ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

ফটিকছড়িতে শতবর্ষী পুকুর ভরাটঃ ৫জনকে পরিবেশের নোটিশ

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির ভুজপুরে বিশাল আকৃতির পুকুর ভরাট করছে একটি সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে রাতের আধাঁরে ভরাট করা হচ্ছে শতবর্ষী এ পুকুরটি। রাতে পুকুরটি মাটি দিয়ে ভরাটের সময় যাতে কোন ধরনের সংবাদ মাধ্যম যেতে না পারে সে জন্য নেয়া হয়েছে কড়া পাহাড়ার ব্যবস্থা।

এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ জেলা প্রশাসকের দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা পর পাঁচজনকে নোটিশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়।

গত ৭ মার্চ পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মাঈদুল ইসলাম সরেজমিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পান। এর পর গত ১২ মার্চ পুকুর ভরাটকারী সিন্ডিকেটের প্রধান জয়নাল আবেদিন সহ ৫জনের নামে নোটিশ পাঠিয়েছে। নোটিশে পুকুরে মোট ৮১ শতাংশ অংশের মধ্যে ৩০ শতাংশ পুকুর ভরাটের সত্যতা পাওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।

আগামীকাল (২৫ মার্চ) সোমবার সকাল ১১টায় এ বিষয়ে চট্টগ্রাম পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ে শুনানী হওয়ার কথা। এ ছাড়া একই সাথে পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের পূর্বানুমতি ছাড়া টিলার মাটি কেটে পুকুর ভরাটের বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে কেন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবেনা তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

এদিকে শতবর্ষী এবং এলাকার পানির একমাত্র উৎস এ পুকুরটি এভাবে রাতের আধাঁরে ভরাট করার ফলে স্থানীয়দের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। গত ২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিভিন্ন স্থাপনা নির্মানের সময় দেশের জলাশয়সহ জলাধার যাতে বন্ধ বা বিলুপ্ত করা না হয় সে জন্য কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন। এর পরেও থেমে নেই সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের পুকুর ভরাট।

স্থানীয় সুত্র জানায় ভুজপুর থানাধীন দাঁতমারা বাজারের উত্তর পাশের্^ চট্টগ্রাম হেয়াকোঁ প্রধান সড়কের পাশেই পুকুরটির অবস্থান। উত্তর দক্ষিন বিশাল দৈর্ঘ্যের এ পুকুরটির মালিক স্থানীয় জনৈক ইসহাক ডিলার। তার পিতা মরহুম হাজি বদন মিয়া’র একমাত্র ছেলে ইসহাক পৈত্রিক সুত্রে এ পুকুরের মালিক।

সম্প্রতি তিনি পুকুরটির ১৭০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ১২৫ ফুট প্রস্তের মোট ১০ গন্ডা অংশ এলাকার ইসলামপুর গ্রামের পাথর ব্যবসায়ী জয়নালের নিকট বিক্রি করে ৩২ লাখ টাকায়। প্রথমে পুকুর হিসেবে ক্রয় করলেও পরে জয়নাল পুকুর ভরাটের কাজ শুরু করে। পুকুরের মাঝখানে গাছের বল্লি দিয়ে বেড়া তৈরি করে। এর পর সেখানে রাতের আধাঁরে ড্রাম ট্রাকে করে মাঠি ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। গত দু দিনে পুকুরটির প্রায় কিছু অংশ ভরাট করেও ফেলেছে তারা। স্থানীয় একটি সিন্ডিকেট জয়নালকে মাঠি দিয়ে পুকুরটি ভরাটের কাজে সহায়তা করছে বলে সুত্র জানায়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, পুকুরটির উত্তর পাড়েই রয়েছে মসজিদসহ একটি এতিম খানা ও হেফজ খানা মাদ্রাসা। এ মাদ্রাসার প্রায় ২ শতাধিক ছাত্র শিক্ষক গোসল অজু করাসহ দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় কাজে পুকুরটি ব্যবহার করে।

এ ছাড়া স্থানীয় গ্রামের প্রায় ৫শতাধিক বাসিন্দাও এ পুকুরের পানির উপর নির্ভরশীল। তা ছাড়া স্থানীয় বাজারে যদি বড় ধরনের আগুনের ঘটনা ঘটে সে ক্ষেত্রে অগ্নি নির্বাপনের জন্য একমাত্র পানির উৎস এ পুকুর। বর্তমানে গত দুদিন ধরে পুকুরটি ভরাট করার কারণে পানির উৎস বিলীন হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে পুকুরটির মুল মালিক ইসহাক ডিলার স্থানীয় ভুমি কর্মকর্তাকে জানান তিনি জয়নালের নিকট পুকুর বিক্রি করেছেন। কিন্তু পুকুর ভরাট করার জন্য বিক্রি করেননি।

এ ব্যপারে পুকুরটির ১০ গন্ডার অংশ ক্রেতা জয়নাল বলেন-আমি একটি দোকান নির্মানের জন্য একসাইড ভরাট করতেছি। এ ছাড়া তিনি বলেন ভরাট করে স্থাপনা তৈরির জন্যই তো পুকুরটির একটি অংশ ক্রয় করা হেয়ছে বলেও জানান তিনি।

ফটিকছড়ি উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মো. জানে আলম বলেন দাঁতমারায় পুকুর ভরাট হচ্ছে খবর পেয়ে নারায়নহাট ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা আবু বক্করকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে। তারা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে নোটিশ করেছেন। সব দেখে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পরিবেশ আইন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০)-এর ৬ (ঙ) অনুযায়ী, জাতীয় অপরিহার্য স্বার্থ ছাড়া কোন ব্যক্তি,প্রতিষ্ঠান, সরকারি বা আধা সরকারি এমনকি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পুকুর ভরাট না করার বিধান রয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (২০১০ সালে সংশোধিত) অনুযায়ী, যে কোন ধরনের জলাধার বা পুকুর ভরাট সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং ভরাটকারীর বিরুদ্ধে আইনের ৭ ধারায় প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য ও জীব বৈচিত্র নষ্ট করে পরিবেশগত ক্ষতি ও বিধ্বংসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের বিধান রয়েছে।

এছাড়াও জলাধার সংরক্ষণ আইন ২০১০ অনুযায়ী কোন পুকুর, জলাশয়, নদী, খাল ইত্যাদি ভরাট করা বেআইনি। ওই আইনের ৫ ধারামতে জলাধার হিসেবে চিহ্নিত জায়গার শ্রেণি পরিবর্তন করা যাবে না।

অপর একটি সূত্রে জানা যায়, সংশোধনী ২০১০ এর ৬ (খ) ধারা অনুযায়ী জলাধার হিসাবে চিহ্নিত জায়গা ভরাট বা অন্য কোনভাবে পরিবর্তন করা যাবে না। পুকুর বা জলাধার ভরাটের প্রমাণ পাওয়া গেলে প্রথমবারে জন্য ২ বছর কারাদন্ড ও ২ লাখ টাকা জরিমানা। পরবর্তীতে অপরাধের ক্ষেত্রে ১০ বছরের কারাদন্ড ও ২ থেকে ১০ লক্ষ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে। আইন অনুযায়ী জলাধার ভরাটের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অধিদপ্তরের অনুমতি নেয়া হয় না।

পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগীয় অফিসের উপ-পরিচালক মো. ফেরদৌস আনোয়ার বলেন,ফটিকছড়ির ভুজপুরে একটি পুকুর ভরাট সংবাদ পেয়েছি। ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট অফিসার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন যত বড় প্রভাবশালি হউক এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।

*ফটিকছড়িতে শতবর্ষী পুকুর ভরাট করছে সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেট

 

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print