
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডবের পর সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যাচারের মাধ্যমে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার’ অভিযোগে হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সাজেদুর রহমান, সদস্য মোবারক উল্লাহসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে চট্টগ্রামে মামলা করেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির। পরে অবশ্য এ মামলার অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছে আদালত।
আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এস কে এম তোফায়েল হাসানের আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা দায়ের করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখকৃত অন্য আসামিরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আশরাফুল হাসান তপু ( ২৫), জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার বোরহান উদ্দীন কাসেমী (৫০) , দারুল আকরাম মাদরাসার মাওলানা আলী আজম (৫৪), মদিনা মসজিদের ইমাম মাওলানা এরশাদুল্লাহ, জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার মওলানা জুনায়েদ কাসেমী (৪৫), জামিয়া ইসলামিয়া ইউনুছিয়া মাদরাসার মাওলানা নোমান আল হাবিবী, মমিনুল হাসান তাজ ( ২৮), সোলেমান মোল্লা (৫৫), এনামুল হক(২৮), হাকিম মাওলানা ৫৫), মঞ্রুজুল হকের (৪৫) সহ আরও ছয় জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।
এছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও এক’শ থেকে দেড়’শ জনকে আসামি করা হয়েছে।
এ সময় এমপি উবায়দুল মোকতাদির বলেন, ‘২৬ মার্চ স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর দিন থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত তিন দিন ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায় হেফাজত ইসলামের নেতা-কর্মীরা। সরকারি ৫৬টি প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে ভাঙচুর করা হয়। সেইসাথে রেলস্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, পুলিশ ও সিভিল সার্জনের বাসভবনে হামলা ও ওস্তাদ আলাউদ্দীন খাঁর সঙ্গীতাঙ্গন পুরোপুরি পুড়িয়ে দেয়া হয়।
সেইসাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হয়। ২৫ মার্চ থেকেই ফেসবুকে নানা অপপ্রচার চালানো হয়। ঘটনার তিন দিন পর ৩১ মার্চ হেফাজতের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেরা বাঁচার জন্য আমার ওপর সকল দোষ চাপায়। সংবাদ সম্মেলনে যদিও কোনো সাংবাদিক উপস্থিত ছিলেন না। মানুষের মনে ক্ষোভের সঞ্চার করার উদ্দেশে ইউটিউব-ফেসবুকে তা প্রচার করা হয়।
মিথ্যাচারের মাধ্যমে আমার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করায় আজ দুপুরে সশরীরে উপস্থিত হয়ে চট্টগ্রামের সাইবার ট্রাইব্যুনালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করি।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে গত মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকায় আগমনকে কেন্দ্র করে ঢাকা ও চট্টগ্রামে হেফাজতের সাথে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
বাদী পক্ষের আইনজীবী এইচ এম জিয়াউদ্দীন জানান, মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হলেও আসামী করা হয়েছে আরও এক’শ থেকে দেড়শ জনকে। আমরা আদালতকে অনুরোধ করেছি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার জন্য। কিন্তু আদালত অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন।