
ঈদের দ্বিতীয় দিন বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকাসহ দেশজুড়ে সড়ক দূর্ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আমাদের জেলা্র‘১ প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।্র‘১
রাজধানীর শেওড়াপাড়া এলাকায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় আতাউর রহমান (৭০) ও রওশন আরা (৬০) নামের এক দম্পতি নিহত হয়েছেন। ভোর সাড়ে ৬টার দিকে শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন নিজ বাসার সামনে এ দুর্ঘটনায় তারা মারা যান।
কাফরুল থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) মেহেরুন নেসা দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, কোরবানির মাংস নিয়ে মোহাম্মদপুরে মেয়ের বাসায় যাওয়ার জন্য বের হন এ বৃদ্ধ দম্পতি। এ সময় দ্রুতগতির প্রাইভেটকার ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
এদিকে, দিনাজপুর প্রতিনিধি জানান, জেলার পল্লীবিদ্যুৎ মোড়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলে দুইজন এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও দুইজেনর মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে এক শিশু ও এক নারী রয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১২ জন যাত্রী। তাৎক্ষণিকভাবে হতাহতের পরিচয় জানা যায়নি।
আহতদের দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। দুপুর আড়াইটার দিকে সদর উপজেলার দিনাজপুর-দশ মাইল মহাসড়কের পল্লীবিদ্যুৎ মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দিনাজপুরের কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেদওয়ানুল রহিম বলেন, দিনাজপুর থেকে ঠাকুরগাঁও যাওয়ার পথে বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে দুর্ঘটনায় পতিত হয়। এতে ঘটনাস্থালে দু’যাত্রী নিহত হয়েছেন।আহত ১৪ জনকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে এক মহিলা ও এক শিশু মারা যায়।
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর মহাসড়কের বড় খোঁচাবাড়ী নামক স্থানে পিকআপ ভ্যান ও বাসের সংঘর্ষে তিনজন প্রাণ হারিয়েছেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে এ দূর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- বীরগঞ্জ রাজবাড়ী এলাকার রমজান আলী (৬০), গাফফার (৬০) ও একই উপজেলার প্রাণনগর এলাকার রোজিনা আক্তার (২২)।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মশিউর রহমান জানান, ঠাকুরগাঁও থেকে ছেড়ে যাওয়া দিনাজপুরগামী একটি গেটলক বাস বড় খোঁচাবাড়ী নামক এলাকায় একটি দ্রুতগামী পিকআপ ভ্যানকে পিছন দিক থেকে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে দুইজন মারা যায়। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসলে রোজিনা আক্তার নামের আরো একজন মারা যান। পিকআপ ভ্যানটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আশা হয়েছে।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সড়ক দুর্ঘটনায় এক উপজাতি নারীসহ ২ জন নিহত হয়েছেন। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের মদনহাট বগুলা বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, গারো সম্প্রদায়ের পলিনা (৩০) ও সমলাল (৪০)।
হাইওয়ে পুলিশের বার আউলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ছালেহ আহমদ পাঠান জানান, কুমিরা থেকে ছেড়ে যাওয়া শহরমুখী ৭নম্বর মিনিবাস সকাল সোয়া ৬টার দিকে শীতলপুর বগুলা বাজার এলাকা দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলছিল।এ সময় হঠাৎ পেছন থেকে একটি ট্রাক সজোরে ধাক্কা দিলে মিনিবাসের যাত্রী পলিনা এবং ওই ট্রাকের হেলপার সমলাল ঘটনাস্থলেই নিহত হন। দুর্ঘটনা কবলিত মিনিবাস ও ট্রাক আটক করেছে পুলিশ।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, রেললাইনে বসে হেডফোনে গান শুনছিলেন শরিফুল ইসলাম (১৮)।এ সময় বুড়িমারীগামী করতোয়া এক্সেপ্রেসে ট্রেনটি হর্ণ বাজালেও তা শুনতে পাননি। অবশেষে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে প্রাণ হারান তিনি। লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার হাজরানীয়া এলাকায় মঙ্গলবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে। বুধবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে পরিবারের লোকজন লাশটি উদ্ধার করে নিজ বাড়ি নিয়ে গেছে।
নিহত শরিফুল উপজেলার মদাতী ইউনিয়নের হাজরানীয়া গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে। তিনি এলাকায় মুদি ব্যবসা করত।
মদাতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের জানান, মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে গরমের কারণে বাড়ির পাশে রেললাইনে হেডফোনে গান শুনছিল শরিফুল ইসলাম। এ সময় লালমনিরহাট থেকে ছেড়ে আসা বুড়িমারীগামী করতোয়া এক্সেপ্রেসে কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় শরিফুল।
ঝালকাঠি প্রতিনিধি জানান, নলছিটি উপজেলার ঢাপড় এলাকায় ঝালকাঠি-বরিশাল আঞ্চলিক সড়কে বাসের ধাক্কায় মেহেদি হাসান (১৩) নামের এক কিশোর নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে তার মা-বাবা ও বোনসহ চারজন।
নলছিটি থানার পরিদর্শক একেএম সুলতান মাহামুদ জানান, পরিবারের চার সদস্যকে নিয়ে ভ্যানচালক জামাল হোসেন ঝালকাঠি শহরে যাচ্ছিলেন। পথে জেআর পরিবহনের একটি বাস পেছন থেকে ভ্যানে ধাক্কা দিলে ছিটকে পড়ে মারা যায় মেহেদি। আহতদের মধ্যে মেহেদির মা মনুজা বেগমকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, ভোরে সিরাজগঞ্জ-নগরবাড়ি মহাসড়কে উল্লাপাড়া উপজেলার সড়ক ও জনপথ অফিসের সামনে মারা যান পুলিশ কনস্টেবল আবু মুসা (৩৫)।
উল্লাপাড়া থানার ওসি দেওয়ান কৌশিক আহম্মেদ জানান, মুসা ঈদের ছুটি শেষে গ্রামের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে সিরাজগঞ্জে কর্মস্থলে ফিরছিলেন। পথে বিপরীতমুখী একটি গাড়ি তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দিলে গুরুতর আহত হন তিনি। স্থানীয়রা উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। পাবনার সাঁথিয়ার আফরা গ্রামের আকুল হোসেন প্রামাণিকের ছেলে মুসা সদর থানায় পুলিশের পিকআপভ্যান চালাতেন।