ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

মেম্বার বখতিয়ারকে ইয়াবা কারবারী সাজিয়ে ক্রসফায়ারে হত্যা করে ওসি প্রদীপ ও মর্জিনা (ভিডিও)

ওসি প্রদীপ ও ওসি মর্জিনা। (ইনসেটে) নিহত বখতিয়ার।

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে ১১ মিনিট

ওসি প্রদীপ ও ওসি মর্জিনা। (ইনসেটে) নিহত বখতিয়ার।

সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মোঃ রাশেদ খান হত্যা মামলায় কারাবন্দি টেকনাফ থানার কুখ্যাত ওসি প্রদীপ কুমার দাস ছিল মূলত টেকনাফ উখিয়ার স্বঘোষিত রাজা। ফলে প্রশাসনিকভাবে প্রদীপ টেকনাফের ওসি হলেও বেআইনীভাবে তিনি উখিয়া থানা এলাকা থেকে টার্গেটকৃত ব্যাক্তিদের ধরে নিয়ে মোটা অংকের টাকা নিয়ে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করতো। আর উখিয়ায় প্রদীপের এসব কাজের সহযোগী ছিল থানার ওসি মর্জিনা আক্তার।  তিনি চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারী কক্সবাজার ডিবি থেকে বদলী হয়ে টেকনাফ থানা অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগ দেন। এর পর থেকে টেকনাফের ওসি প্রদীপের সহযোগী হিসেবে উখিয়াতেও নীরিহ মানুষকে হয়রানী ও ক্রসফায়ারের নামে হত্যা মেতে উঠেনে।

ওসি মর্জিনা।

ওসি প্রদীপের নির্যাতন, চাঁদাবাজিম লুটপাট, হামলা-মামলা এবং কথিত বন্দুকযুদ্ধের শিকার হয়ে শত শত পরিবার নি:স্ব হয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। ওসি প্রদীপ ও তার কয়েকজন সহযোগী মেজর সিনহা হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর   এখনে সেসব পরিবারে অনেকে এলাকায় ফিরছে। উদ্যোগ নিচ্ছে আইনী মোকাবেলার।

ভিডিওতে দেখুন ওসি প্রদীপ ও মর্জিনা গংদের লুটপাট ও বখতিয়ার মেম্বারকে ধরে নিয়ে যাওয়া প্রমাণ:

উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ইউনিয়নের তেমনি একটি পরিবারকে নি:স্ব করে দিয়েছে ওসি প্রদীপ ও ওসি মর্জিনা। তাদের রোষানলে পড়ে স্থানীয় একজন প্রতিনিধিকে ক্রসফায়ারে নামে হত্যা করেছে। এবং তার বাড়ীতে লুটপাট করে নিয়ে গেছে ৫১ লাখ নগদ টাকা ও বিভিন্ন মালামাল। কুতুপালং এর সেই জনপ্রিয় তিন তিনবার নির্বাচিত ইউপি মেম্বার বখতিয়ার আহমেদের হত্যাকাণ্ড নিয়ে আমাদের স্থানীয় উখিয়া উপজেলা প্রতিনিধি পাঠানো তথ্যচিত্র তুলে ধরা হল।

চলতি বছরের ২২ জুলাই, রাত আনুমানিক ৩টা।  গভীর রাত। বাড়ির সবাই তখন ঘুমিয়ে। ঠিক ওই সময়ে কুতুপালং এর ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার বখতিয়ার আহমদের বাড়ির দরজায় হাজির ওসি প্রদীপ কুমার দাশ তার পোষাকি বাহিনী। সাথে তাঁর আরেক ওসি মর্জিনা আক্তার। প্রথমজন টেকনাফ থানার বহুল আলোচিত-বিতর্কিত ওসি। অন্যজন উখিয়ার থানার ওসি।

বাড়ীর দরজায় কড়া নেড়ে ‘বখতিয়ার ভাই, একটু বের হবেন! একজন মানুষকে শনাক্ত করতে হবে। আপনি চেনেন কিনা!’

সিসিটিভির ম্যামেরায় ওসি প্রদীপ।

ওসি প্রদীপের পরিচয় পাওয়ার পর বাড়ির দরজা খুলে দেন বখতিয়ার মেম্বার। তিনি উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ইউনিয়নের ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের নির্বাচিত মেম্বার। যিনি টানা তিনবার ধরে নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

বাড়ির দরজা খুলতেই দুইজন পুলিশ ছোঁ মেরে বখতিয়ার মেম্বারকে নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেন।  দ্রুত পুলিশের গাড়িতে তুলে নেন। তাঁকে তুলে নিয়েই পুলিশের গাড়ি যাত্রা করে।

নিহত বখতিয়ার আহমদ মেম্বার।

পরিবারের অভিযোগ তখন বাড়িতে থাকা বখতিয়ার মেম্বারের তিন ছেলের মধ্যে মেজো ছেলে হেলাল উদ্দিন বাবার বিষয়টি জানতে ফোন দেন ওসি প্রদীপকে। ওসি প্রদীপ কুমার দাশ দুইবার ফোন রিসিভও করেছিলেন। তখন তার (হেলাল উদ্দিন) বাবার জন্য যতটুকু সম্ভব করার আশ্বাস দেন তিনি।

পরদিন সকালে টেকনাফ থানাসহ উখিয়া ও কক্সবাজারের বেশ কয়েকটি থানায় খোঁজ নেয় বখতিয়ার মেম্বারের ছেলে ও আত্মীয়-পরিজনরা। কিন্তু কোথাও বখতিয়ার মেম্বারের খোঁজ নেই।

পরে বিকেলে খবর আসে বখতিয়ার মেম্বারকে টেকনাফ থানায় নেয়া হয়েছে। বাবার জন্য টেকনাফে ছুটে যান ছেলে হেলাল উদ্দিন। নানাজনের মাধ্যমে পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতাদের কাছে দেনদরবার করেন। অনেকে আশ্বাস করেন তাঁকে (বখতিয়ার মেম্বার) ছেড়ে দেয়া হবে। ওসি প্রদীপের হয়ে মোটা অংকের লেনদেনের প্রস্তাবও আসে।

বখতেয়ার মেম্বারের পুত্রবধূ।

পরিবারের অভিযোগ, সে প্রস্তাবে সাড়া না পেয়ে টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশের নেতৃত্বে একদল পুলিশ রাত ৮টার দিকে আবারও বখতিয়ার মেম্বারের বাড়িতে হানা দেয়। এবার বাড়িতে ঢুকেই বখতেয়ার মেম্বারের সহধর্মিনী শাহানা আক্তারের হাতে পরিয়ে দেন হাতকড়া। শুরু করা হয় মানসিক, শারিরিক নির্যাতন। সাথে অকথ্য গালিগালাজ। ওই সময় বখতেয়ার মেম্বারের কলেজপড়ুয়া মেয়ে ও দুই পুত্রবধূকে চর-থাপ্পড় ও শ্লীলতাহানি করেন ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও সাথে থাকা অন্য পুলিশরা। লজ্জায় যে কথা কাউকে বলতে পারেননি তারা। তারপর বাড়ির আলমিরা ভেঙ্গে লুট করা হয় ৫১ লাখ নগদ টাকা, অসংখ্য জমির দলিল ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র। ওই সময় বখতিয়ার মেম্বারকে পুলিশের সাথে আনা হলেও তাঁকে গাড়িতেই বসিয়ে রাখা হয়।

বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট আর নারীদের শ্লীলতাহানির পর বখতিয়ার মেম্বারকে নিয়ে ফিরে যায় ওসি প্রদীপের নেতৃত্বাধীন পুলিশের দল। তারপরও মোটা অংকের প্রস্তাব আসতে থাকে পুলিশের পক্ষ থেকে। কিন্তু বখতিয়ার মেম্বারের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন সাড়া পায়নি পুলিশ। রাত গভীর হয়। রাত তখন প্রায় আড়াইটা। বখতিয়ার মেম্বারের পরিবারের সদস্যদের কাছে মোবাইলে খবর আসে তাঁকে ক্রসফায়ারে মেরে ফেলা হয়েছে।

নিহত বখতেয়ারে স্ত্রী।

ঠিক এভাবেই আলোচিত বখতিয়ার মেম্বারকে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ‘হত্যা’র বিবরণ তুলে ধরেছেন তাঁর সহধর্মিনী শাহানা আক্তার।

পাঁচ সন্তানের এই জননী সাংবাদিকদের সামনে এই বিবরণ তুলে ধরে দাবি করেন, তাঁর স্বামী বখতিয়ার মেম্বারের বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা ছিল না। তিনি ইয়াবা কারবারেও জড়িত ছিলেন না। তিনি মূলতঃ কুতুপালং ইউনিয়নের ৯ নাম্বার ওয়ার্ডের মেম্বার হিসেবে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজের পারিবারিক সিএন্ডএফ ব্যবসায়িক কাজ-কর্ম করে দিনাতিপাত করতেন।

শাহীনা আকতার দাবি করেন, তার স্বামী স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ প্রায় দুই বছর ধরে অসুস্থ ছিলেন। পুলিশ ধরে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি বেশির ভাগ সময় বাড়িতেই কাটাতেন আর চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

তিনি মনে করেন, তাঁর স্বামী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ও সামাজিক শক্রুদের দ্বারা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। তাদের দ্বারাই প্রভাবিত হয়ে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ একজন অসুস্থ মানুষকে (বখতিয়ার মেম্বার) দুই রাত ও একদিন নির্যাতন চালিয়ে সুস্থ মস্তিস্কে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছেন। তার বিরুদ্ধে কোন থানায় মামলাতো দুরে থাক একটি জিডিও ছিল না দাবী করে স্ত্রী শাহীনা বলেন, আমার স্বামীকে পুলিশ কি অপরাধে ধরে নিয়েছে কেন হত্যা করেছে আমরা জানি না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জনপ্রতিনিধি জানান, বখতেয়ার আহম্মদ এলাকার জনপ্রিয় মেম্বার ছিলেন। তিনি তিনবার একাবাসীর ভোটে মেম্বার নির্বাচিত হন। গত ২৩ জুলাই দিবাগত রাত পৌণে ৩টার দিকে ওসি প্রদীপ কুমার দাশ কুতুপালং এলাকার নিজের বাড়ি থেকে নিয়ে যান। পরদিন দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে টেকনাফে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ সাজিয়ে বখতিয়ার মেম্বারের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু পুলিশের এই জুলুম নির্যাতন খোদা সহ্য করবে না।

বখতিয়ারের স্ত্রী শাহীনা আকতার পাঠক ডট নিউজকে জানান, ওসি প্রদীপের হুমকি, ধমকিতে ভীত হয়ে এতদিন তারা মুখ খুলতে পারেননি। এমনকি হঠাৎ ক্রসফায়ারে স্বামীকে হারিয়েও তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে অবস্থান করতে পারছেন না। দিনে রাতে পুলিশসহ কোন না কোন বাহিনীর লোকজন এসে তাদের নানাভাবে হয়রানি করছে।

তিনি জানান, তার স্বামীকে হত্যা করেই ওসি প্রদীপ নিজের অপকর্ম থামাননি। তার তিন ছেলেকেও ক্রসফায়ার দেয়ার হুমকি, মাদক মামলাসহ তিনটি মামলায় আসামি করা হয়েছে।

হত্যাকাণ্ডের পর দিন ওসি প্রদীপ কুমার দাস সাংবাদিকদের বলেছিলেন-টেকনাফের হ্নীলার ওয়াব্রাং এ অভিযান চালিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা মো. ইউনুছকে ২০ হাজার ইয়াবাসহ আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে পুলিশ উখিয়ার কুতুপালং ই ব্ল-কের ইউনুছ আলীর ছেলে ও স্থলবন্দর ব্যবসায়ী রোহিঙ্গা মো. তাহেরকে আটক করে।  তাহেরের ভাষ্যমতে উদ্ধার ইয়াবার প্রকৃত মালিক উখিয়া কুতুপালংয়ের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মৌলভী বখতিয়ার (৫৫) ওরফে বখতিয়ার উদ্দিন মেম্বারের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়।  এ সময় বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ইয়াবা বিক্রির নগদ ১০ লাখ টাকা এবং ২০ হাজার ইয়াবাসহ তাকে আটক করা হয়। ভোরে তাদেরকে নিয়ে মিয়ানমার থেকে আনা হ্নীলার ওয়াব্রাংয়ে আকাশী গাছের বাগানে ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে গেলে তাদের সহযোগী ইয়াবা ব্যবসায়ীরা পুলিশক লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।  আত্মরক্ষার্থে পুলিশ পাল্টা গুলি চালালে ওই দুজন গুলিবিদ্ধ হন। তাদের উদ্ধার করে টেকনাফ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের কক্সবাজারে পাঠান। কক্সবাজারে নেয়া হলে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি এই বক্তব্য মিথ্যা ও বানোয়াট সাজানো নাটক দাবী করেন তার স্ত্রী শাহিনা আকতার দাবি করেন, তাঁর স্বামী বখতিয়ার মেম্বারের ইয়াবা কিংবা মাদক মামলা তো দূরের কথা, অন্য কোন মামলাই নেই। অথচ ওসি প্রদীপ কুমার তার স্বামীকে তুলে নিয়ে ‘বন্দুকযুদ্ধ’ সাজিয়ে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেন, কোন ধরণের অভিযোগ ছাড়াই একজন মানুষকে কিভাবে হত্যা করা যায়!

খবর নিয়ে জানাগেছে, নিহত বখতিয়ার মেম্বারের পাঁচ ছেলে-মেয়ের মধ্যে তিন ছেলে ও দুই মেয়ে। তাদের মধ্যে এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। আরেকজন কলেজে পড়েন। তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে আইনজীবী ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএমে কর্মরত, মেজো ছেলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ও কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির আইন বিভাগের ছাত্র এবং ছোট ছেলে চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ছাত্র।

বাবা বখতিয়ার মেম্বারকে হারানোর পরও ওসি প্রদীপ কুমার দাশের ভয়ে নিহত বখতেয়ারে স্ত্রী ও সন্তানরা  কাটাতে হচ্ছে। শুধু ছেলে-মেয়েরা নয়, শাহিনা আকতার নিজেও পুলিশের ভয়ে আত্মীয় স্বজনের ঘরে রাত কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি তাঁর স্বামী হত্যার বিচার চান। প্রয়োজনে হত্যা মামলা করবেন।

গৃহবধূ শাহানা আকতার স্বামী হত্যার বিচার ও ‘হত্যাকারী’ ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিচারের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও আবেদন জানিয়েছেন।

বখতিয়ার মেম্বারের ছেলে বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘আমার বাবা ৪নং রাজপালং ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে তিনবারের জনপ্রতিনিধি। এলাকায় আমাদের কয়েকটি রাইস মিল ও সিএন্ডএফ এর ব্যবসা রয়েছে। প্রতিদিনই আমরা চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা আয় করি। বাবার বিরুদ্ধে মামলা থাকা তো দূরের কথা, জিডি পর্যন্ত নেই। অথচ তাকে মাদক কারবারি বলে ক্রসফায়ার দিল। এছাড়া পুলিশ আমাদের ঘরে থাকা ব্যবসার ৫১ লাখ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, জায়গা জমির দলিল, খতিয়ান, ব্যাংকের চেকবই সহ মুল্যবান মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। বাড়ীতে লুটপাটকালে আলমিরা থেকে টাকা বস্তায় ঢুকানোর সময় নীচে পড়ে যাওয়া টাকা ও স্বর্ণলঙ্কার ওসি মর্জিনা নিজেই কুড়িয়ে নেয়। উল্টো পুলিশ আমাদের তিন ভাইকে মাদক ও অস্ত্র মামলায় আসামি করল।’ তারা সরকারী খাতায় ১০ লাখ টাকা উদ্ধার দেখিয়ে বাকী ৪১ লাখ টাকা আত্মসাত করেছে।

তিনি বলেন, এসববের প্রমাণ ও সিসিটিভির ফুটেজ রয়েছে।  সময় মত আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

তিনি আরও বলেন, ‘এলাকার কেউ বলতে পারবে না আমরা মাদক ব্যবসা করি। আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। আরেক ভাই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করে। ছোট ভাইটি কক্সবাজার ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। অথচ ওসি প্রদীপ ও মর্জিনা আমাদের সন্ত্রাসী বানিয়ে দিল। আল্লাহ তার বিচার করবে।  আমার পরিবার তাদের বিরুদ্ধে করার উদ্যোগ নিচ্ছি। ইতিমধ্যে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলেছি।’

এসব অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মর্জিনা আক্তার  বলেন, ‘সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স দেখাচ্ছি। কোনো মাদক কারবারি পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাবে না। আমার বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট।’ তিনি বলেন, টাকা লুট নয়, অভিযানের সময় তার বাড়ীতে ইয়াবা বিক্রির ১০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, ‘পুলিশের কোনো কর্মকর্তা বা সদস্য যদি কোনো অপকর্ম করে থাকে তার দায়ভার তার ওপরই বর্তাবে। এ ব্যাপরে আমরা খুব কঠোর। ওসি বা পুলিশের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যদি গুরুতর কোনো অভিযোগ আসে আমরা কমিটি গঠন করে তদন্ত করে থাকি। এমনকি রেঞ্জ ডিআইজি অফিস ও পুলিশ সদর দপ্তরও আলাদাভাবে তদন্ত করে থাকে। এ ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হয় না।’

জেলার পুলিশ প্রধান আরও বলেন, ‘ক্রসফায়ার বা মাদক ব্যবসার নামে পুলিশের কেউ যদি কারও কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে থাকে, তবে তাদের ব্যাপারে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে অনেকে আবার অনেক সময় পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে থাকে, সেগুলোও আমরা খতিয়ে দেখি।’

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print