
বিএনপি চেয়ারপার্সন, দেশনেত্রী, বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি দিয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি।
আজ ২৪ নভেম্বর, বুধবার, দুপুর ১২ টায় নগরীর সার্কিট হাউসে ডিসির বরাবরে প্রদান করেন বিএনপি নেতৃবৃন্দ।
এসময় কেন্দ্রীয় বিএনপি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা.শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করের কাছ থেকে জেলা প্রশাসকের পক্ষে এনডিসি তৌহিদুর ইসলাম স্মারকলিপি গ্রহন করেন।
স্মারকলিপিতে বিএনপি বলেন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি’র চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ২০১৮ সালের ৮ই ফেব্রæয়ারী সাজানো মামলায় ফরমায়েসী রায়ের মাধ্যমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করা হয়। তাকে যখন কারাগারে নেয়া হয় তখন তিনি সুস্থ ছিলেন, যা দেশবাসী গণমাধ্যমে অবলোকন করেছেন । দীর্ঘ কারাবাসে তিনি ক্রমান্বয়ে অসুস্থ হতে থাকেন। কারাগারে নানাবিধ জটিল রোগে ভূগতে থাকলেও সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি । দল ও পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার তার সুচিকিৎসার জন্য দাবি করা হলেও সরকার এ বিষয়ে সম্পূর্ণরূপে নির্বিকার থাকে । ২০২০ সালের মার্চে বাংলাদেশে করোনা শুরু হলে বেগম জিয়াকে কারাগার থেকে নিজ বাসভবনে থাকতে দেয়া হলেও সরকার এটিকে শর্তসাপেক্ষে মুক্তি বলে অভিহিত করেছে। নিজ বাসভবনে অবস্থান করলেও মূলত: বেগম খালেদা জিয়া বন্দী এবং তার সকল মৌলিক মানবাধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে।
এর পর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া করোনায় গুরুতরভাবে আক্রান্ত হন। করোনা থেকে সুস্থ হয়ে উঠলেও পোষ্টকোভিড জটিলতা এবং এর ওপর নানাবিধ রোগ তার জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে। চিকিৎসাধীন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডও তাকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করেছে । দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে চিকিৎসার দাবি জানিয়েছেন শুধুমাত্র বিএনপিই নয়, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ ও আইন বিশেষজ্ঞগণ। আজকে দেশের আপামর জনসাধারণ দেশনেত্রীর মুক্তি এবং বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে সোচ্চার। সুচিকিৎসার জন্য বিদেশ যেতে দেশের প্রচলিত আইনে কোন বাধা নেই বলে আইন বিশেজ্ঞরা অভিমত দিয়েছন । কিন্তু কর্তৃত্ববাদী দুর্বিনীত অমানবিক সিদ্ধান্তে জীবন মরণের সন্ধিক্ষণে থাকা বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশে সুচিকিৎসার সুযোগ না দেয়া তার মৌলিক অধিকার হরণ। দেশবাসী এই নির্দয় সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানায়।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য তাকে অবিলম্বে বিদেশ পাঠানো না হলে এবং এর ফলে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটলে সরকার এর দায় এড়াতে পারবে না। জনগণ মনে করে-সরকার নিজেদের সীমাহীন ব্যর্থতা আড়াল করার জন্য দেশকে অরাজক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতেই জনগণের অবিসংবাদিত নেত্রী বেগম জিয়ার প্রতি মনুষ্যত্বহীন আচরণ করছে। এই মুহুর্তে মানবিক বিবেচনায় বেগম জিয়াকে মুক্তি এবং তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে বিদেশ পাঠাতে হবে । বেগম জিয়ার মুক্তি এবং সুচিকিৎসা পেতে তাকে বিদেশ পাঠানোর দাবী এখন জনদাবীতে পরিণত হয়েছে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে আরও উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ন-আহবায়ক এস.এম.সাইফুল আলম, এসকে খোদা তোতন, কাজী বেলাল উদ্দিন, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, মোঃ শাহ আলম, আব্দুল মান্নান, সদস্য এডভোকেট মফিজুল হক ভুঁইয়া, আনোয়ার হোসেন লিপু, মনজুর আলম চৌধুরী মঞ্জু, কামরুল ইসলাম, নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র যুগ্ন সম্পাদক আলী মুর্তজা খান, সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান জিয়া প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।