
ঢাকার পর বন্দরনগরী চট্টগ্রামেও ডেঙ্গুর প্রার্দুভাব বেড়েছে। আতঙ্ক ছড়াচ্ছে সর্বত্র। ১৫ দিনে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়ে চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সিভিল সার্জন অফিসেরে হিসেব মতে, প্রতিদিন গড়ে পাঁচজন করে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে নগরীর সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
গত ২৪ দিনে (২৫ জুলাই পর্যন্ত) চট্টগ্রামে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ৪২ জন রোগী শনাক্ত করেছে সিভিল সার্জন অফিস। তার মধ্যে দুই তৃতীয়ংশ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরলেও বাকীরা এখনো চিকিৎসাধীন আছে।

সর্বশেষ গত ৩দিনে চট্টগ্রামে ১২জন নতুন রোগী শনাক্ত করেছে সিভিল সার্জন কার্যালয়।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকী জানান, সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) মোট ৭জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীকে শনাক্ত করা হয়।
এর মধ্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ জন ও বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ২ জন ভর্তি আছেন।
তিনি জানান, এ পর্যন্ত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৭ জন। আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে চারজন, বেসরকারি মেট্রোপলিটন হাসপাতালে চারজন ম্যাক্স হাসপাতালে ২ জন এবং মেডিকেল সেন্টার, সিএসসিআর ও রয়েল হাসপাতালে একজন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। ৪১ জন রোগীর মধ্যে ১৭ জন ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।

চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, জুলাই মাসের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল মাত্র আটজন। বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িছে ৩৯ জনে। এর মধ্যে গত ছয়দিনেই (২০ থেকে ২৫ জুলাই) চট্টগ্রামে ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৩১জন। আর গত ছয়মাসে এ সংখ্যা ছিল মাত্র তিনজনের। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত ৪২জন ডেঙ্গু রোগীকে শনাক্ত করা হয়েছে। এর বাইরেও চট্টগ্রাম জেলা ও নগরীর অনেক প্রাইভেট ক্লিনিক এবং ডাক্তারের চেম্বারে রোগীরা চিকিৎসা নিলেও সে হিসেব নেই সিভিল সার্জন কার্যালয়ে। তবে চট্টগ্রামে দিনদিন ডেঙ্গু রোগীর প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে মরণব্যাধি এ রোগের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আতংক দেখা দিয়েছে সবার মাঝে। যদিও আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ চিকিৎসকদের। চিকিৎসকরা বলছেন, ঢাকার মতো এখনো রূপ ধারণ করেনি। বরং চট্টগ্রামে যারা আক্রান্ত হচ্ছে তা নরমাল ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। তবুও সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
জানাগেছে, এর আগে ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম মহানগরীতে ১৭৭ জন, ২০১৭ সালে ৬৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন সচেতনতামূলক ক্র্যাশ প্রোগ্রাম শুরু করেছে। লিফলেট বিতরণের পাশাপাশি পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। ওয়ার্ড পর্যায়ে কাউন্সিলরদের নিয়ে উদ্বুদ্ধকরণ সভাও হচ্ছে।

ক্র্যাশ প্রোগ্রামের আওতায় নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডের ড্রেনগুলোতে ২৫ হাজার লিটার এডাল্টিসাইড, দশ হাজার লিটার লার্ভিসাইড ছিটানো হচ্ছে। এ কাজে ১৬১ জন কর্মী কাজ করছে। এছাড়া ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি’।
এদিকে চট্টগ্রামের ১৫টি উপজেলায় তদারকির জন্য সিভিল সার্জন কার্যালয়ের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ডেঙ্গু নিয়ে বিশেষ সতর্কতার নির্দেশ দেয়া হয়েছে নগরীর ৯টি আরবান ডিসপেনসারিতে।