
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসনের ‘ভূমি অধিগ্রহণ বিভাগ-(এল.এ শাখা) থেকে জমি মালিকদের নামে ইস্যুকৃত বেশ কিছু চেক ও জমি মালিকদের হিসাবের ব্ল্যাঙ্ক চেকসহ তিন দালালকে গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি।
গতকাল সোমবার দিনগত রাত সাড়ে আটটার দিকে নগরের লালদীঘির পাড় থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া তিন দালালের মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ের আবদুল খালেক (৬০), আইয়ুব আলী (৪৫) ও তপন নন্দি দাশ (৬০)।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন- গ্রেফতারকৃতদের কাছে ল্যাল্ডওনারের নামে ইস্যুকৃত চেক কিভাবে গেলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখন আপাতত তিনজনকেই চালান দেয়া হয়েছে। তবে কি পরিমান চেক পাওয়া গেছে তাৎক্ষণিক তা জানাতে পারেননি।
নগর গোয়েন্দা পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, সোর্সের মাধ্যমে জানতে পেরে বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়। এমন কিছু হয়ে থাকলে গ্রেফতারের জন্য জেলা প্রশাসক ডিবি-ডিসিকে বলেন।

আর এই অনুমতি পেয়েই অভিযানের শুরুতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের কাছে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ বিভাগ- এল.এ শাখার থেকে বিভিন্ন ভূমিদাতার নামে ইস্যুকৃত চেক এবং ভূমিদাতাদের নামে একাউন্টের ব্যালাঙ্ক ও পরিমান লিখা আছে এমন বেশ কিছু চেক জব্দ করা হয়। এর পরপরই এসব চেকসহ তাদেরকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ ও যাচাই শেষে মামলা দিয়ে ডিবির হাতে তুলে দেয়া হয়েছে ওই তিনজনকে।
এদিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবস্থানকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গ্রেফতার হওয়া আইয়ুব বলেন, ভূমিদাতাদেরকে তাদের জমির টাকা পেতে আমরা সহযোগিতা করি। তাতে তারা খুশি হয়ে আমাদেরকে কিছু খরচপাতি দেয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এল.এ শাখার এক সার্ভায়ার বলেন, এখানে ফাইল প্রতি টাকা আদায় করা হয়। এই টাকার ভাগ অফিসের পিয়ন থেকে শুরু করে জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার হয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টরা পান। যেসব ভূমিদাতা আপোসে আসে না তাদের ফাইল পড়ে থাকে। মাসের পর মাস ঘুরেও টাকা পাবে না। আর যারা আপোসে আসে এক সপ্তাহের মধ্যে ফাইল ওকে করে টাকা নিয়ে চলে যান।
ওই শাখার অপর এক কর্মচারী জানান, কারো ফাইল প্রস্তুত হওয়ার সাথে সাথে ভূমি মালিককে ধরা হয় নগরের নিউ মার্কেট কেন্দ্রীক সোনালী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের যে কোনো শাখায় তার নামে একাউন্ট করার জন্য। একাউন্ট হলে সেই একাউন্ট থেকে আগেই টাকার পরিমান হিসেব করে ১০ থেকে ১৫ পারসেন্ট (শতাংশ) টাকার চেক নিয়ে নেয়া হয়। চেক দেয়ার পর ওই চেকটি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ম্যানেরজারকে পৌঁছে দেয়া হয় এবং বলে দেয়া হয় টাকা ট্রান্সফারের সঙ্গে সঙ্গে এই টাকাটা তুলে নেয়ার জন্য।