নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ
‘পদ্মা সেতুতে মাথা নিয়ে গুজব’। এ গুজবকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্নস্থানে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে, নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলার জনসাধারণকে মাথা নিয়ে গুজব,ছেলেধরা আতঙ্ক ও গণপিটুনি প্রতিরোধে সচেতন করতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজারসহ পাড়া মহল্লায় নোয়াখালী পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে চলছে সভা, সমাবেশ ও মাইকিং। অভিযোগ, রয়েছে যদিও সরকার এসব রোধে ধীরে পদক্ষেপ নিয়েছে?
এছাড়াও পুলিশ প্রশাসনের উদ্যোগে জেলার প্রতিটি থানায় পৃথকভাবে মাইকিং, পুলিশের টহল জোরদার, বিদ্যালয়ের সামনে পাহারা জোরদার, সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতা সভা করা হচ্ছে।
এ সব সভায় সন্দেহজনক কোন ব্যক্তিকে অথবা গুজবের ভিত্তিতে কোনো নিরীহ মানুষকে হত্যা করার বিরুদ্ধে কঠোর হুশিয়ারি করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে হতাহত হওয়ার পর নোয়াখালীতে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি ঠেকাতে পুলিশ প্রশাসন মাঠে নেমেছে।
বিভিন্ন স্থানে মাইকিং করে বলা হচ্ছে, একটি স্বাথান্বেষী মহল গুজব ছড়িয়ে নিরীহ মানুষ পিটিয়ে হতাহত করেছে। এধরনের ঘটনা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত যে কোনো ধরনের গুজব ছড়ানো ও আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া দেশের প্রচলিত আইনের পরিপস্থি এবং গুরুতর দন্ডনীয় অপরাধ। কোনো বিষয়ে কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে নিজের হাতে আইন তুলে না নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে এবং আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে নোয়াখালীতে ছেলে ধরা আতংক ও গুজব ঠেকাতে মাঠে নেমেছে পুলিশ প্রশাসন।
এছাড়াও পুলিশের টহল জোরদার, বিদ্যালয়ের সামনে পুলিশি নজরদারি জোরদার, সরকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অভিভাবকদের নিয়ে সচেতনতা সভা করা হচ্ছে।
এরই অংশ হিসেবে ২৪ জুলাই, বুধবার দুপুর ১টার দিকে জেলার চাটখিল উপজেলার ডাক বাংলো কমিউিটি সেন্টারে সচেতনতামূলক বিশেষ দিক-নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো .আলমগীর হোসেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন- দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্ট করতে একটি কুচক্রী মহল গুজব রটাচ্ছে। যারা গুজব রটিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগতভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে নোয়াখালী পুলিশ সুপার মো. আলমগীর হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, জেলার ৯টি উপজেলার পুলিশ মাথা নিয়ে গুজব,ছেলেধরা আতঙ্ক ও গণপিটুনি প্রতিরোধে খুবই আন্তরিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ যে কোনো মাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকারীর বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান করেন।
এ ছাড়া বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) নোয়াখালী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে মাথা নিয়ে গুজব,ছেলেধরা আতঙ্ক ও গণপিটুনি প্রতিরোধে নোয়াখালীর প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন পুলিশ সুপার।
অপরদিকে আরো জানা যায়, ছেলে ধরা গুজব ও গণপিটুনি প্রতিরোধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বৃহস্পতিবার(২৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে বারোটায় কোম্পানীগঞ্জের চরফকিরা ইউনিয়নের কবি জসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন, নোয়াখালী জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের জনি।
তিনি এলাকায় সন্দেহজনক কিংবা অপরিচিত কাউকে দেখলে গণপিটুনি না দিয়ে পুলিশকে জানানোর জন্য আহ্বান জানান।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, কোম্পানীগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আসাদুজ্জামান আসাদ, চরফকিরা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন লিটন, কবি জসিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম, প্রেসক্লাব কোম্পানীগঞ্জের সভাপতি হাসান ইমাম রাসেল, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন রনি।
