
চট্টগ্রামে যাত্রীদেরকে জিম্মি করে পূর্ব ঘোষণা ছাড়া গণপরিবহন ধর্মঘট আহবান করার ঘটনায় ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।
আজ মঙ্গলবার সংবাদপত্রে প্রেরিত এক বার্তায় ক্যাব চট্টগ্রামের নেতৃবৃন্দ বলেছেন গণপরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের সরকারের পক্ষ থেকে অত্যুধিক প্রণোদনা দেবার কারণে তাঁরা বারবার জনগনকে জিম্মি করে এ ধরনের অবৈধ ধর্মঘট আহবানসহ আইন প্রয়োগে প্রশাসন ও আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে আইন প্রয়োগে বারবার বাঁধা দিলেও সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থ্ নিচ্ছে না।
বরং পুরস্কার হিসাবে তাদেরকে মন্ত্রী, এমপি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতা বানাচ্ছে আর এ খাতে অন্যতম অংশীজন ভোক্তারা কোন প্রণোদনাতো দূরের কথা আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির সদস্যও হতে পারছে না। ফলে সড়কে নৈরাজ্য থামছে না। সড়ক পরিবহন খাতে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের বেলায় পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরাই মিলে তাদের মতো করে যাবতীয় নীতি প্রণয়ন ও সবগুলি সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। যার খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারন জনগনকে। বিএরআটিএ ও ট্রাফিক পুলিশের কাছে কোন অভিযোগ করে প্রতিকার পাওয়া কঠিন, কারন সবকিছুর ওপর পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরাই রাজত্ব করছে। সড়ক পরিবহন খাতে নৈরাজ্য থামাতে হলে ভোক্তা ও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সম অংশগ্রহন নিশ্চিত জরুরী।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গত রবিবার চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে ফিটনেসবিহীন ঝুঁকিপুর্নভাবে গাড়ী চালানোর অপরাধে মালিক, চালক ও হেলপারকে কারাদন্ড প্রদান করেন বিআরটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এস এম মনজুরুল হক। এর পর থেকেই কোন প্রকার ঘোষণা ছাড়াই চট্টগ্রাম মহানগরসহ বিভিন্ন আন্তঃনগর গণপরিবহনগুলি জনগনকে জিম্মি করে ধর্মঘট আহবান করে। ফলে নগরীতে সাধারন যাত্রীদের অবর্ননীয় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
বিবৃতিতে ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারন সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান আরও বলেন সড়কে নৈরাজ্য ঠেকাতে হলে গণপরিবহন সেক্টরে রাজনৈতিক মদদ ও পৃষ্টপোষকতা বন্ধ করতে হবে। কারন সড়কে নৈরাজ্যের মূল কারন চাঁদাবাজি। শ্রমিক-মালিক ও আইনপ্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের নামে চাঁদাবাজির কারনে নামে বেনামে ধর্মঘট ও বিভিন্ন সংগঠনের তৎপরতা। আর জনগনকে বারবার জিম্মি, সরকার দলীয় সমর্থক দাবি করে অবৈধ ধর্মঘট আহবানকারী গণপরিবহনের মতো সেবাধর্মী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করা যায় না।
নেতৃবৃন্দ বলেন সড়কে নৈরাজ্য ঠেকাতে গত বছর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে সরকার সড়ক পরিবহন আইন সংস্কার করার উদ্যোগ নিলেও পরিবহন মালিক সমিতির নেতা ও সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে আইনটি পুরোপুরি সংস্কার করা যায় নি। পরে সাবেক সাবেক নৌ পরিবহন মন্ত্রীর নেতৃত্বে করনীয় নিয়ে সুপারিশমালা প্রনয়নে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১১১টি সুপারিশ করলেও সুপারিশমালা বাস্তবায়নে উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।