
চাকুরীর প্রলোভন দিয়ে নগরীর বাকলিয়া থানাধীন কল্পলোক আবাসিক এলাকায় তরুণীদের আটকে রেখে দেহ ব্যবসা চালিয়ে আসছিল একটি চক্র। জিম্মিদশা থেকে এক তরুণী জাতীয় জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন করে তাদের উদ্ধারে আহবান জানালে পুলিশ ওই বাসায় অভিযান চালিয়ে দুই তরুণীকে উদ্ধার এবং আটকে রেখে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করার অভিযোগে এক নারীসহ ২ জনেকে গ্রেফতার করেছে বাকলিয়া থানা পুলিশ।
সিএমপির বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেজাম উদ্দিন পাঠক ডট নিউজকে এ ঘটনা নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গতকাল সোমবার জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ হতে একজন তরুনী ফোন করে জানান যে, তাকে এবং তার ফুফাত বোনকে বাকলিয়া থানাধীন একটি বাসায় বন্দি করে রাখা হয়েছে। কিন্তু সে বাসার নাম-নাম্বার কোন কিছুই জানেনা। জাতীয় জরুরি সেবা উক্ত তরুনীর কলটি বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এর সরকারি নাম্বারের সাথে সংযোগ ঘটিয়ে দিলে আমি উক্ত তরুণীরে সাথে কথা বলি। কিন্তু ভিকটিমরা কোন সুনিদিষ্ট ঠিকানা দিতে পারছিল না। তারা শুধু কল্পলোক আবাসিক এর একটি বাসায় তাদের আটকে রাখা হয়েছে বলে জানাতে পারে। পরে তাকে জানালা দিয়ে বাইরের দৃশ্যের বর্ণনা দিতে বলি। সেই বর্ণনার সূত্র ধরে বাকলিয়া থানার পুলিশ ভিকটিমদের বাকলিয়া থানাধীন কল্পলোক আবাসিক এলাকাস্থ এমিরেটার্স প্যালেস ব্লক-জি, প্লট-৩১, ৫ম তলার ৪ বি-ফ্ল্যাটটি সনাক্ত করা হয় এবং ঐ বাসা থেকে ভিকটিমদের উদ্ধার করা হয় এবং জড়িত ব্যক্তি মোঃ দেলোয়ার (২৫) এবং শাহীন আকতার (২৪)কে আটক করা হয়।
উদ্ধার হওয়া দুই তরুণী জানায়, তারা নগরীর পতেঙ্গা থানাধীন কর্ণফুলী ইপিজেড কেনপার্ক বাংলাদেশ এ্যাপারেল প্রাইভেট লিমিটেডে চাকরি করত। করোনা ভাইরাস সংক্রমন এর কারনে কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে ঐ গার্মেন্টস এর রেখা নামের একজন সহকর্মী অন্য গার্মেন্টসে চাকরি দেওয়ার নাম করে মোঃ রাকিব (২৫)এর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করিয়ে দেয়। সেই সুবাদে গার্মেন্টসে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোঃ রাকিব তার বন্ধু শওকত আলী খাঁন (৩৩)ও শাহিনা আক্তারগন পরস্পর যোগসাজসে বিউটি ও সুইটি(ছদ্মনাম) নামে এ দুই তরুণীকে উল্লেখিত ঘটনাস্থলের বাসায় গত ৩ অক্টোবর রাতপৌনে ১২টার দিকে নিয়ে যায়। বাসায় নেয়ার পর ধৃত দুইজন ভিকটিম বিউটি ও সুইটি (ছদ্মনাম)কে আটক করে জোরপূর্বক দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য করে।
পুলিশ জানায় এ ঘটনায় যাদের নাম এসেছে তাদের প্রত্যেককে আসামী করা হয়েছে। ঘটনার অপর আসামী শওকত এবং রাকিব সাম্প্রতিককালে বাসাটি ভাড়া নিয়ে অসহায় তরুনীদের টার্গেট করে কৌশলে নিয়ে এসে জোর পূর্বক দেহ ব্যবসার কাজে লিপ্ত ছিল। আসামীদের বিরুদ্ধে বাকলিয়া থানার মামলা দায়ের করা হয়েছে। জড়িত পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্ট চলছে।