
দীর্ঘদিন ধরে ধরে বিভিন্ন রোগ শোকে আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসা অযত্নে অবহেলায় মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন এক সময়ের তুখোড় রাজনীতিবিদ মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ ইউসুফ। ১৯৯১ সালে কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন এ রাজনীতিক। তার দুর্দিনে দল কিংবা নেতা কেউ খবর রাখেনি।
অবশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে আজ রবিবার দুপুরে সাবেক এ সংসদ সদস্যকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে তাঁর অসুস্থ্যতা এবং দুর্দশা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হলে প্রধানমন্ত্রীর নজরে আসে বিষয়টি।
রবিবার দুপুরে রাঙ্গুনিয়ায় ছোট ভাইয়ের বাড়ি থেকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তিনি এখন হাসপাতালের চতুর্থ তলায় আইসিইউতে ভর্তি আছেন বলে জানান তার ছোট ভাই মো. সেকান্দার।

ইউসুফের ঘনিষ্ট্য সুত্রে জানাগেছে, ৯০ দশকের দিকে মোহাম্মদ ইউসুফ কমিউনিস্ট পার্টি ছেড়ে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। দল বদল করলেও বর্তমান রাজনীতির সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারেন নি। ফলে পিছিয়ে পড়ে এক সময় নীরব হয়ে পড়েন। অনেকটা হতাশা থেকে তার শরীরে বাসা বাধে বিভিন্ন অসুখ।
তাঁর এ দু:সময়ে খোঁজ খবর রাখেনি কেউ। এমনকি দলের নেতারাও। ফলে ক্রমান্বয়ে তাঁর শারীরিক অবস্থা দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছিল। গত কয়েকদিন ধরে ফেসবুকে বিষয়টি প্রকাশিত হলে গণমাধ্যম সরব হয়ে উঠে।
খবর পৌছে প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি জরুরী ভিক্তিতে ইউসুফের যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থার নির্দেশ দেন প্রশাসনকে। এরপর শুরু হয় তোড়জোর। দুপুরে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী দুটি অ্যাম্বুলেন্স এবং তিনজন চিকিৎসক নিয়ে রাঙ্গুনিয়ায় মোহাম্মদ ইউসুফের বাড়িতে যান। অসুস্থ ইউসুফকে এনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জালাল উদ্দিন বলেন, ইউসুফ স্ট্রোকের রোগী, আনকনসাস অবস্থায় আছেন। তার সেফটিসেমিয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. অশোক কুমার দত্তের তত্ত্বাবধানে ইউসুফকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।
সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফের সুচিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। সব ধরনের খরচ সরকার বহন করবে। তাঁর বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুখ আছে। আগে তিনি ব্রেইন স্ট্রোক করেছিলেন। আমরা বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করছি। হাসপাতালে উনার জন্য কেবিন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে উনাকে ঢাকায় নেয়া হবে।