
ঢাকা শিশু হাসপাতালে নার্স নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় এক পরীক্ষার্থীকে প্রশ্নের উত্তরপত্রে দেখিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ডা. জহিরুল ইসলাম লিটনের বিরুদ্ধে।
আরোও অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে পরীক্ষার হলে স্পার অব রোলস ভেঙে মোবাইল ফোন নিয়ে হলে প্রবেশ করেছেন। গত শনিবার শিশু হাসপাতালের পুরাতন ভবনের করিডোর-২ তে এ ঘটনা ঘটে।
ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, হলে প্রবেশ করে তিনি এক পরীক্ষার্থীর পাশে দাঁড়িয়ে কিছু বলে দিচ্ছেন। এমন ভিডিও মুহূর্তের মধ্যে স্যোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়লে ভাইরাল হয়ে যায়। এতে বিতর্কের মূখে পড়ে নার্স নিয়োগের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকও।
জানা যায়, ডা. লিটন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ (সাচিপ) শিশু হাসপাতাল শাখার সাধারণ সম্পাদক। বহু চিকিৎসকরদের অভিযোগ রয়েছে, প্রায় সময় তিনি এই পদের জোরে হাসপাতালের সকল কর্মকর্তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমনকি কোনো কাজ না করেও মাসের পর মাস বেতন তুলে নেন। এছাড়াও দীর্ঘদিন ঢাকা সাভারের এনাম মেডিক্যাল হাসপাতালে চাকরীও করেছেন। একেই সাথে বহু প্রতিষ্ঠানে তিনি চাকরি করে চলেছেন। যা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত।

সূত্রে আরও জানা যায়, গতকাল সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিশু হাসপাতালের নার্স নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় পরীক্ষার হল করিডোর-২ তে এক পরীক্ষার্থীকে তিনি প্রশ্নের উত্তর দেখিয়ে দিচ্ছেন। এমন একটি ১ মিনিট ১ সেকেন্ডের ভিডিও নেট দুনিয়ায় ফাঁস হয়। ভিডিওটি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ওই রুমের দায়িত্বে থাকা ডা. রেজওয়ানা রুমা চেয়ারে সামনে বসে আছেন। ডা. লিটন চোখে চশমা আর পেস্ট কালারের শার্ট পরে কালো বোরকা পরিহিত এক পরীক্ষার্থীকে নিচু হয়ে কিছু একটা দেখিয়ে দিচ্ছেন; আর ওই পরীক্ষার্থী উত্তরপত্রে বৃত্ত ভরাট করছেন। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিশু হাসপাতলের অন্যান্য চিকিৎসকেরাও। তবে তাঁরা কেউ পরিচয় দিয়ে কথা বলতে রাজি হয় নি।
এ বিষয়ে জানতে ডা. জহিরুল ইসলাম লিটন এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ফোন লাইন কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
এদিকে ঢাকা শিশু হাসপাতালে নার্স নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় ডা. জহিরুল ইসলাম লিটন আদৌও দায়িত্বে ছিলেন কিনা? বা থাকলেও এভাবে পরীক্ষার্থীকে দেখিয়ে দিতে পারে কিনা জানতে চাইলে ডা. রেজওয়ানা রুমা বলেন, ডা. লিটন পরীক্ষার হলের দায়িত্বে ছিলেন কিনা আমি জানি না। তবে তিনি রুমে এসেছিলেন। এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারব না।’
ইতোমধ্যে এ ঘটনায় ঢাকা শিশু হাসপাতালের এনেসথেসিয়া বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক বহু সমালোচিত ডা. লিটনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে করা এই অভিযোগে এমন অনিয়ম ও কর্তব্য অবহেলার দায়ে ডা. লিটনের শাস্তি দাবি করা হয়।