারাপ তারা অন্যদের তুলনায় কয়েক কাপ বেশি কফি পান করছে প্রতিদিন।

১৯৭৩ সালের আরেকটি গবেষণায় বলা হয়, কফি হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিন ১২,০০০ রোগীর উপর গবেষণাটি চালায়। দেখা যায়, দিনে এক থেকে পাঁচ কাপ কফি পানে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি ৬০ শতাংশ বেড়ে যায়। ছয় কাপ বা তারও বেশি কফি পানে এই ঝুঁকি বাড়ে ১২০ শতাংশ।

২০০১: ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় কফি
২০০১ সালের গবেষণায় জানা যায় কফি পানে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায় ২০ শতাংশ। তবে চায়ে এই ঝুঁকি নেই বলে জানান গবেষকরা।

২০০৭: লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় কফি
২০০৭ এর গবেষণা জানায় ইতিবাচক কথা। গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিদিন দুই কাপ ব্ল্যাক কফি পানে লিভার ক্যানসারের ঝুঁকি প্রায় ৪৩ শতাংশ কমে যায়। একই ফলাফল ২০১৩ সালের দুটি গবেষণাতেও আসে।

২০১০: ফুসফুসের রোগের সঙ্গে কফির সম্পর্ক
২০১০ সালের একটি বিশ্লেষণে বলা হয়, কফির সঙ্গে ফুসফুসের রোগের সম্পর্ক আছে। নিয়মিত কফি পানে ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে বলেও জানানো হয়।

২০১১: স্ট্রোক এবং প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমায় কফি
১১টি গবেষণার একটি মেটা-অ্যানালাইসিস এ দেখা যায় যে স্বল্প পরিমাণে কফি পানে স্ট্রোকের ঝুঁকি কিছুটা কমে। দৈনিক তিন থেকে পাঁচ কাপ ব্ল্যাক কফিকে পরিমিত হিসেবে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ২০১১ সালে ৫৯,০০০ জন পুরুষের উপর করা একটি গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে কফি পান করলে প্রোস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।

২০১২: হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধের ঝুঁকি কমায় কফি
দিনে চার কাপ কফি হৃদপিণ্ডকে ভালো রাখে এবং হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধের ঝুঁকি কমায় বলে জানানো হয় ২০১২ সালের একটি মেটা-অ্যানালাইসিসে। তবে তা যদি হুইপিং ক্রিম দিয়ে হয় তাহলে অবশ্যই ক্ষতিকর। পান করতে হবে ব্ল্যাক কফি। ২০১৩ সালের গবেষণাতেও একই তথ্য জানানো হয়। এছাড়াও বলা হয়, দীর্ঘায়ু পেতে কফির জুড়ি নেই।

২০১৫: কফি একটি হেলথ ফুড
ইউ এস ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার জানায়, হেলদি লাইফ স্টাইলের জন্য কফি দারুণ একটি পানীয়। বিশেষ করে দিনে তিন থেকে পাঁচ কাপ যদি ক্রিম এবং চিনি ছাড়া পান করা হয় তাহলে তা স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী।

২০১৭: পারকিনসন, হাড়ভাঙ্গার ঝুঁকি না থাকলে বা গর্ভবতী না হলে কফি পান করতে থাকুন
২০১৭ সালে বেশ বড় পরিসরে গবেষণা চালানো হয় কফি এবং মর্টালিটির উপর। ইউরোপের দশটি দেশের ৫২০,০০০ মানুষের উপর চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত কফি পানে অকালে মৃত্যু ঝুঁকি কমে যায়। দিনে তিন থেকে চার কাপ ব্ল্যাক কফি পানে হার্টের সমস্যা কমে, অনেক ধরণের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে, নিউরোলোজিক্যাল, মেটাবলিক এবং লিভারের নানা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

তবে কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত কফি পানে গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকে। এছাড়া পারকিনসন রোগ থাকলে কিংবা যেসব নারীর হাড় ভঙ্গুর তাদেরকেও অতিরিক্ত কফি পান থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকরা।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print