ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

ডলু নদী ভাঙ্গন রোধে অবদান রাখছে কেএসআরএম

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধিঃ

জেলার সাতকানিয়া ডলু নদীর ভাঙন রোধ করে গ্রামের বিশাল এলাকা রক্ষা করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ কেএসআরএম লিমিটেড। এতে দক্ষিণ গাটিয়া ডেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাঙ্গরমুখ বাজার, সড়ক ও এলাকার অসংখ্য বাড়িঘর রক্ষা পেয়েছে।

সাতকানিয়ার নলুয়া ইউনিয়নের পূর্ব গাটিয়া ডেঙ্গা গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহমান ডলু নদীর ভাঙন রোধে দীর্ঘ গাইড ওয়াল (প্রতিরোধ দেয়াল) স্থাপন করেছে কেএসআরএম লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ শাহজাহান।

অথচ এলাকাবাসী দীর্ঘদিন থেকে সংশ্লিষ্টদের কাছে এ ব্যাপারে আবেদন নিবেদন করেও প্রতিকার পাননি। কিন্তু কেএসআরএম লিমিটেডের মালিক নিজের কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে বিশাল এলাকায় জুড়ে ডলুর ভাঙন রোধ করেছেন। এমন তথ্য জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

.

স্থানীয়রা জানান, কেএসআরএম লিমিটেডের সত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ শাহজাহানের গ্রামের বাড়ি সাতকানিয়া উপজেলার নলুয়া ইউনিয়নের পূর্ব গাটিয়া ডেঙ্গা। ওই গ্রামের পাশ দিয়েই প্রবাহমান আগ্রাসী ডলু নদী। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ডলুর ভাঙনের কবলে পড়ে অসংখ্য বাড়ি ঘর স্থাপনা বিলীন হয়ে যায়। এতে বাস্তুহারা হয় অনেক মানুষ। সেই ধারাবাহিকতায় বছরের পর বছর ভাঙনে পূর্ব গাটিয়া ডেঙ্গা গ্রামের একটি বিলাশ অংশ ডলুর গর্ভে নিশ্চিহ্ন হয়। কিন্তু সেখানে ভাঙন রোধে সরকারের কোনো উদ্যোগ ছিল না। এতে ওই এলাকায় ডলু নদী পাড়ের বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে অসহায়ভাবে দিনাতিপাত করতেন। কেউ কেউ পূর্বপুরুষের ভিটাবাড়ি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন।

অথচ ডলুর ভাঙন রোধের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বারবার আবেদন নিবেদন করেও কোনো প্রতিকার পায়নি। বারবরই আশ্বাসের বাণী শুনেই তাদেরকে নিভৃত থাকতে হয়েছে বছরের পর বছর। এরই মধ্যে বিদ্যালয়ের মাঠ, বাজার, সড়ক, ইবাদতখানা, অসংখ্য দোকান ও বাড়িঘর বিলীন হয়ে যায় ডলুর গর্ভে। এমন পরিস্থিতিতে বিষয়টি অনুধাবন করে দানবীর মোহাম্মদ শাহজাহান নিজ উদ্যোগ ডলুর ভাঙন রোধে উদ্যোগী হন। এ বিষয়ে অভিজ্ঞ প্রকৌশলীদের পরামর্শ ও তত্ত্বাবধানে ব্যক্তিগতভাবে ডলুর তীর ভাঙন রোধে কাজ শুরু করেন। ভাঙন রোধে শুষ্ক মৌসুমে ডলুর তলদেশ খনন করে লোহার নেট বসানোর পর দেওয়া হয় কংক্রিটের ঢালাই। এরপর সেখানে সিমেন্ট ও বালির মিশ্রণ তৈরি করে বড় বড় বস্তায় ভরে সারিবদ্ধভাবে স্থাপন করে গড়ে তোলা হয় চওড়া বাঁধ। পরে ওই বাঁধের ভেতরের অংশে ভরাট করা হয় বালি। এভাবে নদীর গর্ভ থেকে বিশাল এলাকা উদ্ধার ও ভাঙন ঠেকানো হয়। দীর্ঘদিন ধরে এসব কর্মযজ্ঞের মাধ্যমে মোহাম্মদ শাহজাহান ব্যক্তিগত খাত থেকে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে রোধ করেন ডলুর ভাঙন।

.

এতে পুরো গ্রামের বিশাল এলাকা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা পাওয়ার পাশাপাশি অংখ্য মানুষ তাদের পূর্ব পুরুষের ভিটা বাড়িতে নিরাপদে বসবাস করতে পারছেন। এভাবেই তিনি এলাকার হাজার হাজার মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন। রক্ষা করেছেন মাথা গুজার ঠাঁই। ভাঙন রোধে বাঁধ দেওয়া ডলুর পাড়টি এখন এলাকার দৃষ্টিনন্দন বিনোদন স্পট হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় সমাজসেবক আবদুল শুক্কুরের মতে, শাহজাহান সাহেব আমাদের পূর্ব গাটিয়া ডেঙ্গা এলাকার অভিভাবক। উনি না হলে আমাদের এ অজপাড়া গাঁয়ের নামও মানুষ নিতো না। যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ নানান খাতে এলাকাটি অবহেলায় থেকে যেতো এখনো। একমাত্র উনার মহানুভবতার কারণে এলাকার মানুষ এখন অভাব দূর করে উন্নত জীবনযাপন করছে। ডলু নদীতে বাঁধ দেওয়ায় রক্ষা পেয়েছে হাঙ্গরমুখ বাজার, দক্ষিণ গাটিয়া ডেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাঠ, অসংখ্য দোকান ও গ্রামের বিশাল এলাকা। এলাকার মানুষ তার কাছে আজীবন ঋণী হয়ে থাকবেন। প্রায় একই কথা বলেছেন আ জ ম সেলিম, আবদুল আজিজ, জহির মিন্টুসহ আরও অনেকেই।

.

স্থানীয়দের মতে, কয়েকবছর আগে কেএসআরএমের এমন উদ্যোগের ফলে পূর্ব গাটিয়া ডেঙ্গা গ্রামের হাঙ্গরমুখ এলাকাটি ডলুর গর্ভে বিলীন হওয়া থেকে রক্ষা পায়। রক্ষা পেয়েছে দক্ষিণ গাটিয়া ডেঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও খেলার মাঠ। সড়ক ভেঙ্গে ইউনিয়নের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থাও নাজুক হয়ে পড়ে। কিন্তু নদীর ভাঙন রোধ করার কারণে সড়ক পুনরুদ্ধার হয়েছে। শাহজাহান সাহেবের এ উদ্যোগের আগে সেখানে সরকারিভাবে ভাঙন রোধে কোনো কাজ করা হয়নি। নিয়মানুযায়ী এসব কাজ করার কথা পানি উন্নয়ন বোর্ডের।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নলুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলমগীর মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, কেএসআরএম লিমিটেডের মালিক শাহজাহান এলাকায় দানবীর হিসেবে পরিচিত। প্রতিবছর এলাকায় প্রচুর দান করেন। এলাকার যেকোনো সংকটে তিনি এগিয়ে আসেন ত্রাতার ভূমিকায়। এলাকার মূল সড়কটি নিয়মিত মেরামত করে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখেন। প্রতিবছর সড়কের কোথাও না কোথাও ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এসব ভাঙন নিয়মিত মেরামত করেন নিজ উদ্যোগ ও অর্থে। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ডলু নদীর ভাঙন রোধ করে তিনি গ্রামের বিশাল এলাকাকে ডলুর করাল গ্রাস থেকে উদ্ধার করেছেন। সাধারণত এমন উদ্যোগ ব্যক্তি পর্যায়ে দেখা যায় না।

নলুয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আহমদ মিয়া এ প্রসঙ্গে বলেন, আমাদের এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি কোনো সংস্থার অর্থের জন্য অপেক্ষা করতে হয় না। কেএসআরএম লিমিটেডের মালিক শাহজাহান নিজ উদ্যোগে এসব কাজ করে থাকেন নিজ অর্থে। কিন্তু এসব কাজ তিনি করেন গোপনে। এ নিয়ে কোনো প্রচার প্রচারণা তিনি কখনো করেননি।

.

যোগাযোগ করা হলে কেএসআরএম লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর শাহরিয়ার জাহান বলেন, কোনো দান প্রকাশ্যে করা ইসলাম সমর্থন করে না। আমরা সেই বিশ্বাস থেকে সবসময় প্রচার বিমুখ ছিলাম এসব ক্ষেত্রে। আমরা যা কিছু করেছি বা করছি তা মানুষের কল্যাণের জন্য। তাদের সন্তুষ্টির মাধ্যমে সৃষ্টিকর্তার সন্তুষ্টি অর্জনই আমাদের লক্ষ্য। লোক দেখানো কোনো সাহায্য আমরা কখনো করিনি। ডলু নদীর ভাঙন রোধে আমাদের যে কাজ, তা করেছি গ্রামের বিশাল এলাকাকে নদীর ভাঙন থেকে রক্ষা করে অসহায় মানুষের ভিটি বাড়ি রক্ষার জন্য। আমাদের সেই উদ্যোগ সফল হয়েছে। আমরা সেখানে শুধু ভাঙন রোধ করেই দায়িত্ব শেষ করিনি। তা নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণও করা হয়ে থাকে আমাদের পক্ষ থেকে।

গ্রামে ডলুর ভাঙন রোধে কতো টাকা ব্যয় হয়েছে? এমন প্রশ্নের জবাব কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে শাহরিয়ার জাহান বলেন, ‘এসব কথা কাউকে জানানোর প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। আমরা যা করেছি মানবিক বিবেচনায় ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে করেছি। সুতরাং বিষয়টা অপ্রকাশিতই থাক।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print