ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার চার লাখ মানুষ পানিবন্দি

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

টানা ছয় দিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে সৃষ্ট বন্যায় বির্পযস্ত হয়ে পড়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ার উপজেলার মানুষ। দীর্ঘস্থায়ী বন্যার কারণে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে দুই উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষ।

স্থানীয়দের মতে, এবারের বন্যা স্মারণাতীতকালের সবচেয়ে ভয়াবহ। ফলে স্থানীয়দের ক্ষেতের ফসল, গোলার ধান, মৎস খামার, পশু ও বসত বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে গবাদি পশুর। হাজারো মানুষ আশ্রয়হীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।

গত শনিবার থেকে হাজারও মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বের হন। এর আগে গত ৮ জুলাই থেকে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়। পরে ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় দিন দিন অবনতি হয় বন্যা পরিস্থিতির। তবে সোমবার সকাল থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে।

উপজেলার কেওচিয়া, ঢেমশা, বাজালিয়া পুরানগড়, ছদাহা, পশ্চিম ডেমশা, কাঞ্চনা, মাদার্শা, সোনাকানিয়া, নলুয়া, আমিলাইশ, চরতী, কালিয়াইশ, ধর্মপুর ও সাতকানিয়া পৌরসভার অন্তত তিন লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া, চুনতি, আমিরাবাদসহ আশাপাশের বিভিন্ন ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম ভোগান্তিতে দিনাতিপাত করছে।

.

নলুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মারজানা সুলতানা বলেন, হঠাৎ এতো বড় বন্যা আগে কখনো দেখিনি। এবারের বন্যা ১৯৯৭ সালের বন্যাকেও হার মানিয়েছে। ওই সময় আমাদের বাড়ি পুরো এলাকার মানুষের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়েছিল। কিন্তু এবারের বন্যায় আমাদের বাড়িতেও কোমর পানি। এ অবস্থায় অবর্ণনীয় দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। পুরো এলাকার অধিকাংশ বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। প্রতিটি পরিবার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট। কয়েকদিন ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় রাত হলেই সৃষ্টি হয় ভুতুড়ে পরিবেশের। শুধু মারজানা সুলতানা নয়, প্রায় একই বক্তব্য চরতির মুন্নি আক্তার, আমিলাইশের আহমদ কবিরসহ আরও অনেকের।

স্থানীয়দের অভিযোগ, বন্যাপীড়িত এলাকায় নেই পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যে পরিমাণ ত্রাণ বিতরণ করছে তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই অপ্রতুল। ফলে সংকট আরও বেড়ে চলেছে। এজন্য প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিত বলে মন্তব্য স্থানীয়দের।
আমিলাইশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এইচএম হানিফ জানান, সাতকানিয়া এলাকার বেশিরভাগ অঞ্চলের মানুষের দুঃখ সাঙ্গু নদী। যেই নদী দিয়ে বৃহত্তর বান্দরবানের পানি বঙ্গোপসাগরে পড়ে।

.

এছাড়া চকরিয়া, লোহাগাড়া ও সাতকানিয়ার একটি বড় অংশের পানি ডলু খাল হয়ে পড়ে সেই সাঙ্গুতে। ফলে প্রতিবছর বর্ষায় একটু ভারী বৃষ্টি হলেই সাঙ্গু নদীর পানি দুই কোলে উপচে পড়ে। প্লাবিত হয় হাজার হাজার বাড়ি-ঘর। তবে এবারে ডলু খালের পাড়ের ভাঙ্গনের কারণে সেই পানি আরো বেশি ফুলে উঠেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে সাতকানিয়ার বেশির ভাগ এলাকার মানুষ পানি বন্দী। আমরা স্থানীয় জন প্রতিনিধিরা নিজেদের সাধ্যমত বন্যা দুর্গতদের সহযোগিতা করে যাচ্ছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কিছুটা সহযোগিত আসছে। তবে মানুষের ক্ষয়-ক্ষতির তুলনায় এই সহযোগিতা খুবই অপ্রতুল।

সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মোবারক হোসেন জানান, সাতকানিয়ার সবকটি ইউনিয়নের বন্যা পরিস্থিতি অনেক নাজুক। বিশেষ করে শঙ্খ নদ আর ডলু নদীর পানি বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পড়ছে। এর ফলে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। বাজালিয়া মীরেরপাড়া এলাকায় শঙ্খ নদের ভাঙনের কারণে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে খুব দ্রুত ও ব্যাপকভাবে।

জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বন্যাপীড়িত এলাকায় পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রি সরবরাহ করা হয়েছে। তবে বিভিন্ন ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় দুর্গত মানুষের কাছে যথাসময়ে ত্রাণ পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না। বৃষ্টি না হলে আশা করছি দু-এক দিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print