
চবি প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) রকিব কামাল নামের এক সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় তিন ছাত্রলীগ কর্মীকে দুই মাসের জন্য বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এ ঘটনার নির্দেশদাতা মিজানুর রহমান মিজান রয়ে গেছে প্রশাসনের ধরা ছোয়ার বাইরে। সোমবার সকালে বিশ^বিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স হেলথ এন্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির এক সভায় এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বহিষ্কৃত তিন ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের ইতিহাস বিভাগের রাকিব এবং রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগের বান্না এবং শওকত আলী। এই তিন ছাত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী।
জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত রমজান শাখা ছাত্রলীগের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের নেতৃত্বে তার কিছু অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল সিইউটাইমস২৪ডটকম এর সম্পাদক শরীফুল ইসলামকে মারধর করে। এই পরপরই রকিব কামাল এই বিতর্কিত নেতা মিজানের অপকর্ম নিয়ে একটি সংবাদ পরিবেশন করে। এসময় মিজান রাকিবকে ছাত্রলীগের কমিটির পর দেখে নিবে বলে হুমকি দেয়। এর কিছুদিন পর শাখা ছাত্রলীগের পূর্ণঙ্গ কমিটিতে আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে স্থান পায় সাংবাদিক পেটুয়া মিজানুর রহমান মিজান। পদ পাওয়ার পর থেকেই সে আবার সাংবাদিক পেটাতে মরিয়া হয়ে উঠে।
এর সূত্র ধরে রবিবার বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির পূর্ব নির্ধাারিত সাধারণ সভায় যোগ দিতে গেলে পথিমধ্যে চা খাওয়ার উদ্দেশ্যে কলা অনুষদ ঝুপড়িতে যায় রকিব কামাল। এই সুযোগে মিজান তার জুনিয়র ছাত্রলীগ কর্মীকে নির্দেশ দেন রকিবকে মারধর করার জন্য। এ ঘটনায় মিজানের অনুসারী জুনিয়র তিন ছত্রলীগ কর্মীকে বহিষ্কার করা হলেও পার পেয়ে যায় সাংবাদিকে মারধরের নির্দেশদাতা মিজান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষর্থী মিজানের ছাত্রত্ব শেষ । ফলে ছাত্রত্ব না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মিজানকে কোন শাস্তি দিতে পারেনি। তবে ছাত্রত্ব না থাকলেও সে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের আমানত হলে অবস্থান করেন।
এ প্রসঙ্গে মারধরের শিকার রকিব কামাল বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ২০১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও দৈনিক মানবকন্ঠের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি বলেন,‘আমি চাই না আমার মত আর কোন সাংবাদিক নিউজের জন্য কোন রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হোক। প্রশাসন দ্রুত ঐ কুলাঙ্গারদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ায় ধন্যবাদ। আমি চাই এ ঘটনার পেছনে যাদের ইশারা রয়েছে তাদেরকেও বিচাররের আওতায় আনা হোক।’
শাখা ছাত্রলীগের আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান জানান,‘ আমি এ ঘটনার সাথে যুক্ত নই। আমি ঘটনা শুনে রকিবকে মেডিকেলে নিয়ে যাই। তবে কেন আমাকে এ ঘটনার সাথে জড়িত বলা হচ্ছে আমি জানি না।’
শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু বলেন,‘আমরা বিষয়টি সম্পর্কে অবগত আছি। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাথে কথা বলেছি। আশা করি খুব দ্রুত সিধান্ত নিতে পারব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আলী আজগর চৌধুরী বলেন,‘বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিকের উপর হামলা খুবই ন্যক্কারজনক। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে দুই মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। যদি দুই মাসের মধ্যে তারা শুধরে না যায় তবে বহিষ্কার আদেশ আরোও বাড়ানো হতে পারে।
প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আপ্যায়ন সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজানের নির্দেশে কলা অনুষদ ঝুপড়িতে রবিবার দুপুর দেড়টার দিকে সাংবাদিক রকিব কামালকে মারধর করে গুরুত্বর আহত করে।