
চট্টগ্রাম মহানগরীর বন্দর থানার গোসাইল ডাঙ্গা এলাকায় মাকে জবাই করে হত্যা করেছে আপন ছেলে। পরে সে ছেলে নিজের গলায় বটি চালিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। আজ শনিবার দুপুরে গোসাইল ডাঙ্গার বারিক বিল্ডিং মোড় এলাকায় ‘সরকারি বিল্ডিং’ নামের ভবনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মায়ের নাম কুমকুম চৌধুরীকে (৫৫)। তিনি আয়কর আইনজীবী সুখময় চৌধুরীর স্ত্রী।
আত্মহত্যার চেস্টাকারী গুরুতর আহত ছেলে সুমির চৌধুরীকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম এ খবর নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে ছেলে সুমিত চৌধুরী তার মাকে বটি দিয়ে জবাই করে হত্যার পর সে বটি দিয়ে নিজের গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়েছে।
ঘটনার পরপরই অামি ঘটনাস্থলে পুলিশ নিয়ে এসেছি। সিআইড়ি’র একটি টিমও ঘটনাস্থলে রয়েছে। আমরা তদন্ত করে দেখছি। কি করণে এ ঘটনা ঘটেছে।
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় তাদের পৈতৃক বাড়ি। নগরের ওই ভবনের তৃতীয় তলায় তার স্ত্রী কুমকুম চৌধুরী (৪৫), বড় ছেলে সোমনাথ চৌধুরী (২৪) এবং ছোট ছেলে সৌমিত চৌধুরী বসবাস করতেন। স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে স্ত্রী কুমকুম চৌধুরী নয় মাস ধরে অসুস্থ ছিলেন। সৌমিত এবার ব্যারিস্টার সুলতান আহমেদ ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে তিন বিষয়ে অকৃতকার্য হন। পরে ফলাফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন করেন তিনি। পুনর্নিরীক্ষণে এক বিষয়ে পাস দেখালেও অপর দুটি বিষয়ে অকৃতকার্যই দেখানো হয়। এ নিয়ে আজ বড় ভাই তাকে বকাঝকা করেন। এটাকে কেন্দ্র করে হত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আহত সুমিতকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বড় ছেলে হাজী মুহাম্মদ মোহসিন কলেজে বিবিএ প্রথম বর্ষে পড়াশোনা করছেন।
বড় ভাই সোমনাথ চৌধুরী জানান, অকৃতকার্য হওয়ায় ভাইকে বকাঝকা করে তিনি বেলা ১১টায় কলেজে চলে যান। এরপর মায়ের সঙ্গে ছোট ভাইয়ের কী হয়েছে তা তিনি জানেন না। বেলা একটায় বাসায় ফিরে কয়েকবার কলবেল বাজানোর পর সৌমিত নিজে এসে দরজা খুলে দিয়ে সেখানেই পড়ে যান। তখন তিনি দেখতে পান সৌমিতের সারা গা রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এরপর তিনি ছুটে মায়ের কক্ষে এসে দেখেন মা বিছানায় রক্তাক্ত মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন।
সিএমপির পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (বন্দর) জয়নুল আবেদীন বলেন, সৌমিত তার মাকে দা দিয়ে কুপিয়ে গলা কেটে ফেলে। এরপর সে নিজেও একই দা দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। আহত সৌমিতকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নেওয়ার সময় তিনি মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।