
চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর স্কুল ছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত প্রেমিক আদনান মির্জাকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছে আদালত। সমাজসেবা অফিসারের উপস্থিতিতে কিশোর সংশোধনাগারে আদনানকে দ্বিতীয় দফায় জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে আইনজীবিরা জানান।
আজ বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রামের ৫ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও শিশু আদালতের বিচারক জিন্নাত ফেরদৌস চৌধুরী এ আদেশ দেন।
এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পতেঙ্গা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন দ্বিতীয় দফায় আদনানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে ৫ দিনের রিমাণ্ড চেয়ে আবেদন করে।
চট্টগ্রাম আদালতে দায়িত্বে থাকা এসি প্রসিকিউশন কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ আদনানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড আবেদন করেছিল।
আদালত আজ শুনানি শেষে রিমান্ডের বদলে সমাজসেবা অধিদপ্তরের কর্মকর্তার উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন।
এর আগে গত ৬ মে একই বিচারক আদনানকে টঙ্গীর কিশোর সংশোধনাগারের তত্ত্বাবধায়কের উপস্থিতিতে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২ মে স্থানীয়রা পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে একটি লাশ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ সৈকত এলাকার ১৮ নম্বর ব্রিজের উত্তর পাশে পাথরের ওপর উপুড় হয়ে পড়ে থাকা অজ্ঞাত লাশটি উদ্ধার করে। পরে স্বজনেরা লাশটি তাসফিয়ার বলে সনাক্ত করেন।
সুরতহাল রিপের্টে মরদেহের এক চোখ উপড়ে ফেলা, অপর চোখ নষ্ট করে দেয়া ছাড়াও নাক-মুখ থেঁতলানো, পিঠ, বুক এবং নিতম্বে নির্যাতনের ছাপ পেয়েছে পুলিশ। তার বুকের মাঝেও নখের দাগ রয়েছে। এর আগে গত ১ মে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ ছিল স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন।
এ ঘটনায় ৩ মে তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন পতেঙ্গা থানায় তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নামে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আদনান মির্জা মামলার আসামি ফিরোজের পরিচালিত ফেসবুকে ‘রিচ কিডস’ নামের গ্যাংস্টারের (এডমিন) প্রধান। আর বাকি চার আসামি সেই গ্যাংস্টারের সদস্য- শওকত মিরাজ, আসিফ মিজান, ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম ও সোহায়েল প্রকাশ সোহেল।
তাসফিয়ার বাবা মোহাম্মদ আমিন আসামিদের বিরুদ্ধে তার মেয়েকে গণধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ এনেছেন।
তাসফিয়া নগরীর সানসাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী ছিলেন তিনি।
ফেইসবুকে পরিচয়ের সূত্র ধরে নগরীর আরেকটি স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আদনানের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় বলে পরিবারের ভাষ্য। লাশ উদ্ধারের আগেরদিন বিকালে আদনানের সঙ্গে বেড়াতে বেরিয়ে নিখোঁজ হন তাসফিয়া।
আদনান ও তাসফিয়া নগরীর গোলাপাহাড় মোড়ে ‘চায়না গ্রিল’ নামে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খান। পরে সেখান থেকে বেরিয়ে দুজনে দুটি অটোরিকশায় উঠে চলে যান বলে সেখানকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানিয়েছে পুলিশ।