ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

সৌদি তেল স্থাপনায় হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে আরেকটি যুদ্ধ আসন্ন?

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

হাউসি বিদ্রোহীরা দাবি করছে এই হামলা তারা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি এর পেছনে আছে ইরান। আর ইরান এর সঙ্গে তাদের কোন সম্পর্কের কথা জোর গলায় অস্বীকার করছে। সৌদি আরবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তেল স্থাপনার ওপর নাটকীয় হামলার পর তীব্র বাকযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। সৌদি আরবের এই তেলস্থাপনাগুলো গোটা বিশ্বের তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে খু্বই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু এগুলো যে কতটা নাজুক অবস্থায় আছে, এই হামলা সেটা স্পষ্ট করে দিয়েছে।

ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যে বিমান হামলা চালাচ্ছে সৌদি আরব, তাতে যুক্তরাষ্ট্রের মদত আছে। সৌদি আরবের এসব বিমান সরবরাহ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। বহু দিন ধরে সৌদি আরব হাউসি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু প্রতিপক্ষও যে পাল্টা হামলার ক্ষমতা রাখে, সৌদি তেল স্থাপনার ওপর এই আঘাত তারই প্রমাণ।

তবে এই ঘটনা সেই পুরোনো বিতর্ককে আবার উস্কে দিয়েছে- হাউসি বিদ্রোহীদের ইরান কী পরিমাণ সামরিক এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে? মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি এমনিতেই অস্থিতিশীল। সেখানে এই সর্বশেষ ঘটনা যেন পুরো অঞ্চলের পরিস্থিতি আরও অগ্নিগর্ভ করে তুলেছে। কিন্তু এই হামলা একই সঙ্গে ইরানের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি এবং কৌশলের ব্যর্থতাও ফুটিয়ে তুলেছে।

সৌদি তেল স্থাপনায় হামলার ব্যাপারে নানা দাবি এবং পাল্টা দাবির মধ্যে অনেক তথ্য এখনো অজানা। হাউসি বিদ্রোহীরা সৌদি আরবের বিভিন্ন টার্গেটে আগেও ড্রোন এবং মিসাইল হামলা চালিয়েছে। কিন্তু ড্রোন হামলা থেকে তারা খুব সীমিত সাফল্যই পেয়েছে।

তবে এবারের যে হামলা সেটা এমন মাত্রার যে তার সঙ্গে আগেরগুলোর কোন তুলনাই চলে না। বহুদূর থেকে যেরকম ব্যাপক মাত্রায় যে ধরণের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা করা হয়েছে, তার নজির নেই।

মিসাইল না ড্রোন

এই হামলার ব্যাপারে আরেকটি প্রশ্নের উত্তর অমীমাংসিত। হামলায় কি ‘আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকেল’ (ইউএভি) ব্যবহার করা হয়েছে, নাকি নতুন কোন ধরণের মিসাইল। যদি মিসাইল ব্যবহার করা হয়ে থাকে, সৌদি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেন তার সংকেত পেল না?

আরেকটি প্রশ্ন হচ্ছে হামলার পেছনে ইরাকের কোন ইরানপন্থী মিলিশিয়া গোষ্ঠী ছিল, নাকি স্বয়ং ইরানই জড়িত?

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও কিন্তু কোন সময় নষ্ট না করে সরাসরি তেহরানের দিকে আঙ্গুল তুলছেন এই ঘটনার জন্য। ঘটনার ব্যাপারে কোন গোয়েন্দা তথ্যের জন্য পর্যন্ত তিনি অপেক্ষা করেননি। কয়েকঘণ্টা পর অবশ্য মার্কিন সূত্রগুলো দাবি করতে থাকে মোট ১৭টি স্থানে এই ড্রোন হামলা হয় এবং প্রতিটি ক্ষেত্রেই এসব হামলা হয়েছে উত্তর বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে। যুক্তরাষ্ট্র বলতে চাইছে এই হামলা হয়েছে ইরান বা ইরাকের দিক থেকে, দক্ষিণের ইয়েমেন থেকে নয়।

যুক্তরাষ্ট্র বলছে তারা এই হামলার ব্যাপারে আরো বিস্তারিত তথ্য জানাবে। হামলায় ব্যবহৃত যেসব ড্রোন টার্গেট পর্যন্ত যেতে পারেনি, সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে।

কোন দিক থেকে হামলা

২০০৮ সালে জাতিসঙ্ঘের এক বিশেষজ্ঞ প্যানেল বলেছিল, হাউসি বিদ্রোহীদের কাসেফ-ওয়ান ড্রোনের সঙ্গে ইরানের আবাবিল-টি ড্রোনের ব্যাপক সাদৃশ্য আছে। জাতিসঙ্ঘের দলটি তাদের রিপোর্টে বলেছিল, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে যে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি আছে, ইরান সেটি ভঙ্গ করেছে এবং হাউসি বিদ্রোহীদের নানা রকম অস্ত্র সরবরাহ করেছে।

কাসেফ-ওয়ান কিংবা আবাবিল-টি ড্রোন বড়জোর ১০০ বা ১৫০ কিলোমিটার দূরত্বে যেতে পারে। ইয়েমেনের সীমান্ত থেকে খুরাইস তেল ক্ষেত্রের দূরত্ব প্রায় ৭৭০ কিলোমিটার। যেসব টার্গেটে হামলা হয়েছে, তার মধ্যে এই তেলক্ষেত্রই ইয়েমেনের সবচেয়ে কাছে।

কাজেই ইয়েমেনের দিক থেকে যদি এই হামলা হয়ে থাকে, তাহলে এবারের ড্রোনগুলো নিশ্চিতভাবেই একেবারে ভিন্ন ডিজাইনের, যেগুলো অনেক বেশি দূরত্ব পাড়ি দিতে পারে এবং অনেক বেশি নির্ভরযোগ্য। ইরান এবং সম্ভবত হাউসি বিদ্রোহীদেরও হয়তো আরও দূরপাল্লার ড্রোন আছে। কিন্তু এপর্যন্ত ইয়েমেনের যুদ্ধে সেধরণের ড্রোনের ব্যবহার দেখা যায়নি।

আরেকটা জল্পনা হচ্ছে, হামলায় হয়তো ক্রুজ মিসাইলও ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে। হয়তো ইরাক বা ইরান থেকে এই ক্ষেপনাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে। কিন্তু এই দাবির পক্ষে নির্ভরযোগ্য গোয়েন্দা তথ্যের দরকার হবে।

সর্বাত্মক যুদ্ধের ঝুঁকি কতটা

কিন্তু শেষ বিচারে এসব খুঁটি-নাটি তথ্যের কোন মানে দাঁড়ায় না। কারণ কূটনৈতিক ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরব ইরানের নির্মম শত্রু। ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে মনস্থির করে ফেলেছে। পারস্য উপসাগরে বিভিন্ন জাহাজে হামলার জন্য তারা ইরানকেই দোষী করছে। ইরান তাদের একটি তেলবাহী জাহাজ জিব্রালটারে আটক হওয়ার পর পাল্টা একটি ব্রিটিশ জাহাজ জব্দ করে।

ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, সৌদি আরবের তেল স্থাপনার বিরুদ্ধে হাউসি বিদ্রোহীদের যত হামলা, তার সবকটিতে ইরানের হাতের ছাপ স্পষ্ট। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এ ব্যাপারে তারা কী করবে বা কী করার ক্ষমতা রাখে? এর উত্তর হচ্ছে, সম্ভবত খুব বেশি কিছু করার ক্ষমতা নেই।

ইয়েমেনের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এমনিতেই শক্তভাবে সৌদি আরবের পক্ষে। কিন্তু এই যুদ্ধের ব্যাপারে মার্কিন কংগ্রেসে অতটা উৎসাহ নেই। কংগ্রেসে এমন মত প্রবল হচ্ছে যে, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে এই সৌদি বিমান হামলার কোন মানে নেই। একটা গরীব দেশের ওপর এই হামলা এক বড় মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে।

ট্রাম্প প্রশাসন যদিও সৌদি আরবের পক্ষে ব্যাপক সমর্থন জোগাচ্ছে এবং ইরানের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের কথা বলছে, বাস্তবে তেহরানের কাছে তারা কিন্তু নানা ধরণের বার্তা দিচ্ছে।

একদিকে মনে হচ্ছে ট্রাম্প যেন ইরানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে একটা মুখোমুখি বৈঠকে বসতে চান। তিনি মাত্রই তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনকে বরখাস্ত করেছেন। জন বোল্টন হচ্ছেন সেরকম একজন কট্টরপন্থী, যিনি কিনা যে কোন পন্থায় ইরানের রাষ্ট্রক্ষমতায় পালাবদলের পক্ষে।

ইরান এবং হাউসি বিদ্রোহীরা যুদ্ধে যে ধরণের কৌশল নিয়েছে, সেটা শক্তিমানের বিরুদ্ধে দুর্বলের লড়াইয়ের চিরাচরিত কৌশল। বেশিরভাগ কৌশল যেন রুশদের কাছ থেকে ধার করা- যে কোন কিছু অস্বীকার করা, ছায়াযুদ্ধ, সাইবার হামলা এবং প্রপাগান্ডা যুদ্ধ।

তেহরান ভালো করেই জানে, ট্রাম্প মুখে যত কথাই বলুন, আসলে তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে নতুন কোন যুদ্ধে জড়াতে চান না, বরং যুদ্ধ থেকে বের করে আনতে চান। এর ফলে ইরানই বরং এখন পাল্টা সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছে।

কিন্তু যে কোন মুহূর্তে যে কারও একটা ভুল হিসেবের কারণে একটা সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ার আশংকা আছে, যেটা আসলে কেউই চায় না। সূত্র : বিবিসি।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print