
রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধিঃ
রমজান পরবর্তী ঈদকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষেরা যখন শহুরে জীবন থেকে ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরছিলো এমনি অবস্থায় কোনো প্রকার আগাম ঘোষণা ছাড়াই সামান্য পৃথক দু’টি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাঙামাটি শহরে একযোগে বন্ধ করে দেওয়া হয় লঞ্চ-বাস ও সিএনজি অটোরিক্সা চলাচল। এতে সাধারণ জনগণ এবং দূরের যাত্রীরা পড়েছে দুর্ভোগে। রাঙামাটিতে প্রায় ২ ঘন্টা লঞ্চ, বাস ও সিএনজি বন্ধ ছিল। হাজার হাজার লঞ্চ যাত্রী আটকা পড়ে রাঙামাটি রিজার্ভ বাজার লঞ্চঘাটে, বাস স্টেশন এবং শহরের সিএনজি ষ্টেশনে।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলার প্রত্যন্ত দূর্গম দশ উপজেলার মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে যাত্রা শুরু করছে। বৃহস্পতিবার রাঙামাটি লঞ্চ ঘাটে ঈদমূখী মানুষের ঢল দেখা গেছে। সবাই নাড়ির টানে আপন জনের উদ্দেশ্যে ছাড়ছে জেলা শহর রাঙামাটি। ঈদ ঘন আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে আত্মীয় স্বজনের দ্বারপ্রান্তে ছুটে চলছে ঈদমূখর মানুষগুলো। তাই মঙ্গলবার থেকে রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার লঞ্চ ঘাটে ঈদ যাত্রীদের প্রচুর ভীড় দেখা গেছে।
এমতাবস্থায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় কোন প্রকার ঘোষনা ছাড়াই হঠাৎ করে রাঙামাটি শহরে দূর পাল্লার যানবাহনসহ যাত্রীবাহী লঞ্চ এবং লোকাল অটোরিকশা বন্ধ করে দেয় বরাবরের মত প্রভাবশালী মালিক ও শ্রমিক নেতারা। অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাঙামাটির মানুষ আজীবন জিম্মি এসব প্রভাবশালী মালিক শ্রমিকদের কাছে। মাঝে মধ্যে প্রশাসনকেও জিম্মি করে ফেলে তারা। নিরূপায় হয়ে প্রশাসনও রিকুইজিশন করে তাদের সাথে।
লঞ্চযাত্রী মো.আতাউর বলেন, প্রতি বছর লঞ্চ মালিকেরা যাত্রীদের জিম্মি করে এধরনের আচারণ করে থাকেন। অন্যদিকে লক্কর ঝক্কর মান্ধাতা আমলের লঞ্চ দিয়েই চলছে যাত্রীসেবা। এব্যাপারে কারও কোন মাথা ব্যথা নেই বললেই চলে। প্রশাসন দেখেও না দেখার ভান করে বসে আছে। লঞ্চের সেবা নিয়ে অনেকেই অভিযোগ তুলেছেন।
বাসযাত্রী আবুল হোসেন বলেন, তারা এ সময় কেন লঞ্চঘাটের ঘটনা বাস ষ্টেশনে নিয়ে এসে বাস যাত্রীদের হয়রানিতে ফেলেছেন। আমার বাড়ি উত্তরবঙ্গে, ২ঘন্টা এখানে বসে থাকলে বাড়ি যাব কখন। রাঙামাটির প্রশাসনের উচিত এদের ধরে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া।
দীর্ঘক্ষণ সময় যানচলাচল বন্ধ থাকলে লঞ্চ, বাস ও সিএনজি মালিক ও শ্রমিক নেতা সংশ্লিষ্টদের ডেকে কথা বলেন। ঈদে ঘরমূখী লোকজন আটকে পড়েছে তাই দ্রুত যানবাহন চলাচল সচল করে দেয়া হউক সমস্যা সমাধান হবে। জেলা প্রশাসনের এই প্রতিশ্রুতিতে ২ঘন্টা পর চালু হয় যানবাহন।
জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি)তাপস শীল জানান, লঞ্চ মালিক পক্ষের ২টি গ্রুপের মধ্যে লঞ্চের সিডিউল নিয়ে ঝগড়া বেঁধে এক পর্যায়ে লঞ্চসহ সকল যানবাহন বন্ধ করে দেয় সংশ্লিষ্ট মালিক ও শ্রমিকেরা। পরে সেটি প্রশাসনের হস্তক্ষেপে সমাধান হয়।