ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

নির্ধারিত সমায়ে শেষ হচ্ছেনা যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের নির্মাণ কাজ

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

জসীম উদ্দীন, বেনাপোলঃ
বেনাপোল-যশোর মহাসড়কের পুনঃনির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ হচ্ছে না। শতবর্ষী গাছের জীবন-মরণ প্রশ্ন নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান, রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ি নিয়ে ভোগান্তি, মানসম্মত কাজ না হওয়ার মতো অভিযোগের মধ্য দিয়েই চলছে এর নির্মাণ কাজ।
বাংলাদেশ-ভারতের স্থলবাণিজ্যের সিংহভাগই বেনাপোল-পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে হয়ে থাকে। বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিবছর ৬০ হাজার কোটি টাকার পণ্য আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য হয়। এখান থেকে সরকার বছরে সাড়ে পাঁচ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করে। এজন্য যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের গুরুত্ব অনেক বেশি। মহাসড়কের পাশের ৬২০টি শতবর্ষী গাছ এ সড়কের অনবদ্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হয়ে সগৌরবে দাঁড়িয়ে রয়েছে।

বেনাপোল বন্দর থেকে যশোর শহরের দড়াটানা পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটারের এ মহাসড়কটি পুনঃনির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৮ কোটি ৯২ লাখ ৫৫ হাজার টাকা। দুটি প্যাকেজের মাধ্যমে দু’লেনের এ মহাসড়কের প্রস্থ হবে সর্বোচ্চ ৩৪ ফুট। গাছ থাকার কারণে কোথাও কোথাও তা কমবে। গর্ত করে প্রথমে বালি এবং পরে বালি ও খোয়া, পাথর-বালি ও তারপর বিটুমিনাস সারফেসের মাধ্যমে করা হচ্ছে কাজ। বিটুমিনাস সারফেসের পুরত্ব হবে প্রায় পাঁচ ইঞ্চি। অভিযোগ উঠেছে, সড়কটির গদখালী অংশের নির্মাণ কাজে অনিয়ম হচ্ছে।

নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের সমন্বয়কারী মাসুদুজ্জামান মিঠু বলেন, গদখালীতে খোয়া-বালির মিশ্রণ ঠিক নেই। এ রাস্তা টিকবে না। রাস্তা মানসম্মতভাবে করা হচ্ছে না। আমরা বিষয়টি সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছি।

আর নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, এ ধরনের কোনো অভিযোগ আমার জানা নেই। আসলে অভিযোগ করা আমাদের স্বভাবজাত অভ্যাস। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাস্তার কাজে যেসব ম্যাটেরিয়াল ব্যবহার করা হয়, তা ডিডাকশান (রাস্তা খুঁড়ে পুরাতন যেসব সামগ্রি তোলা হয়)। এসব মালামাল সরকারি নিয়মানুযায়ী উপযোগিতা পরীক্ষা করে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়।

যথাসময়ে কাজ শেষ না হওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জানুয়ারি ২০১৭ থেকে ডিসেম্বর ২০১৯ পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ। কিন্তু প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হয়েছেই মার্চ’ ১৭-তে। আর গাছ নিয়ে আদালতের মামলা সংক্রান্ত জটিলতায় কার্যাদেশ দেওয়া হয় সেপ্টেম্বর ’১৮ তে। ফলে কাজের সময় পাওয়া গেছে মাত্র ১৪ মাস। তাছাড়া এর মধ্যে বর্ষা মৌসুম, যানজটের কারণেও নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করা যায়নি। তবে আমরা কাজ শেষ করার জন্য মাত্র ছয় মাস সময় বাড়াব। এরই মধ্যে ৪০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি নির্বাহী প্রকৌশলীর।

.

তিনি আরো জানান, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মহাসড়কের দুইপাশের শতবর্ষী গাছ রেখেই দুই পাশে পাঁচ ফুট করে মোট ১০ ফুট সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। যেখানে গাছ নেই সেখানে রাস্তা হচ্ছে ৩০ ফুট আর যেখানে গাছ আছে, সেখানে রাস্তা থাকছে ২৪ ফুট। এদিকে কাজ চলমান থাকায় আসন্ন ঈদযাত্রায় ভাঙা-চোরা, খোঁড়া রাস্তা দিয়েই চলতে হবে যাত্রীদের। এমনিতেই ঈদের সময় যশোর অঞ্চলের মানুষের ভারতে যাতায়াত বেড়ে যায়। বিশেষ করে চিকিৎসা ও ঈদের ছুটিতে ঘুরতে যাওয়া-আসা মানুষের ভোগান্তি বেশি হয়ে থাকে। আর বৃষ্টিতে কাদামাটি, রৌদ্র হলে ধুলার ভোগান্তি মাথায় নিয়েই সড়কে নামতে হবে যাত্রীদের। রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে যানজটের যন্ত্রণা তো রয়েছেই।

এদিকে এ মহাসড়কের পাশের ৬২০টি শতবর্ষী গাছ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানা গেছে। স্কেভটর যন্ত্র দিয়ে গাছগুলোর গোড়া ঘেসে সাড়ে তিন ফুট গভীর করে মাটি কেটে সড়ক পুনঃনির্মাণ করায় গাছের একপাশের শেকড় কাটা পড়ছে। ফলে গাছগুলো দুর্বল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকার শক্তি অনেকটা হারিয়ে ফেলছে। ঝড়-বৃষ্টিতে এসব গাছ উপড়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান বলেন, মহাসড়কের পাশে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় কয়েকশ’ পুরানো গাছ জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। সড়কটি পুনঃনির্মাণের কাজ চলছে। নির্মাণ কাজের সময়ে সড়কের পাশের অধিকাংশ গাছের শেকড় কাটা পড়েছে। যে কারণে গাছগুলো উপড়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। ইতিমধ্যে চারটি গাছ উপড়ে পড়েছে। মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অবিলম্বে গাছগুলো অপসারণ করে এ মহাসড়কটি ছয় লেন বা আট লেনে উন্নীত করার দাবি জানাচ্ছি।

যশোর রোড উন্নয়ন ও বৃক্ষ রক্ষা সমন্বয় কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, যশোর রোডের ঐতিহ্যবাহী শতবর্ষী গাছগুলো রক্ষার দাবিতে জনগণের আন্দোলনের মুখে উচ্চ আদালত গাছ রেখে সড়ক সংস্কার করার রায় দেন। সরকারও গাছ রেখে সড়কের উন্নয়ন করার পক্ষে রয়েছে। কিন্তু আমরা দেখছি, এ মহাসড়ক পুনঃনির্মাণের নামে খনন যন্ত্র দিয়ে পরিকল্পিতভাবে গাছের শেকড় কেটে দেওয়া হয়েছে। এতে গাছগুলো ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। এজন্য তিনি সওজের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের দায়ী করেন। শতবর্ষী এসব গাছ রক্ষার দাবিতে আবার তারা রাজপথে আন্দোলনে নামবেন বলে ঘোষণা দেন। প্রয়োজনে তারা উচ্চ আদালতের যাবেন বলে জানান।

এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, তিন ফুটের বেশি গভীর করে রাস্তা খনন করে পুনঃনির্মাণ কাজ করা হচ্ছে। এতে হয়তো গাছের কিছু শেকড় কাটা পড়ছে। কিন্তু কিছুই তো আর করার নেই।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print