সাইফুল ইসলাম শিল্পী:
চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর ৩ নম্বর ডলফিন জেটি এলাকায় দুটি জাহাজের সংঘর্ষে একটি অয়েল ট্যাংকারের তলা ফুটো হয়ে নদীতে ছড়িয়ে পড়া তেল মারাত্মক পরিবেশ দুষণের আশঙ্কা করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তবে ইতোধ্যে বিপুল পরিমাণ তেল নদী থেকে তুলে নিয়েছে বলে দাবী করেছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) গভীর রাতে কর্ণফুলী নদীর ৩ নম্বর ডলফিন জেটি এলাকার মাঝনদীতে লাইটার জাহাজ ‘সিটি ৩৮’ ও অয়েল ট্যাংকার ‘দেশ-১’ এর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে জানায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্মকর্তারা।
এর পর চট্টগ্রাম বন্দরের বে ক্লিনার-১ ও ২, কান্ডারী ১০ ও ১১ এবং দুটি লেবার বোট নদীর থেকে পানি মিশ্রিত পড়ে যাওয়া তেল সংগ্রহ শুরু করে।
আজ শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর পর্যন্ত এ দলটি নদী থেকে পানিসহ প্রায় ৮ হাজার লিটার তেল তোলা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
পরিবেশ অধিদপ্তরকে দেয়া এক চিঠিতে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) অয়েল ট্যাংকার ‘দেশ-১’।বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল খুলনায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। রাত দুইটার দিকে মাঝনদীতে লাইটার জাহাজ ‘সিটি ৩৮’ ধাক্কা দিলে ফুটো হয়ে যায় অয়েল ট্যাংকার ‘দেশ-১’। এরপর নদীতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত জ্বালানি তেল। এতে প্রচুর পরিমাণে তেল কর্ণফুলি নদীতে ছড়িয়ে পড়ে কর্ণফুলি চ্যানেল ও জলজ পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করে।
চবকের বজ্য ও পরিস্কারক জাহাজ বে-ক্লিনার-১, বে ক্লিনার-২, স্কীমার-১, স্কীমার-২, ট্যাগ কান্ডারী-৮, কান্ডারী-১০, কান্ডরী-১১ তেল সংগ্রহে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিত্যাক্ত তেল সংগ্রহ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
সংঘর্ষের ফলে নিঃসৃত তৈল পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি করছে বলে প্রতিয়মান হয়। এ অবস্থায় ঘটনাটি তদন্ত সাপেক্ষে জাহাজ দুটির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা হল।
এদিকে দুর্ঘটনার পরপরই জাহাজ দুটির মাস্টারসহ তিনজনকে আটক করা হয়। পাশাপাশি বন্দরের ‘কান্ডারী-৮’ নামক জাহাজের সাহায্যে ওই জাহাজ দুটিকেও আটক করে রাখা হয়েছে।
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক জানান, দুর্ঘটনার পরপরই পরিবেশ ও নদী দুষণের কথা বিবেচনায় রেখে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা নদীতে নিঃসরিত জ্বালানি তেল তুলে নেয়ার কাজ শুরু করেছি। আর দুর্ঘটনাটির জন্য দায়ী ওই দুটি জাহাজের মালিকের কাছ থেকে এর জন্য ক্ষতিপূরণও আদায় করা হবে।
এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে বন্দরের ‘বে ক্লিনার-১ ও ২’, ‘কাণ্ডারী ১০ ও ১১’, দুইটি লেবার বোট। আজ দুপুর পর্যন্ত কর্ণফুলী নদী থেকে পানি মিশ্রিত ৮ হাজার লিটার তেল তোলা হয়েছে।
তিনি এ দুর্ঘটনার জন্য দায়ী জাহাজের মালিকের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ ও খরচ আদায় করা হবে বলে জানান সাংবাদিকদের।
