
ঢাকার সিআইডিতে কর্মরত এসআই মো. নওয়াব আলীর কোটিপতি স্ত্রী গোলজার বেগমকে কারাগারে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত।
আজ মঙ্গলবার (৯ মার্চ) বেলা পৌনে ১২ টার দিকে দুদক দায়ের করা মামলায় চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালতে হাজির হয়ে আত্মসমর্পণের আবেদন করেন। বিচারক জামিন আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গোলজার বেগম চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা দলের ৪ নং সাংগঠনিক সম্পাদক। তার স্বামী নওয়াব বর্তমানে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকায় এসআই পদে আছেন। নগরীর লালখান বাজার এলাকায় তাদের বাসা।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, ঢাকায় সিআইডিতে কর্মরত এসআই নওয়াব আলীর স্ত্রী গোলজার বেগম দুর্নীতি মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। তিনি আদালতে জামিন চান। দুদকের পক্ষ থেকে জামিনের বিরোধিতা করা হয়। আদালত জামিন আবেদন গ্রহণ না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়।
তিনি আরও জানান, ১৯৯২ সালে কনস্টেবল পদে যোগ দেন নওয়াব আলী। মাছ চাষ থেকে ১ কোটি ১০ লাখ টাকা আয় করেছেন বলে কাগজপত্রে দেখান। এবং এই অর্থের মালিক দেখানো হয় তার স্ত্রীকে। কিন্তু বাস্তবে তার মাছ চাষের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আইনজীবী আরও বলেন, দুদকের দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করে গোলজার বেগম ও তার স্বামী এসআই নওয়াব আলীসহ চার আসামির বিরুদ্ধে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। কিন্তু আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিলেন। আসামি গোলজার বেগম আজ আত্মসমর্পণ করেন। এই মামলায় আগামী ৬ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, ১৯৯২ সালে কনস্টেবল পদে যোগ দেন নওয়াব আলী। তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত টাকার মালিক সাজিয়েছেন স্ত্রী গোলজার বেগমকে। মাছ চাষ থেকে এক কোটি ১০ লাখ আয় টাকা করেছেন বলে কাগজপত্রে দেখালেও বাস্তবে মাছ চাষের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তারপরও মাছ চাষ করা হয় মর্মে কর কর্মকর্তারা প্রতিবেদন দিয়েছেন।
এসআই নওয়াব আলী, তার স্ত্রী গোলজার বেগম, কর অঞ্চল-১ চট্টগ্রামের অতিরিক্ত সহকারী কর কমিশনার (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) বাহার উদ্দিন চৌধুরী ও কর পরিদর্শক দীপংকর ঘোষকে আসামি করে আদালতে দুদক অভিযোগপত্র দিয়েছে।
দুদক তদন্তে পেয়েছে, নওয়াব আলীর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের কেকানিয়া এলাকায়। সেখানে ২০১৩ সালে ৬ দশমিক ৯০ শতাংশ জমির ওপর একটি দোতলা বাড়ি নির্মাণ করেছেন নিজের নামে। স্ত্রী গোলজারের নামে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ছলিমপুরে ৩৫৪ শতক জমি, চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার এলাকায় পার্কিংসহ এক হাজার ১০০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট, একই এলাকায় ৪ শতক জমি রয়েছে। গোলজারের নামে একটি মাইক্রোবাসও রয়েছে। এছাড়া গুলজার বেগমের নামে নগরীর ২৫ নং রামপুর ওয়ার্ডের বড়পুকুর পাড় এলাকায় ২০ কোটি টাকা দামের একটি বহুতল ফ্লাট রয়েছে।