
চবি প্রতিনিধিঃ
দীর্ঘ ২৭বছর ধরে বন্ধ রয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক চর্চা যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি দৃষ্টি নন্দন এ স্থাপনাটি হয়ে পড়েছে ব্যাবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ে রয়েছে পরিত্যক্ত অবস্থায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রগতি ও সংস্কৃতির চর্চা প্রসারের লক্ষ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সমূহ নির্বিঘ্নে পালন করতে নির্মাণ করা হয় কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে স্বৈরাচার এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনে নিহত চবি ছাত্র মোজাম্মেলের নামে এটির নামকরণ করা হয় মোজাম্মেল অডিটোরিয়াম।
প্রায় ১২০০ আসন ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এ মিলনায়তনটি ১৯৯১ সালে ঘূর্ণিঝড়ের সময় ক্ষতিগ্রস্থ হলে আর সংস্কার করা হয়নি। এর পর থেকেই বন্ধ রয়েছে অডিটোরিয়ামের সকল কার্যক্রম। পরবর্তীতে এটি সংস্ককরণ করতে চাইলে তৎকালীন ক্যাম্পাস রাজত্বকারী শিবিরের কর্মীরা বাধা দিয়েছে বলেও জানা যায়।
প্রকৌশল দফতর সূত্রে জানা গেছে, ২০০৩ সালের আগস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪৮ তম ফাইন্যান্স কমিটির সভায় মিলনায়তনটি সংস্কারের জন্য ৬৯ লাখ টাকার একটি প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। ২০০৪ সালের ডিসেম্বরে এটি সংস্কারের দায়িত্ব পায় অ্যাকটিভ ইঞ্জিনিয়ারিং নামে একটি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু ২০০৬ সালে অধিক ব্যয়ের অজুহাত দেখিয়ে সংস্কার কাজ থেকে সরে দাঁড়ায় প্রতিষ্ঠানটি। অডিটোরিয়ামটি চালুর জন্য পুনরায় ২০০৯ সালের অক্টোবরে পরিকল্পনা ও উন্নয়ন সভায় আরোও একটি কমিটি করা হয়। ২০১১ সালে কমিটির চূডান্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা থাকলেও এ পর্যন্ত কমিটি কোন প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সংস্কারের অভাবে নজরকাড়া এ স্থাপত্যটি হারাতে বসেছে তার আপন সৌন্দর্য। বৃষ্টিতে খসে পড়ছে দেয়ালের আস্তর। কোটি টাকা খরচ করে একসময় যেসব আসবাবপত্র কেনা হয়েছিল, তা এখন পুরোপুরিই নষ্ট। সেখানে নিরাপদ বাসা বেঁধেছে পোকা মাকড়। পানিতে নষ্ট হয়েছে ৫০০ ফুট লম্বা গ্যালারির প্লাটফর্ম এবং ২০০ ফুট লম্বা মূল মঞ্চ। এছাড়া কার্যকারিতা হারিয়েছে মিলনায়তনের শব্দ নিরোধক ব্যবস্থাও।
অডিটোরিয়ামটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা।
এই প্রতিক্রিয়ায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আবৃত্তি মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক জেবুন নাহার শারমিন বলেন,একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক চর্চার মূল কেন্দ্র হচ্ছে কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম।
আর আমাদের সেটি ২৭ বছর ধরে বন্ধ। যার কারণে আমাদের কে অন্য অডিটোরিয়াম ভাড়া নিতে হয় এবং বাহির থেকে অধিক টাকা দিয়ে সাউন্ড সিস্টেম আনতে হয়। তিনি আরো বলেন, কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম যদি খোলা থাকত তাহলে আমাদের বড় প্রোগ্রাম গুলার জন্য আসন সংখ্যা, সাউন্ড সিস্টেম এবং কম খরচ সব মিলিয়ে স্বাচ্ছন্দে আমাদের অনুষ্ঠান পরিচালনা করতে পারতাম। দ্রুত এই কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম খুলে দিয়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিরাট সচলতার দ্বার উন্মুক্ত করার দাবি সকল শিক্ষার্থীর।