বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি :
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে বিয়ের নয় মাসের মাথায় প্রিয়াংকা দত্ত প্রিয়া (২৩) নামের গৃহবধু’র মৃত্যুর ঘটনায় মামলা দায়ের করেছে প্রিয়ার বাবা রণজিত দে।
প্রিয়ার স্বামী সঞ্জয় দত্ত (৩৫), শ্বাশুড়ি আরতি দত্ত (৬৫) ও ভাসুর অঞ্জন দত্ত (৪২)কে আসামী করে বোয়ালখালী থানায় এ মামলা দায়ের করেন। পুলিশ প্রিয়ার স্বামী ও শ্বাশুড়িকে গ্রেপ্তার করে আদালতে প্রেরণ করেছে।
মামলা বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালের ৯ নভেম্বর পটিয়া উপজেলার মহিরা গ্রামের মনিন্দ্র কারিগড় বাড়ির রণজিত দে’র মেয়ে প্রিয়াংকা দে প্রিয়ার সাথে বোয়ালখালী পৌরসভার পূর্ব গোমদন্ডী দত্তপাড়ার মৃত মনোরঞ্জন দত্তের ছোট ছেলে সঞ্জয় দত্তের বিয়ে হয়।
বিয়ের সময় যৌতুক বাবদ ৫ ভরি স্বর্ণ, টিভি, ফ্রিজ, ও ঘরের ফানির্সারসহ ৫লক্ষ টাকার মালামাল দেয়া হয় বলে উল্লেখ রয়েছে।
বিয়ের কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পর থেকে যৌতুকের জন্য শারীরিক মানসিক নির্যাতন করে প্রিয়া শ্বশুড় বাড়ির লোকজন। এসব অত্যাচার সহ্য করেও প্রিয়া সংসারের পাশাপাশি লেখাপড়া করে আসছিল। কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ কলেজে বিবিএস হিসাব বিজ্ঞান বিভাগে ৩য় বর্ষের পরীক্ষায় সে ১ম স্থান অর্জন করে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬জুলাই) ৪র্থ বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার ফরম পূরণের টাকা চাওয়ায় আসামীরা প্রিয়াকে কোন টাকা দিবে না বলে গালাগাল করে এবং আত্মহত্যা করতে বলে। বিষয়টি প্রিয়া তার মামা প্রদীপ দে কে ফোনে জানিয়েছিল। এরপর বেলা ৪.৪৫ মিনিটে প্রিয়ার ভাসুর অঞ্জন দত্ত ফোনে খবর দেয় প্রিয়া গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
মঙ্গলবার পুলিশ ও স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর দরজা ভেঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় প্রিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে জানালেও বাড়ির দোতলায় নিহত প্রিয়ার মরদেহ পরে রয়েছে এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া ছবিটিতে প্রিয়ার কংকালসার দেহের পিটে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবুল খায়ের জানান, মামলার দু’আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। সুরতহাল প্রতিবেদনে প্রিয়া দেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলেও জানান এ তদন্ত কর্মকর্তা।