
চট্টগ্রামে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়িস্থ কবির স্টিল শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডে সম্প্রতি একজন শ্রমিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশের প্রেক্ষিতে কবির স্টিল লিমিটেডের পক্ষ থেকে একটি ব্যাখা পাঠানো হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির পিআর ডিপার্টমেন্ট থেকে পাঠানো ব্যাখায় দাবী করা হয়- অতি সম্প্রতি সংগঠিত অনাকাঙ্খিত ঘটনার অপব্যাখ্যা প্রকাশিত হয়েছে কিছু সংবাদ মাধ্যমে। অপ্রাসঙ্গিক, বিভ্রান্তিকর এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ পরিবেশনের কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিভিন্ন মহল এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। যা অপ্রত্যাশিত ও বিভ্রান্তিকর। আমরা এসব বিভ্রান্তি দূর করা প্রয়োজন বলে মনে করছি।
প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে- আমাদের ইয়ার্ডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শ্রমিক মো. আরিফ হোসেন সুজন গত ০১ ফেরুয়ারি ২০২২ইং রাত ১ টার দিকে (চা বিরতির সময়) ইয়ার্ডের কাটিং জোন- ০৩ এর ফ্লোরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে বমি করতে থাকে। তাৎক্ষণিক আমাদের সেফটি পরিদর্শক, ফোরম্যান ও অন্যান্য শ্রমিক মিলে তাকে ইয়ার্ডের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসে এবং সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর নিজস্ব এম্বুলেন্সে দ্রুততম সময়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। পরবর্তীতে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ইয়ার্ডের প্রাথমিক অনুসন্ধান থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মৃত্যুর সম্ভ্যাব্য কারণ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়া। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নির্ণয়ে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। ইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ নিহত শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ বাবদ সমস্ত পাওনা প্রদানের প্রক্রিয়া চলমান রেখেছে। মানবিক বিবেচনায় নিহত শ্রমিকের পরিবারকে ভরণ পোষণের জন্য আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। পাশাপাশি নিহত শ্রমিকের ছোট ভাই মো. ইসমাইল হোসেনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
অথচ কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে পরিবেশিত হয়েছে ভুল ও আংশিক তথ্য। কোথাও উল্লেখ করা হয়েছে জাহাজ থেকে পড়ে মারা গেছে। কোথাও রাতে জাহাজের উপরে অনুমোদনহীন কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। কোথাও আবার লোহার পাতের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে। যা সত্য নয় বরং বিভ্রান্তিকর। আমাদের প্রতিষ্ঠান কবির স্টিল লিমিটেডে রাতের বেলা (সূর্যাস্তের পর) জাহাজে কাজ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ইয়ার্ডে দিন ও রাত দুই শিফটে কাজ করার জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের অনুমোদন রয়েছে।
এছাড়া নিহত শ্রমিককে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদানের সময় ইয়ার্ড প্যারামেডিক তার শরীরে কোনো ধরণের কাঁটা ও রক্তের দাগ দেখতে পাননি। কোন ধরণের লোহার আঘাতপ্রাপ্ত হলে তার শরীরে অবশ্যই সামান্যতম হলেও কাঁটা অথবা রক্তের দাগ থাকত।
এছাড়া কবির স্টিল লিমিটেডে সকল শ্রমিক ও কর্মচারিকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কাজের ধরণ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পিপিই (পারসোনাল প্রোটেকটিভ ইকুইপমেন্ট) নিশ্চিত করেই কেবল কাজের অনুমতি দেওয়া হয়।