ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

জরাজীর্ণ কালুরঘাট রেলসেতুর টোল বৃদ্ধি, বাড়ছে অসন্তোষ

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

পূজন সেন, বোয়ালখালী প্রতিনিধিঃ
জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতু পারাপারে টোল বাড়ানোর অজুহাতে গণপরিবহণগুলো পকেট কাটছে যাত্রী সাধারণের। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছে কালুরঘাট সেতু পারাপারকারীরা।  প্রায় শত বছরের পুরোনো জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুর টোল বৃদ্ধির কারণে পরিবহন শ্রমিক ও যাত্রীদের ব্যয়ভার বাড়ায় এ অসন্তোষ চরমে পৌঁছেছে।

চট্টগ্রাম নগরের সাথে বোয়ালখালী উপজেলার যোগাযোগের গণপরিবহণ বলতে ট্যাক্সি ও টেম্পু। এই দুই গণপরিবহণে সেতুর টোল বাড়ানোয় বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে যাতায়াতের ব্যয় বেড়েছে জনপ্রতি ১০-১৫টাকা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে নিন্ম আয়ের লোকজন ও চাকরিজীবীরা।

সেতুর অতিরিক্ত টোল আদায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার (দক্ষিণাঞ্চল) সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক যৌথ কমিটি ও টেম্পু, ট্যাক্সি শ্রমিক ইউনিয়ন এবং যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

.

সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক যৌথ কমিটির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ মুছা ও সদস্য সচিব মো. মহিউদ্দিন চৌধুরী জানান, ‘কোন ঘোষণা ছাড়াই বিভিন্ন যানবাহন থেকে জোরপূর্বক বাড়তি টোল টোল নেওয়া অযৌক্তিক।’

৩১ মার্চের মধ্যে বর্ধিত টোল প্রত্যাহার করা না হলে শ্রমিক সমাবেশ ও ট্যাক্সি পারাপার বন্ধসহ ধর্মঘটের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম অটো রিকশা ও অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনুর রশীদ।

জেলা অটো টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের বোয়ালখালী শাখার সাধারণ সম্পাদক সেলিম উদ্দিন বলেন, টেম্পুতে গড়ে ১০ জন করে যাত্রী পারাপার হলে জনপ্রতি ৪ টাকা করে টোল পড়ে। সেই চার টাকা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করতে হবে। বাড়তি ভাড়া নিয়ে যাত্রী ও টেম্পু চালকদের সঙ্গে বাকবিতন্ডা ও ঝগড়া-বিবাদ হচ্ছে। অতিরিক্ত টোল আদায় প্রত্যাহার করা না হলে টেম্পু পারাপার বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।

টোল বৃদ্ধির বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা সদরে স্থানীয় সংসদ সদস্য মঈনউদ্দিন খান বাদলের সঙ্গে টেম্পু শ্রমিক ইউনিয়নের বৈঠক হয়। এ বৈঠকে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের কেউ উপস্থিত ছিলেন না।

বৈঠকে সংসদ সদস্য বাদল বলেন, সরকারি শিডিউলে টোল বৃদ্ধির নিয়ম থাকলে কিছু করার নেই। তাদের শিডিউল দেখে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বলেন তিনি।

এসময় উপস্থিত জেলা আওয়ামীলীগ নেতা রেজাউল করিম বাবুল সংসদকে বলেন, শিডিউলে অনেক কিছুই থাকে। তবে মানবিক বিবেচনায় ও জনস্বার্থে টোল বৃদ্ধি না করায় সমুচিত হবে। কেননা, বোয়ালখালী থেকে নগর যাতায়াতকারী টেম্পু ও ট্যাক্সি দৈনিক ৭-৮ বার সেতু পারাপার করে। শিডিউলে মোটর সাইকেল থেকেও টোল নেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা নেওয়া হয় না। অথচ বোয়ালখালীবাসীর যাতায়াতের প্রধান দুই গণপরিবহনের টোলবৃদ্ধি অমানবিক।

.

সংসদ সদস্যের এ নিদের্শনায় সন্তুষ্ট নন টেম্পু চালকেরা। তারা বলেন, বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে সাংসদ, উপজেলা প্রশাসন, টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও সেতু ব্যবহারকারী যানবাহন সংগঠনগুলোর মধ্যে সমন্বয় বৈঠক করা হলে এর সমাধান সহজ হত। এখন সমাধান না হয়ে সমস্যা রয়ে গেলো।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, কালুরঘাট সেতুর টোল আদায় বন্ধ করে দেওয়া হোক। দেশের অনেকস্থানে এই ধরনের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর টোল নেওয়া হয় না।

এর কারণে থমকে রয়েছে বোয়ালখালী তথা দক্ষিণ চট্টগ্রামের উন্নয়নের চাকা। দীর্ঘদিন ধরে একটি দ্বিমুখী নতুন সেতু নির্মাণের দাবিতে বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছেন দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী।

জানা গেছে, টানা তৃতীয়বারের মতো বৃটিশ আমলে নির্মিত মেয়াদোত্তীর্ণ একমুখী কালুরঘাট সেতুর টোল আদায়ের দায়িত্ব পেয়েছে ‘এএন এন্টারপ্রাইজ’ নামে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান। সর্বশেষ চলতি বছরের জন্য দায়িত্ব বুঝে নিয়ে গত ২৪ মার্চ রোববার থেকে টোল আদায় শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। তবে প্রথমদিনেই টোলের হার বাড়িয়ে দেয় পূর্বের তুলনায়।

এর প্রতিবাদে পরদিন সোমবার চান্দগাঁও-কালুরঘাট-বোয়ালখালী সড়কের প্রধান যান টেম্পু সেতু পারাপার বন্ধ করে দেয়। ট্যাক্সিগুলো নিতে থাকে বাড়তি ভাড়া। ফলে দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। অবশ্য পরে স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাসে পূর্বের টোলে সেতুর পারাপার শুরু করে টেম্পু।
পরিবহন শ্রমিকরা জানায়, বিগত সময়ে কালুরঘাট সেতু পারাপারে প্রতি টেম্পো থেকে ৩০ টাকা টোল আদায় করা হতো। যা এখন ৪০টাকা দাবি করা হচ্ছে। একইভাবে প্রতিটি সিএনজি ট্যাক্সির টোল ৫ টাকা বাড়িয়ে ২০ টাকা, ২০ টাকা বাড়িয়ে মাইক্রোবাসে ৭০ টাকা, ছোট আকৃতির বাসে ২০ টাকা বাড়িয়ে ১০০ টাকা এবং বড় আকৃতির বাসে ২০ টাকা বাড়িয়ে ১২০ টাকা দাবি করা হচ্ছে।

এদিকে বর্ধিত টোল আদায়ের প্রতিবাদে আয়েজিত এক সমাবেশে চট্টগ্রাম জেলা ট্রাক ও কার্ভাডভ্যান শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক মো. বখতিয়ার বলেন, ‘টোল বৃদ্ধির কোন যৌক্তিকতা নেই। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কালুরঘাট সেতুর টোল বৃদ্ধি করা হয়েছে।’

টানা তিন বছর একই প্রতিষ্ঠান টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবেই টোল আদায়ের দায়িত্ব পাওয়ার দাবি করে ইজারদার প্রতিষ্ঠান ‘এএন এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী মো. আইয়ুব আলী বলেন, ‘দুই মাসে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। আগের বছরের ১০ শতাংশ বেশি দিয়ে চার কোটি চার হাজার টাকায় ইজারা নেওয়া হয়েছে কালুরঘাট সেতু।

টোল বৃদ্ধির বিষয়ে বলেন, ‘আমরা সরকারি নিয়মেই টোল আদায় করা হচ্ছে। শিডিউল অনুযায়ী প্রতিটি টেম্পো থেকে ৫০ টাকা আদায় করতে পারবো। সেই জায়গায় বাড়ানো হয়েছে মাত্র ১০ টাকা।’

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print