ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

চট্টগ্রামে র‌্যাবের বন্দুকযুদ্ধে ৫দিনে চার মাদক ব্যবসায়ী খতম

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

রাজীব সেন প্রিন্সঃ
চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ঘোষণা দিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এ অভিযানে সবচেয়ে বেশি ভুমিকায় র‌্যাপিড অ্যকশন ব্যাটলিয়ান র‌্যাব। র‌্যাবের দাবি মাদকের ভয়াবহতায় সারাদেশের কিশোর ও তরুণ সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। যুবকরা অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে শুরু করে হত্যার মত জগন্য খেলায়ও মেতে উঠছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঝুঁকি নিয়ে অপরাধীদের গ্রেফতার করলেও কুচক্রি একটি মহলের ইশারায় কিছুদিন পর জামিনে বেরিয়ে আবারো ফিরে যায় অপরাধ জগতে। তাই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকা হতে নিয়েই এবার মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছি।

এর অংশ হিসেবেই দেশজুড়ে শুরু হয় সাঁড়াশি অভিযান। বাড়ছে বন্দুকযুদ্ধ। বেড়ে চলেছে নিহতের সংখ্যা। ১৪ মে থেকে শুরু হওয়া মাদকের বিরুদ্ধে এ বিশেষ অভিযানে সারাদেশে ৩৯ জন মাদক ব্যবসায়ী মারা গেছে র‌্যাব পুলিশের সাথে বন্দুক যুদ্ধে। তবে গত ৫ দিনে শুধু চট্টগ্রামে নিহত হয়েছে চারজন। র‌্যাবের সাথে বন্ধুকযুদ্ধে সোমবার গভীর রাতে দুজন ও গত ১৭ মে নিহত হয় আরো ২ মাদক ব্যবসায়ি।
সোমবার বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে শুক্কুর আলী(৪৫) নামে চট্টগ্রামের এক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী।

মহানগরীর বায়োজিদ থানাধীন ডেবারপাড় এলাকায় র‌্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে নিহত হয়েছে এ মাদক ব্যবসায়ী। এ অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে ১০ হাজার ইয়াবা, একটি ওয়ান শুটার গান,৩ রাউন্ড গুলি ও বিপুল পরিমাণ গাঁজা উদ্ধার করে র‌্যাব। শুক্কুর ব্রাক্ষ্মনবাড়িয়া সদরের আউলিয়া বাজার মুকুন্দপুর গ্রামের মো. হেলাল উদ্দিনের ছেলে। নগরীর বায়েজিদ থানা ডেবার পাড় ব্যাংক কলোনীতে গাঁজা শুক্কুর হিসেবে সুপরিচিত ছিলো সে।

.

বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার সকালে র‌্যাব-৭ এর এএসপি (মিডিয়া) মিমতানুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, তাদের কাছে আগে থেকে তথ্য ছিল সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়ী চক্র বিপুল পরিমান মাদক নিয়ে চট্টগ্রাম মহানগরীর বায়জিদ বোস্তামি থানাধীন ডেবারপাড় জামতলাস্থ বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনীর পূর্ব পার্শ্বে অবস্থান করছে।

খবরের ভিক্তিতে র‌্যাবের একটি দল গভীর রাতে ওই এলাকায় মাদক উদ্ধারে অভিযানে গেলে র‌্যাবের অবস্থান বুঝতে পেরে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় মাদক ব্যবসায়িরা। আত্মরক্ষার্থে র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে দুস্কৃতকারীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থলে বেশ কিছু অস্ত্র, ইয়াবাসহ গুলিবিদ্ধ একজনকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। র‌্যাব সদস্যরা গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় র‌্যাবের দুজন সদস্য আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

এলাকাবাসীর বরাতে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা জানিয়েছেন নিহত শুক্কুর আলী এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে মহানগরীর বিভিন্ন থানায় অন্তত ১০ টি মাদক মামলা রয়েছে। নিহত ব্যক্তি, উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও মাদক সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন র‌্যাব কর্মকর্তা মিমতানুর রহমান।

.

এদিকে একই দিন গভীর রাতে র‌্যাব বাহিনীর অপর এক টিমের সাথে বন্ধুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত চট্টগ্রামের মাদক ব্যবসায়ি মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু (৪৬)। ফেনীর লেমুয়া এলাকায় র‌্যাবের সঙ্গে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনাটি ঘটে। ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, সাত রাউন্ড গুলি, পাঁচটি খালি খোসা ও দশ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে র‌্যাব। চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার মৃত হাজী আব্দুল করিমের ছেলে নিহত মঞ্জু। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

ঘটনার বিবরণে র‌্যাব-৭ ফেনী ক্যাম্পের অধিনায়ক সাফায়াত জামিল ফাহিম জানান, মাদক ব্যবসায়িরা চট্টগ্রাম থেকে মাদক বহন করে ঢাকা যাচ্ছে এমন খবরে ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনীর লেমুয়ায় র‌্যাব সদস্যরা চেকপোস্ট বসায়। ভোরে মাদক বহনকারী মাইক্রোবাসটি লেমুয়ায় পৌঁছালে র‌্যাব সদস্যরা গাড়িটিকে থামানোর চেষ্টা করে। এসময় গাড়িটি দ্রুত পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে র‌্যাব সদস্যরা ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে মাদক ব্যবসায়ীরা গাড়িটি ফেলে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকে। এসময় আত্মরক্ষার্থে র‌্যাবও পাল্টা গুলি চালায়। এক পর্যায়ে সংঘবদ্ধ মাদক ব্যবসায়িরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায় চট্টগ্রামের তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী মঞ্জুকে। পরে তাকে উদ্ধার করে ফেনী সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে।

.

এর আগে চট্টগ্রামে র‌্যাবের সাথে বন্দুক যুদ্ধে ২ জন শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী মারা যায়। গত ১৭ মে বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাবের একটি টিম বরিশাল কলোনীতে মাদক উদ্ধারের প্রস্ততি চালালে মাদক ব্যবসায়ীরা টের পেয়ে র‌্যাবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। র‌্যাব আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালালে দুপক্ষের মধ্যে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পরে সংঘবদ্ধ মাদক বিক্রেতা ও তাদের লালিত সন্ত্রাসীরা পিছু হটে পালিয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে ২ জনকে মৃতবস্থায় পাওয়া যায়। এ ঘটনায় ৩ র‌্যাব সদস্য আহত হলে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের কথা বলেন র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মিমতানুর রহমান।

তিনি বলেন, সদরঘাট থানার অধীন আইস ফ্যাক্টরি রোডের কলোনিটিতে র‌্যাবের অভিযানিক টিম নিয়ে অভিযানে যান র‌্যাবের কর্মকর্তা লেফটন্যান্ট কমান্ডার আশেকুর রহমান। বন্দুকযুদ্ধে নিহত দুই মাদক ব্যবসায়ি হলেন পটিয়া উপজেলার আমজুরহাট এলাকার আলম সওদাগরের বাড়ির মৃত সামশুল আলমের ছেলে হাবিবুর রহমান প্রকাশ মোটা হাবিব (৪২) ও কুমিল্লার বুড়িরচং এলাকার হোসেন মিয়ার ছেলে মো. মোশাররফ (২২)। নিহতদের মধ্যে মোটা হাবিবের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ১২টির বেশি মাদক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছিলেন র‌্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মিমতানুর রহমান। সেদিন বন্দুকযুদ্ধ শেষে ঘটনাস্থল তল্লাশী করে ৩০ হাজার ৪শ পিস ইয়াবা, ৪০ বোতল ফেন্সিডিল, ৬ বোতল বিদেশী মদ, ৫ ক্যান বিদেশী বিয়ার, ৫০০ গ্রাম গাঁজা, ১টি ৭.৬৫ মি. মি. বিদেশী পিস্তল, ২টি ওয়ান শুটারগান, ১টি ম্যাগাজিন, ৮ রাউন্ড গুলি/কার্তুজ ৪ রাউন্ড খালি খোসা ও মাদক বিক্রির নগদ ১৭ হাজার ৩শ টাকা উদ্ধার করে র‌্যাব।

জানা যায়, মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে গিয়ে সাঁড়াশি অভিযানে র‌্যাব, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। তিনটি সংস্থার পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের মাদক ব্যবসায়িদের পৃথক পৃথক বিশেষ তালিকা জমা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। তিন বাহিনীর তিনটি তালিকা সমম্বয় করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে তৈরি হয় নতুন এক তালিকা। ওই তালিকা অনুযায়ি অভিযানে নেমেছে তিন বাহিনী। তবে বন্দুকযুদ্ধ ও হতাহতের কারণে র‌্যাবের অভিযান প্রকাশ পাচ্ছে বেশি।

রাছোঁয়ার বাইরে রাঘববোয়ালরাঃ

এদিকে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টিকরা মাদক বিরোধী অভিযানে মাদক পাচারকারী ও মাদকসেবীরা মারা পড়লেও ধরাছোয়ার বাইরে রয়ে গেছে ইয়াবা ও ফেনসিডিল আমদানীকারী সমাজের রাঘববোয়ালরা।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের সম্প্রতি প্রকাশিত তালিকা নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে চট্টগ্রামে ইয়াবা পাচারের সাথে সিএমপির ৫ ওসি ও কয়েকজন জনপ্রতিনিধির নাম প্রকাশিত হলেও তারা এখনো ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে গেছে। এছাড়া টেকনাফের এক ইয়াবা গড়ফাদারের নাম বেশ আলোচিত হলেও র‌্যাব পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print