ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

কীভাবে মানিয়ে নেবেন? নতুন সংসার ।

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

নিজের পছন্দের মানুষটিকে বিয়ে করতে পারা একটা স্বপ্নের মত। কিন্তু অনেকেই ভয়ে ভয়ে থাকেন শ্বশুর বাড়ি নিয়ে। কেমন হবে, কি করে মানিয়ে নেবেন। অনেকে এই ভয়ে আবার বিয়ের পরে শ্বশুর-শাশুড়ি ছেড়ে স্বামী নিয়ে আলাদা হয়ে যেতে চান। দেখুন যে মানুষটিকে ভালবাসেন তার পরিবারকে ইগনোর করা কোন স্থায়ী সমাধান নয়, বরং পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে সুন্দর এবং মজবুত সম্পর্ক গড়ে তোলাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

১) আপনাকে আগে এটা বুঝতে হবে যে এটা আপনার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ, আপনার জীবন সঙ্গীর পরিবার। আর তার পরিবার মানেই সেটি আপনার পরিবার, আপনার সংসার – একে সাজিয়ে নিন আপনার মতো করে! যখন এই কনসেপ্ট-টা কারও মাথায় ঢুকে যায় যে এটা আমার পরিবার নয়, অন্য পরিবার, এখানে আমি হুট করেই এসেছি, আমার পরিবারতো আমি ফেলে এসেছি, তখনি শ্বশুরবাড়ির সকলকে প্রতিপক্ষ বলে মনে হতে থাকে।

মনে রাখা দরকার, শ্বশুরবাড়ি কখনই আপনার প্রতিপক্ষ নয়। তাদেরকে নিজের পরিবারের একটা নতুন সংযোজন বলে ভাবুন, দেখবেন যে তা তখন এত অপরিচিত মনে হবে না। আপনার স্বামী এই পরিবারেই বড় হয়েছেন এবং পৃথিবীর সবকিছুর চেয়ে এই পরিবারকে তিনি বেশি ভালবাসেন। আর তার ভালবাসার মানুষেরা-তো আপনারও ভালবাসার মানুষ।

২) ইগো (Ego) পরিহার করুন। সম্পর্কে তিক্ততা আসার পেছনে সবচেয়ে বেশি ভুমিকা রাখে আমাদের ইগো । সবসময় বিনীত থাকুন, ইগো-কে দূরে সরিয়ে রাখুন। যেকোনো খালি স্পেস ভালবাসা দিয়ে পূরণ করা সম্ভব, সময় লাগতে পারে, কিন্তু অসম্ভব নয়।

৩) তুলনা করা যাবে না। ভুলেও কখনো শ্বশুরবাড়ি আর বাবার বাড়ির তুলনা করতে যাবেন না। দুটো পরিবার দুটো ভিন্ন পরিবেশ, এর মধ্যে কখনো তুলনা হয় না। তুলনা করতে গেলে হয়ত এমনও হতে পারে, যে জিনিস আপনি বাবার বাড়িতে পান নি সেটা হয়তো শ্বশুরবাড়িতে এসে পাচ্ছেন। তখন কি বলবেন, যে আগে বাবার বাড়ি ভালো ছিল না? নিশ্চয়ই না? প্রতিটি পরিবারের নিজস্ব কিছু নিয়ম কানুন আছে, ধারা আছে। এগুলোকে সম্মান করুন। এর সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হয়তো একটু সময় লাগবে, কিন্তু “পারবেন না” বা “করব না” এমন মনোভাব থাকলে কিন্তু অশান্তি বাড়বে।

৪) নতুন পরিবারকে ভালোভাবে জানার চেষ্টা করুন। এক্ষেত্রে আপনার স্বামী হতে পারেন, আপনার সবচেয়ে বড় সহযোগী। তার কাছ থেকে পরিবারের সকলের সম্পর্কে জানুন। আত্মীয়-স্বজনদের চিনুন। তাদের সাথে নিজে থেকে গিয়ে আলাপ করুন। অনেক সময় বাড়ির নতুন বউকে নিয়ে একটু আধটু মজা করা হয়, সেটাকে প্রথমেই নেগেটিভ-ভাবে নেবেন না। একটা বিয়ের পরে বাড়িতে একটা উৎসবের পরিবেশ থাকে, তখন এ ধরনের হাসি ঠাট্টা চলতেই থাকে। কোন বিষয়ে অস্বস্তিবোধ করলে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না।

৫) বাড়ির বাচ্চাদের সাথে মিশুন সবার আগে। বড়দের চাইতে বাচ্চাদের সাথে বন্ধুত্ব করা অনেক বেশি সহজ। বাড়িতে বাচ্চা থাকলে তাদের গল্প বলুন, তাদের পছন্দের খাবার তৈরি করে দিন, বা ছবি আঁকায় সাহায্য করুন। অথবা তাদের পড়াশনার ব্যাপারে সাহায্য করুন। এতে করে বাচ্চাদের সাথে আপনার একটা সহজ সম্পর্ক তৈরি হবে, পাশাপাশি বাড়ির বড়রাও আপনার ব্যাপারে ভালো একটা মনোভাব পোষণ করবেন।

৬) বাড়ির বড়দের সম্মান করুন। কথা বলার সময়, খাওয়ার সময় বা যদি আপনি চুপচাপ বসে থাকেন তখনও। বাড়ির বড়দের সামনে মোবাইল ফোন চাপাচাপি করা একেবারে নিষেধ। এটা খুবই বেয়াদবি। খাবার টেবিলে বসলে অন্যদের সাথে পারিবারিক আলোচনা শুনুন, তবে শুরুতেই নিজের মতামত দিতে যাবেন না। পুরো বিষয়টা আগে বুঝুন, তারপরেই মতামত দেবেন। অবসরে শাশুড়ি বা শ্বশুরের সাথে তাদের পুরনো দিনের গল্প শুনুন, যদি মনে করেন সেটাতে তারা আনন্দ পাচ্ছেন, তাহলে সে ব্যাপারে আপনিও উৎসাহ দেখান। শ্বাশুড়িকে মায়ের স্থানে বসান। বউ-শ্বাশুড়ি সম্পর্ক করে তুলুন মধুর…

৭) নতুন বাড়িতে এসেই কেউ আপনাকে পুরো বাড়ির রান্নার দায়িত্ব দেবে না। তাই আপনারই উচিত হবে ছোট ছোট বিষয়ে তাদের সাহায্য করা। রান্নার ব্যাপারেই হোক বা ঘর গোছানোর ক্ষেত্রেই হোক, নিজে থেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।

তবে একটু সতর্কতা হিসেবে যেকোনো কাজের আগে সেটা শাশুড়ি বা ননদকে জিজ্ঞেস করে নিন, যে কাজটা তারা কিভাবে করেন? এটাতে ছোট হওয়ার কিছু নেই। প্রতিটি বাড়িতেই সব কাজের কিছু আলাদা নিয়ম কানুন থাকে। সেগুলো জেনে নিন, দেখবেন আর কোন সমস্যাই হচ্ছে না।

৮) নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। যদি আপনার শ্বশুর-শাশুড়ি বা দেবর-ননদ আপনাদের সাথে না থাকেন, তাহলে প্রতিদিন একবার আপনার শ্বশুর-শাশুড়িকে ফোন করুন, তাদের দিন কেমন কেটেছে জিজ্ঞেস করুন, আপনি সারাদিন কী কী করলেন সেগুলো তাদের বলুন। এতে করে সম্পর্ক অল্পদিনেই সহজ হয়ে যাবে। এছাড়া অন্য সদস্য যেমন দেবর-ননদ তাদের সাথে সপ্তাহে অন্তত দু-তিন বার যোগাযোগ করুন। এতে সম্পর্ক ভালো থাকবে। মজবুত হবে। ননদ-ভাবী সম্পর্ক যেন হয় বোনেদের মত…

৯) সম্পর্কের শুরু সবে…আপনার সঙ্গীর প্রশংসা করুন। দেখুন ভালো দিক, বিরক্তিকর দিক সবারই আছে, আপনার ও আমারও আছে। এখন আপনার সঙ্গীর পরিবারের সদস্যরা কিন্তু আগে থেকেই এসব জানেন। তাদের কাছে নতুন করে এগুলো নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করা বা কমপ্লেইন করা ঠিক হবে না। তাদের সামনে বরং আপনার সঙ্গীর প্রশংসা করুন। এতে তারাও খুশি হবেন। আপনার দাম্পত্য সম্পর্ক হোক মধুর চেয়েও মিষ্টি।

১০) সরাসরি কথা বলুন। কোন সদস্যের সাথে কোন কিছু নিয়ে সমস্যা হলে সেটা আগে ভালভাবে বুঝুন, আদৌ সেটা সিরিয়াস কিনা, যদি মনে করেন সিরিয়াস তাহলে সরাসরি কথা বলুন, তবে সেটা যেন হয় বিনয়ের সাথে, শাশুড়ির সাথে সমস্যা হল, সঙ্গে সঙ্গে মাকে ফোন করে ডেকে এনে তাকে দিয়ে বলানোর চেয়ে আগে নিজে চেষ্টা করুন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিজের চেষ্টাতেই সবচেয়ে ভালো সমাধান আসে। এগুল-ই সুখী দাম্পত্য জীবনের সহজ রহস্য

সব শেষে বলবো, বিয়ের পরে নতুন মানুষ, নতুন সংসার একটু আধটু অসামঞ্জস্য থাকবেই। সেগুলো নেগেটিভ-ভাবে না নিয়ে, তাদের বোঝার চেষ্টা করুন। এই সময়টা আনন্দের, একে অপরকে ভালবাসার। এই সময় আর কখন আবার ফিরে আসবে না। তাই ছোটখাটো বিষয় নিয়ে নিজের মানসিক শান্তি নষ্ট না করে বুদ্ধিমত্তার সাথে এগুলো ডিল করুন। দেখবেন, বছর ঘুরে আসার আগেই এই নতুন পরিবারও আপনার আপন হয়ে গেছে।

ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন।

সর্বশেষ

০৯ নং ওয়ার্ড জাসাস কমিটি অনুমোদিত

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৪৭ বছর ⦿বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print