ফন্ট সাইজ

শেয়ার করুন

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print

কেমন কাটলো ঘটনাবহুল ২০২১

.

সংবাদটি পড়তে সময় লাগবে মিনিট

.

ঘটনাবহুল আরো একটি বছর কালের আবর্তে হারিয়ে গেল। ২০২১ সালটি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য নানাভাবে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এ বছর বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে বেশ ঘটা করেই। করোনা মহামারির চোখ রাঙানির মধ্যেও বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রয়েছে। অর্থনীতির নানা সূচকে ঊর্ধ্বমুখী উত্থানের পাশাপাশি কাজ হারিয়ে প্রায় ১ কোটি মানুষের গ্রামে ফিরে যাওয়া, বেকারত্বের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতি, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের অধোগতি, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী, শিল্পোদ্যোক্তা, বিভিন্ন পেশাজীবীদের জন্য সরকার প্রদত্ত আর্থিক প্রণোদনার যথাযথভাবে কাজে না লাগানো ইত্যাদি ব্যাপারগুলো আমাদের সবাইকে এক ধরনের অস্বস্তির মধ্যে রেখেছে বছর জুড়ে। এর আগের বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে করোনা মহামারির ভয়াবহ প্রকোপে বিশ্বের অন্যান্য সব দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চরম স্থবিরতা নেমে আসে।

ব্যবসাবাণিজ্য, আমদানি-রপ্তানি, শিল্পকারখানায় উৎপাদন সবই থেমে গিয়েছিল বেশ কিছু দিনের জন্য। তবে পৃথিবীর বহু উন্নত দেশের অর্থনীতি করোনা মহামারির প্রভাবে বিপর্যয়ে শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেলেও বাংলাদেশ সে তুলনায় অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক থেকে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল বাংলাদেশের মানুষ। ২০২০ এর ধকল শেষে বাংলাদেশ ২০২১ আবার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করলেও করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ অর্থনীতির জন্য আরেকটি বিপর্যয় ডেকে এনেছিল। কিন্তু এ বছরেও সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বগুণে বাংলাদেশ অনেকটাই রক্ষা পেয়েছে। প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক কারখানা করোনার অভিঘাত মোকাবিলা করে উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। শুরুতে ইউরোপ আমেরিকায় ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করায় চাহিদা কমে যাওয়ায় তৈরি পোশাক রপ্তানি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হলেও পরবর্তী সময়ে করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকসহ অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি আগের মতো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে বলা যায়।

চলতি বছরে অর্থাৎ ২০২১ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। যা করোনা মহামারির পরিস্থিতিতে অভাবনীয় বলা চলে। করোনা মহামারির মধ্যেও রপ্তানি আয়ের পরিমাণ ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে এ বছর। গত বেশ কয়েক মাসে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে চরম অধোগতি অর্থনীতিতে নতুন দুশ্চিন্তার জন্ম দিয়েছে। করোনার কারণে বিভিন্ন দেশে কর্মরত বাংলাদেশি শ্রমিকদের কাজ হারিয়ে দেশে বেকার হয়ে ফিরে আসা, আগে দেশে ছুটি কাটাতে আসা অনেকেই সময়মতো করোনা ভ্যাকসিন না পাওয়ায় পুনরায় চাকরিতে ফিরতে না পারাসহ ব্যাংকিং চ্যানেলের বদলে অবৈধ পথে হুন্ডির মাধ্যমে দেশে টাকা পাঠাতে প্রবাসীদের আগ্রহ বেড়ে যাওয়ার কারণে রেমিট্যান্স প্রবাহে ভাটা শুরু হয়েছে। গত তিন বছর মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের শ্রমবাজার বন্ধ থাকার পর নানা সরকারি তৎপরতায় আবার চালু হয়েছে। একই ভাবে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশেও বন্ধ হয়ে যাওয়া শ্রমবাজার আবার শুরু হওয়ায় নতুন করে শ্রমিক, কর্মী যাওয়া শুরু হয়েছে। এটা বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য সুখবর বটে। সরকার পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও নতুন শ্রমবাজারের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।

এভাবে যদি বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে প্রচুর সংখ্যক জনশক্তি রপ্তানি বাড়ানো যায় তাহলে রেমিট্যান্স প্রবাহে নতুন জোয়ার সৃষ্টি হবে। একটি কথা মানতেই হবে, বাংলাদেশের অর্থনীতির আজকের যে শক্ত অবস্থান তার পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আয় এবং জনশক্তি রপ্তানির মাধ্যমে অর্জিত রেমিট্যান্সের। এ বছর বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বেড়ে ২ হাজার ৫৫৪ ডলার হয়েছে। জিডিপির পরিমাণও আশাব্যঞ্জক। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের বাজেটের আকারও আগের চেয়ে বেড়েছে। অর্থমন্ত্রী ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন জাতীয় সংসদে। বর্তমান মূল্য বিবেচনায় ২০২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল্যমান ৩৪ হাজার ৮৪০ বিলিয়ন টাকায় দাঁড়িয়েছে। ২০২১ সালে বাংলাদেশের কৃষি, শিল্প এবং সেবা খাতের আরো সম্প্রসারণ ঘটেছে। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আকার বেড়ে দাঁড়িয়েছে দুই লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকায়।

করোনা মহামারির প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কিনতে বেশ বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ রাখার মাধ্যমে বর্তমান সরকার বিচক্ষণতার প্রমাণ দিয়েছে। দেশব্যাপী করোনা মহামারি প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ফলে দেশে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার অনেক কমে এসেছে। এটা বর্তমান সরকারের এক ধরনের সাফল্য ও কৃতিত্ব হিসেবে বিবেচনা করা যায়। করোনার প্রকোপ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকায় বাংলাদেশের অর্থনীতি তথা সামাজিক রাজনৈতিক অঙ্গনে চাঞ্চল্য ও ব্যস্ততা ফিরে এসেছে। করোনার ধাক্কায় রপ্তানি খাতে যে স্থবিরতা ছিল গত ২০২০ সালে ২০২১-এ তা কেটে চমৎকার গতির সঞ্চার হয়েছে। তবে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন হানা দিয়েছে ইউরোপ আমেরিকা আফ্রিকাসহ এশিয়া মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশে। যে কারণে বাংলাদেশের রপ্তানি নতুন করে হুমকির মধ্যে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে ২০২১-এর শেষপ্রান্তে এসে। এ বছর জুড়ে ব্যাংক, বিমা ও শেয়ারবাজার নিয়ে নানা ধরনের ইস্যু বেশ আলোচনায় ছিল। ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমেনি বরং নতুন করে আরো অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে সরকার, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের জন্য প্রণোদনার নতুন প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন।

২০২১ সালে ব্যাংকগুলোর আয় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুনাফার পরিমাণ বেড়েছে। তবে কিছু কিছু ব্যাংক এক্ষেত্রে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। একটি কথা স্বীকার করতে হবে, করোনার পরবর্তী ব্যাংকিং খাত নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। ব্যাংকিং সেবার পরিধি শহরাঞ্চল ছাড়িয়ে গ্রাম, দুর্গম পার্বত্য এলাকা, হাওড় অঞ্চলেও সুবিস্তৃত এখন। এ বছর মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্ট ব্যাংকিং এর সুবাদে আরো বিশাল এক জনগোষ্ঠী আর্থিক সেবার আওতায় চলে এসেছে। ২০২১ এ দীর্ঘদিনের মন্দাভাব কাটিয়ে শেয়ার বাজারে চাঙ্গাভাব ফিরলেও বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন করে ভয় ও শঙ্কাভাব সৃষ্টি হয়েছে। নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থার কঠোরতার মধ্যেও কারসাজিকারী চক্র সক্রিয় ছিল গোটা বছর জুড়েই।

২০২১ এ সরকার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার কমিয়ে নিম্নবিত্ত, মধ্যবিত্ত শ্রেণির নিরাপদ বিনিয়োগে চরম আঘাত হেনেছে। বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত বয়স্ক মানুষদের সারাজীবনের উপার্জিত সঞ্চিত অর্থ নিরাপদে বিনিয়োগের উপায় হিসেবে বিবেচিত সঞ্চয়পত্রের বিভিন্ন স্ক্রিমেই সুদের হার কমানোর ফলে এই দুর্মূল্যের বাজারে তাদের উপার্জন কমে গেছে। যে কারণে একধরনের অনিশ্চয়তা, অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত শ্রেণির মানুষের মধ্যে। অনেকে বাধ্য হচ্ছেন জমানো অর্থ ভেঙে সংসার চালাতে। সাম্প্রতিক গত বেশ কয়েক বছরে দ্রুত বিকাশমান ই-কমার্স খাতে এবছর চরম বিপর্যয় ঘটেছে। বেশ কিছু আলোচিত, জনপ্রিয় হয়ে ওঠা ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রতারণা ও জালিয়াতির কারণে বহু মানুষ সর্বশান্ত হয়েছেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর লোভনীয় প্রচারণার ফাঁদে পা দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ হাজার হাজার কোটি টাকা খুইয়ে সবশেষে এ বিষয়ে অভিযোগ করেছেন তাদের বিরুদ্ধে। এর প্রতিকারে ইতিপূর্বে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ কর্তৃপক্ষ, মন্ত্রণালয় মোটেও তেমন জোরাল ব্যবস্থা গ্রহণ না করলেও এ বছরের শেষ দিকে এসে তারা নড়েচড়ে বসেছেন এবং ই-কমার্স পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করে তা প্রয়োগের মাধ্যমে এক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ধরে রাখতে সচেষ্ট হয়েছেন।

করোনা-পরবর্তী চাহিদার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। দেশের ভেতরেও পণ্যের চাহিদা বেড়েছে। ফলে বেড়েছে আমদানি। একদিকে আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি ও অন্যদিকে পণ্যের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে আমদানি ব্যয়েও। দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে আমদানি ব্যয়ের বড় অংশই মেটানো হয়। ফলে রিজার্ভের ওপর হঠাৎ করে চাপ বেড়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম এবং বিদেশে লোকজনের যাতায়াতের কারণে যেভাবে বৈদেশিক মুদ্রার খরচ বেড়েছে, সেভাবে আয় বাড়েনি। ফলে দেশের বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদা বেড়ে গিয়ে ডলারের সংকট তৈরি হয়েছে। এতে হুহু করে বেড়েছে ডলারের দাম। করোনার মধ্যেও কোটিপতিদের আয় বেড়েছে। ২০ লাখ সরকারি কর্মচারীর আয় বেড়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আয় বাড়েনি। বরং অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। অনেকে কাজ ও ব্যবসা হারিয়েছেন। আর সাধারণ মানুষের আয় বাড়লেও তা খেয়ে ফেলেছে মূল্যস্ফীতি। এখন মূল্যস্ফীতির হার ছয় ভাগ।

অর্থনীতিবিদ এবং বাজার বিশ্লেষকেরা বলছেন এর একটি চেইন রিঅ্যাকশন আছে। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষের যাতায়াত ভাড়া বেড়ে গেছে। বেড়ে গেছে পণ্য পরিবহন খরচ। ফলে পণ্যের দাম বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ভোগ্যপণ্যের দাম খুব দ্রুতই বাড়ছে। কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। ফলে এর দামও বাড়ছে। বছরের প্রথমদিকে সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো নিয়ে এক ধরনের ভয়, শঙ্কা ছিল। প্রকল্পগুলোর কাজ মাঝপথে বন্ধ হয়ে পড়ে থাকার আশঙ্কা থাকলেও ২০২১ সালে সব সংকট কাটিয়ে পুরোদমে বাস্তবায়ন চলছে প্রকল্পগুলো। সবার স্বপ্নের পদ্মাসেতুর কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। বহুল প্রতীক্ষিত মেট্রোরেলের কাজও দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে এবছর। ইতিমধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে মেট্রোরেল চলাচল করেছে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, মাতারবাড়ি প্রকল্পের কাজও গতি লাভ করেছে এ বছর।

অনেক প্রতিকূলতাকে জয় করে বাংলাদেশ আজকের পর্যায়ে পৌঁছেছে, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে আগামী বছরগুলোতে আরো বড় সমৃদ্ধি ও সাফল্য অপেক্ষা করছে বাংলাদেশের জন্য—একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। ৫০ বছরের যত অর্জন সেগুলোকে সুসংহত এবং টেকসই করতে দেশের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের মেধা, শ্রম এবং উদ্ভাবনী শক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হবে।

সর্বশেষ

ঈদযাত্রা নিরাপদ করতে চট্টগ্রামে বিআরটিএ’র বিশেষ অভিযান ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি

‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: প্রেস সচিব

সিরিয়ার ঋণ শোধ করবে সৌদি-কাতার

ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ

প্রথম চুয়েটের রিফাত আল ইব্রাহিম ⦿কেএসআরএম অ্যাওয়ার্ড পেলেন তিন ভবিষ্যৎ স্থপতি

ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগ বাড়িয়ে মধ্যস্থতা করতে চায় না বাংলাদেশঃ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

সন্ধ্যায় ওসমানী বিমানবন্দর থেকে প্রথমবারের মতো উড়াল দেবে কার্গো ফ্লাইট

Facebook
X
Skype
WhatsApp
OK
Digg
LinkedIn
Pinterest
Email
Print