ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

ক্যাসিনো কি ? ক্যাসিনোর ইতিহাস, ক্যাসিনোতে কি হয় ?

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

গত কয়েকদিন ধরে সংবাদডত্র এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি শব্দ বেশ আলোচিত হচ্ছে। গতকাল বুধবার রাজধানীতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পর এ শব্দ নিয়ে আরওে বেশী কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে শব্দটি হচ্ছে (Casino) “ক্যাসিনো”।  অনেকের কাছে শব্দটি নতুন বলে মনে হচ্ছে। অনেকে এই ক্যাসিনোর অর্থ জানতে চেয়েছে।

তাই ক্যাসিনো কি ? ক্যাসিনোর ইতিহাস , ক্যাসিনোতে কি হয় ? কারা ক্যাসিনোতে যায় ? প্রিয় পাঠক, এমন সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা আজকের এ লেখায়। আর কথা না বাড়িয়ে চলুন জেনে নেওয়া যাক ক্যাসিনো সম্পর্কে বিস্তারিত।

.

ক্যাসিনো কি ?
জুয়ার নাম শুনে থাকবেন নিশ্চয়ই। আর ক্যাসিনো হচ্ছে জুয়া খেলার নির্দিষ্ট আসর; সাধারনত নামি হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিং মল, দর্শনীয় স্থানের সাথে বা কাছেই এর অবস্থান থাকে; অনেক ক্যাসিনোতে আবার লাইভ রিয়েলিটি শো, কমোডি শো এর ব্যবস্থা থাকেই; সাথে এক্সটিক ( ভাড়া পাওয়া যায় এমন মেয়ে/ছেলে ) সার্ভিসও থাকে। ক্যাসিনো তে সুন্দরি মডেল কিংবা পার্টি গার্ল জুয়া খেলোয়াড়িদের উৎসাহ দিয়ে থাকে।

ক্যাসিনো অর্থ সরকার নিয়ন্ত্রিত জুয়া খেলার আসর। ক্যাসিনো স্থাপিত হওয়ার পেছনে একটা গুরুত্বপূর্ণ কারণ আছে। আগে ভারতীয় উপমহাদেশে জুয়া খেলা হতো অনিয়ন্ত্রিতভাবে, যেখানে-সেখানে। সরকারিভাবে ক্যাসিনো স্থাপন করা হয় কেবল এই অনিয়ন্ত্রিত জুয়াকে একটি নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যে নিয়ে আসার জন্য। এটি স্থাপনের আরও একটি কারণ ছিল জুয়া থেকে সরকারি লভ্যাংশ ও শুল্ক নিশ্চিত করা।

প্রায় দুই হাজার বছর আগে ভারতে ক্যাসিনো স্থাপিত হয়। তবে এ বিষয়ে কোনো নির্দিষ্ট তারিখ ও স্থানের হদিস এখনো পাননি ইতিহাসবিদেরা। তবে কাউতিলিয়া নামের একজন প্রাচীন ভারতীয় অর্থশাস্ত্রবিদের লেখায় উঠে এসেছে জুয়ার স্থান হিসেবে ক্যাসিনো স্থাপনের কিছু কারণ।

কাউতিলিয়া তাঁর অর্থশাস্ত্র পুস্তকে ভারতীয় উপমহাদেশে ক্যাসিনো স্থাপনের কয়েকটি কারণ তুলে ধরেছেন। এগুলোর মধ্যে আছে জুয়াকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসা। জুয়া খেলায় ‘সাম্যতা’ নিশ্চিত করা সর্বোপরি এই খেলা থেকে সরকারি শুল্ক প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।

.

ক্যাসিনোর ইতিহাসঃ
এখন পর্যন্ত ক্যাসিনো সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস জানা সম্ভব হয় নি; কারন আপনি যদি ইতিহাস পড়েন তবে দেখবেন পৃথিবীর প্রথম থেকেই বাজি বা জুয়া খেলার প্রচলন দেখা যায়। সকল দেশেই এর প্রচলন আছে।

ইউরোপের ইতিহাসে ক্যাসিনোঃ
তবে ইউরোপের ইতিহাসে ইতালিতে সর্বপ্রথম ১৬৩৮ সালে ভেইনস শহরে রীডোট্ট নামে এক ক্যাসিনো তৈরি করা হয়েছিলো বলে জানা যায়; ওই সময়কার জ্ঞানী লোকদের পরামর্শে এটি তৈরি করা হয়; আর এর উদ্দেশ্য ছিলো কার্নিভাল সিজনে সচারাচার হওয়া জুয়াকে নিয়ন্ত্রন করা; তবে সামাজিক অবক্ষয়ের কথা ভেবে ১৭৭৪ সালে সেই শহরের প্রধান এটিকে বন্ধ করে দেয়। [সুত্র – উইকিপিডিয়া ]

আমেরিকার ইতিহাসে ক্যাসিনোঃ

জানা যায় আমেরিকার সর্বপ্রথম ক্যাসিনোর নাম স্যালুন্স; তবে এটি তৈরি করা হয়েছিল পর্যটকদের জন্য। এখানে তারা জুয়ার সাথে সাথে আড্ডা দেওয়া, ড্রিংকস করার সুযোগ পেত; খুবই অল্প সময়ের মধ্যে এটি স্যান ফ্রান্সিকো, নিউ অরলিন্স, সেন্ট লুইস, শিকাগো শহরে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে; ২০ শতকের দিকে ক্যাসিনো আমেরিকায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৩১ সালে আমেরিকার নেভাদা রাজ্যে সর্বপ্রথম সরকার অনুমোদিত ক্যাসিনো গড়ে ওঠে। বর্তমানে আটলান্টিক সিটি আমেরিকা দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্যাসিনো শহর। [সুত্র – উইকিপিডিয়া ]

.

বাংলাদেশের ইতিহাসে ক্যাসিনো
বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ আর ইসলামে জুয়া সম্পূর্ণ হারাম ও নিষিদ্ধ। তবে জুয়া বাংলাদেশের একটি অতিপরিচিত শব্দ অলিতে গলিতে চোখ মেলে তাকালেই এর দেখা মিলে; তবে বেশ কয়েক বছর আগে এটা এতোটা খোলামেলা ছিলো না; কিন্তু সাম্প্রতিক ( ২০১৯ সালে ) সময়ে গুঞ্জন আসে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আনুষ্ঠানিক ক্যাসিনো এর খোঁজ পাওয়া যায়; বিষয়টি জানতে পেরে তৎকালীন সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং তিনি এদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়।

সর্বপ্রথম ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে র‍্যাব-১ এর অভিযানে ঢাকার ফকিরাপুলে ইয়ংমেন্স ক্লাব, শাহজাহানপুরের মুক্তিযোদ্ধা চিত্তবিনোদন ক্লাব, ওয়ান্ডারার্স ক্লাব ও বনানীতে কয়েকটি ক্যাসিনোর সন্ধান পাওয়া যায়। র‍্যাব-১ এর সুত্র মতে এগুলোর পরিচালনা করেন তৎকালীন রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের কিছু নেতা। ওই সময়ে বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়।

র‍্যাবের মতে বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৫০ টিরও বেশি ক্যাসিনো রয়েছে ; যেখানে জুয়ার পাশাপাশি নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। ( ২০১৯ )

ক্যাসিনোতে কারা যায় ?
এ কথা আর বেশি বিশ্লেষণ করার দরকার হয় না যে কারা ক্যাসিনোতে যায়; ধনী বা টাকাওয়ালারাই এর মুল গ্রাহক। বিশেষ করে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী গ্রাহক বেশি হয়ে থাকে।

বিশেষ করে উন্নত দেশে এখানে যাওয়ার জন্য কোন বাধা নিষেধ থাকে না; এগুলো সরকার অনুমোদিত হয়ে থাকেন। আর সেখানে প্রায় সকল বারের সাথেই ছোট-খাটো ক্যাসিনো থাকে।

শপিং শেষে একটু রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য কিংবা, সময় কাটাতে অনেকেই ক্যাসিনোতে যায়; কিন্তু এটা ভয়ংকর হচ্ছে তাদের জন্য যারা নিয়মিত সেখানে যান এবং নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। নিয়মিত ভরা পকেট নিয়ে ক্যাসিনোতে গিয়ে খালি পকেটে বাসায় ফেরা লোকজন হচ্ছে আসল জুয়াড়ি।

কিভাবে সম্পন্ন হয় ?
ক্যাসিনোতে গ্রাহকরা তাদের পছন্দমতো ভিবিন্ন খেলার সুযোগ পায়; তবে যে যেই বিষয়ে পারদর্শী হয় সে সেটি খেলার চেষ্টা করে থাকে। বিশেষ করে ব্ল্যাকজ্যাক, ভিডিও পকার, ব্রাক্যারেট, ক্রাপ, রুলেট খেলে থাকেন।

এখানে কিছু কিছু খেলায় গানিতিকভাবে খেলয়ারের পক্ষে কিছু যুক্তি দেখায় যে তার জেতার সম্ভাবনা আছে; আর এটি খেলোয়াড়কে বেশি সময় ধরে রাখে। কারন সে ধরে নেয় তার জেতার সম্ভাবনা এখনো শেষ হয়ে যায় নি।

কিছু কিছু খেলায় গ্রাহকরা সরাসরি একে অপরের বিপক্ষে বাজি খেলার সুযোগ পায় এবং ক্যাসিনো হাউজ এখান থেকে কিছু কমিশন নেয়। একে র‍্যাক বলা হয়ে থাকে; গ্রাহকদের আগ্রহী করতে ক্যাসিনো হতে নানা অফার দেওয়া হয়ে থাকে।

.

ক্যাসিনোতে যাওয়া কি ক্ষতিকর ?
আপনার মাথায় যদি সামান্য বুদ্ধি থাকে তাহলে এত সময় নিশ্চয়ই নিশ্চিত হতে পেড়েছেন যে আপনার ক্যাসিনোতে যাওয়া উচিত কিনা।

আসলে ক্যাসিনোতে পরিবেশটা এমন ভাবে সেটআপ দেওয়া হয় আপনি একবার প্রবেশ করলে আপনাকে শুধু টাকা উড়াতেই মন চাইবে।

আমির থেকে ফকির হওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে নিয়মিত ক্যাসিনোতে যাওয়া।

আপনি চাইলে দুধ আর মদ যেটা ইচ্ছা সেটা খেতে পারেন; কোনটা নিবেন সেটা আপনার বিষয়। জেনে শুনে মদ পান করলে কে কি করবে।

.

এই মহামারি থেকে বাঁচার উপায় কি ?
প্রিয় পাঠক, আমাদের যুব সমাজ দিন দিন নানা অনৈতিক কাজের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে যা আমাদের সমাজ তথা জাতিকে ঠেলে দিচ্ছে এক মহাদুর্যোগের দিকে; সময় থাকতে নিজে সচেতন হোন অন্যকে সচেতন করুন। আপনার সন্তানের দিকে নজর রাখুন। তাদের সময় দিন।

কোথাও এমন কর্মকাণ্ড নজরে আসলে প্রশাসনকে জানান; পারলে নিজে প্রতিবাদ করুন। আর আপনি যদি এই সকল জায়গায় আসা যাওয়া করেন আজই বাদ দিন। কারন আজ আপনি যাচ্ছেন দুই দিন পর আপনাকে দেখে আপনার সন্তানও আপনার দেখানো পথে হাঁটবে।

সঠিক উপায়ে আয় করুন বাজে কাজে ব্যয় করতে মন চাইবে না; ” নিজের জন্য প্রয়োজনীয় পানির বালতি যদি নিজে বহন করেন তাহলে বুজতে পারবেন প্রতি ফোটা পানি কতোটা দামি। ”

তবে দিনের আলোতে বসে জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধ আলো উপভোগ করতে চাইলে সেটা ভিন্ন কথা। জীবন চলে যাবে রাতের চাদের স্নিগ্ধ আলো আর উপভোগ করা হয়ে উঠবে না।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print