ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

দেশে দেশে ভিন্ন আয়োজনে পবিত্র শবে কদরের রাত

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

প্রতিবছর রমজানের ২৬ তারিখ দিনগত রাতে পৃথিবীর বহু দেশেপবিত্র শবে কদর পালিত হয়। ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্য ও ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী পালন করা হয় পবিত্র শবে কদর। মুসলমানদের কাছে কদরের রাতের গুরুত্ব অপরিসীম। কোরআন-হাদিসে এই রাতকে অত্যন্ত পুণ্যময় কলা হয়েছে।

কদরের এক রাতের ইবাদতে হাজার রাতের চেয়ে উত্তম বিনিময় পাওয়া যায়। এই রাতে মুমিন বান্দা আল্লাহর কাছে মাগফিরাত, নাজাত ও ক্ষমা পাওয়ার পরম সুযোগ লাভ করেন। লাইলাতুল কদর সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি এ রাত ইবাদতের মাধ্যমে অতিবাহিত করবে, আল্লাহ তার পূর্বর সব গুনাহ-ত্রুটি মাফ করে দেবেন।’ (বুখারি, হাদিস নং: ২০১৪)

শবে কদর উদযাপন উপলক্ষে আমাদের বাংলাদেশে যেমন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে ওয়াজ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের কর্মসূচি নেওয়া হয়, পরের দিন সরকারি ছুটি ঘোষিত হয়, তেমনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে মহা আড়ম্বরতার সঙ্গে পালন করা হয় এই রাত।

.মরোক্কোতে অভিবাবকরা এই রাতে বাচ্চাদের জীবনের প্রথম রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করেন। তাদের জন্য নতুন পোশাক কিনে দিয়ে মেহেদি দ্বারা হাত সজ্জিত করে দেন। ছবি: সংগৃহীত

মরোক্কো
মরোক্কোতে এই রাতে বাচ্চারাই সবচেয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে। অভিবাবকরা এই রাতে বাচ্চাদের জীবনের প্রথম রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করে থাকেন। তাদের জন্য নতুন পোশাক কিনে দেন। মেহেদি দিয়ে তাদের হাত রাঙিয়ে দেন। স্টুডিওতে গিয়ে তাদের ছবি তুলে আনেন।

মরোক্কোতে অভিবাবকরা এই রাতে বাচ্চাদের জীবনের প্রথম রোজা রাখতে উদ্বুদ্ধ করেন। তাদের জন্য নতুন পোশাক কিনে দিয়ে মেহেদি দ্বারা হাত সজ্জিত করে দেন। ছবি: সংগৃহীত

রোজা রাখে না বলে বাচ্চাদের পুরো রমজান পুরো একটি ডিম খেতে দেওয়া হয় না। এই রাতে সর্বপ্র্রথম তাদের পুরো একটি ডিম খেতে দেওয়া হয়। তারা রোজা রেখেছে বলে এটি তাদের প্রতি বিশেষ সম্মানপ্রদর্শন। তাছাড়া বাচ্চাদের প্রথম রোজা রাখার কারণে ‘কুসকুস’ নামে এক ধরনের খাবার তারা রান্না করে মসজিদের দরজায় গরিব-মিসকিনদের খাইয়ে দেওয়া হয়। কুসকুস হচ্ছে উত্তর আফ্রিকার জনপ্রিয় খাবার। সুজির ছোট ছোট সিদ্ধ বল দিয়ে তৈরি করা হয় এই খাবার। সাধারণত তরকারির উপরে এটা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সমগ্র উত্তর আফ্রিকার রন্ধনশৈলীতে কুসকুস উল্লেখযোগ্য আসন দখল করে আছে। মরক্কো, আলজেরিয়া, তিউনিসিয়া, মৌরিতানিয়া ও লিবিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের একটা ক্ষুদ্রাংশ এবং সিসিলির তরাপানিতে কুসকুস খুবই জনপ্রিয়।

এই রাতে ধূপ, পারফিউম, আতর ও পোশাক আশাক ব্যবসা বেশ জমজমাট হয়। মরোক্কোবাসী এই রাতে তাদের মৃত আত্মীয়-স্বজনের কবর জিয়ারত করতে দলবেধে গোরস্থানে যায়। আত্মীয়দের নামে দান-সদকা করা হয়।

আলজেরিয়া
আলজেরিয়াতেও এই রাতকে বাচ্চাদের প্রথম রোজা মনে করা হয়। এই রাতে প্রতি ঘরে ঘরে বিশেষ ধরনের শরবত বানানো হয়। যেসব বাচ্চা নতুন রোজা রেখেছে তাদেরকে তা খাওয়ানো হয়। পানি, মিষ্টি ও ফুলের পানি দিয়ে তৈরি এই বিশেষ শরবতের পাত্রে রেখে দেওয়া হয় একখানা স্বর্ণ বা রুপার রিং। খাবারের বেলায় একেক অঞ্চলে একেক ধরনের অভ্যাস।

.বিভিন্ন কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে যুবক যুবতীদের যৌতুকবিহীন গণবিয়ের আয়োজন ।

এই রাতে আলজেরিয়াতে আরেকটি কাজ খুব গুরুত্বের সঙ্গে হয়ে থাকে। বিভিন্ন কল্যাণ সমিতি বা দাতব্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে যুবক যুবতীদের যৌতুকবিহীন গণবিয়ের আয়োজন করা হয়। দারিদ্রতার কারণে যেসব যুবক-যুবতীর বিয়ের সুযোগ হয় না, তাদের গণবিয়ের ব্যবস্থা করা হয়। বিয়েতে প্রতি বর ও কনের পরিবারের মেহমানসহ উপস্থিত অতিথিতিদের আপ্যায়ন হয়। খাবারের ম্যেনুতে থাকে হরেক রকমের মূল্যবান ও সুস্বাধু খাবার ও কোমল পানীয়। সর্বশেষ পরিবেশন করা হয় মিষ্টি।

বিয়ে শেষে নব-দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয় নানা উপহার সামগ্রী। এছাড়া তাদের পূনর্বাসনের জন্য দেওয়া হয় মূল্যবান বিভিন্ন সামগ্রী। অন্যদিকে যেসব বাচ্চা এ বছর নতুন রোজা রেখেছে তাদেরকে দেওয়া হয় নতুন পোশাক ও মূল্যবান উপহার সামগ্রী।

তিউনিশিয়া
তিউনিশিয়াতেও এই রাতে অনেকে বিয়ে করেন। বিয়ের প্রস্তাবকারী পুরুষ ও নারী এই রাতে এক সঙ্গে বের হন। মার্কেট করেন। স্বর্ণ-গহনা কিনে বিয়ের জন্য প্রস্তুত হন।

. তিউনিশিয়াতে এই রাতে অনেকে বিয়ে করেন। ছবি: সংগৃহীত

তিউনিশিয়ায় এই রাতে বাচ্চাদের খতনা (মুসলমানি) করানো হয় এবং বড় করে অনুষ্ঠান করে সবাইকে দাওয়াত দেওয়া হয়। বাচ্চাদের নুতন পোশাক কিনে দিয়ে তার পকেটে টাকা-পয়সা রেখে দেওয়া হয়। যাতে তারা তা পেয়ে খুশি হয়।

. তিউনিশিয়ায় এই রাতে বাচ্চাদের খতনা করানো হয়। ছবি: সংগৃহীত

তিউনিশিয়ানরাও এই রাতে তাদের মৃত আত্মীয়-স্বজনদের কবর জিয়ারত করে থাকেন। তাদের জন্য ইসালে সাওয়াব করেন।

লিবিয়া
লিবিয়াতে এই রাতে খাবারের বাহারটাই বেশি। গ্রামের মহিলারা এই রাত উপলক্ষে তৈরি করেন “বাজিন” নামক এক বিশেষ খাবার। যা তাদের কাছে খুবেই জনপ্রিয় স্বাস্থ্যসম্মত বলে পরিচিত। আর শহরের মহিলারা রান্না করেন কুসকুস। এটিও তাদের কাছে খুব প্রিয়।

. লিবিয়াতে এই রাতে গ্রামের নারীরা তৈরি করেন ‘বাজিন’ নামক এক বিশেষ খাবার। ছবি: সংগৃহীত

মৌরতানিয়া
মৌরতানিয়ানরা এই রাতে বিভিন্ন রকম ধূপ জ্বালায়। তাদের ঘরগুলোকে আতর দিয়ে সুবাসিত করে। আশ্চর্যের বিষয় হলো, তারা এই রাতে সুই গরম করে বাচ্চাদের হালকা ছেকা দেয়, যাতে বাচ্চাদের (তাদের ধারণা অনুযায়ী) শয়তান ধরতে না পারে।

.মৌরতানিয়াবাসী এই রাতে বিভিন্ন রকম ধূপ জালায়। ছবি: সংগৃহীত

-আল-আরাবি আল-জাদিদ অবলম্বনে

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print